London ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে লোহার ঝনঝনানিতে মুখরিত পটুয়াখালীর কামারপাড়া আছে অভিযোগ, দাবি

রাকিব, পটুয়াখালী

আসন্ন ঈদুল আযহা কে সামনে রেখে কাজের ব্যস্ততা ও কাষ্টমার সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে কামারদের। কাষ্টমারের চাহিদা একটাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের দা, বটি, চাকু সহ পশু জবাই, মাংস কাটার ধাতুগুলো ধারানো ও বানানোর কাজটা যেন দ্রুত শেষ করা যায় নচেৎ অপেক্ষা নাম ঝামেলায় পড়তে হবে। কারণ দিন যতই পার হয় সিরিয়ালটা ততই লম্বা হচ্ছে। কামারেরা ও কাস্টমারের সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ঘুম, খাওয়া ব্যতীত দিনরাতভর দা, বটি, চাকু তৈরি ও শান দিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। লন্ডন বিডি টিভি কে তাদের ব্যস্ততার পাশাপাশি তাদের বেশি টাকা ইনকামের আনন্দ ও যোগ করেন তারা। কামার বাদল কর্মকার লন্ডন বিডি টিভি কে জানান, আমি ২৫ বছর যাবত কামার পেশায় যুক্ত আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা নয় জন। এখন আপনাদের চোখে পড়ার মত দৈনিক একাধিক হাজার টাকা ইনকাম করলেও কোরবানির পর সারাবছর কোন কোনদিন ৫০০- ১০০০ টাকা ইনকাম হয় বেশিরভাগ দিনই একেবারেই খালি ফিরতে হয়। আমরা অনেক কষ্টে দিনপার করি আমাদের দিকে কেউ তাকায় না কেউ আমাদের কষ্ট বোঝার চেষ্টা ও করে না। কামার দিলীপ কর্মকার বলেন, আমি ৩০ বছর যাবত এই পেশায় জড়িত আমার পরিবারের সদস্য পাঁচজন। কোরবানির সময় ইনকাম ভালো হলেও বাকি সময় সংসার পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা ঋণী হয়ে গেছি গ্রামীণ ব্যাংক, আশা সহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চলছি সময়মত কিস্তি ও পরিশোধ করতে পারি না। এজন্য অনেক কথা শুনতে হয়। আমার বয়সে কামারদের কোন রকম সরকারি আর্থিক, পরামর্শ সহায়তা আমরা পাইনি। সরকারের কাছে আমার আবেদন, আমাদের এই পেশা বাপ দাদার পেশা, অনেক কামার আছে অবহেলিত, আমাদের কেউ ঘর ভাড়া দিতে চায় না কারণ ঘরে ময়লা আবর্জনা পড়ে। আমাদের দাবি একটাই , সরকার যেন আমাদের কামারদের জন্য এই পটুয়াখালী শহরে আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করে। পটুয়াখালী জেলা কর্মকার মালিক সমিতির সভাপতি পরিতোষ কর্মকার লন্ডন বিডি টিভি কে বলেন, কোরবানি ব্যতীত আমাদের আয় ইনকাম হয় না বললেই চলে যা হয় তা দিয়ে সংসার চলে না, একবার সমাজসেবা অধিদপ্তর সবার আইডি কার্ড ও নাম নিছিলো তাতেও কিছু পাই নাই। সরকার, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন আমাদের মূল্যয়ন করে না। দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত আমরা পটুয়াখালী শহরে আলাদা জায়গায় কর্মকারদের ঘরের জন্য দাবি জানিয়ে আসছি এ বিষয় কেউ শুনতেও চায় না আমরাও তো একটা শিল্প। আমাদের বাংলাদেশে কর্মকার নামের একটা শিল্প আছে যা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। অন্যান্য সকল পেশা যেমন জেলে, কৃষক দের জন্য আর্থিক, পরামর্শক সুবিধা থাকলেও আমাদের জন্য এসব কিছুই নেই যা বৈষম্যমূলক আচরণ। কিন্তু সবারই আমাদের প্রয়োজন পড়ে বেশিরভাগ কোরবানির সময়গুলোতে। বরগুনা, আমতলী, গলাচিপা কামারদের জন্য আলাদা, নিজস্ব স্থান নির্ধারিত থাকলেও আমাদের পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন কেউ স্থান দেওয়ার মত সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসছে না বিষয়টি দুঃখজনক।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৪:৩৫:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
১১
Translate »

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে লোহার ঝনঝনানিতে মুখরিত পটুয়াখালীর কামারপাড়া আছে অভিযোগ, দাবি

আপডেট : ০৪:৩৫:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

আসন্ন ঈদুল আযহা কে সামনে রেখে কাজের ব্যস্ততা ও কাষ্টমার সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে কামারদের। কাষ্টমারের চাহিদা একটাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের দা, বটি, চাকু সহ পশু জবাই, মাংস কাটার ধাতুগুলো ধারানো ও বানানোর কাজটা যেন দ্রুত শেষ করা যায় নচেৎ অপেক্ষা নাম ঝামেলায় পড়তে হবে। কারণ দিন যতই পার হয় সিরিয়ালটা ততই লম্বা হচ্ছে। কামারেরা ও কাস্টমারের সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ঘুম, খাওয়া ব্যতীত দিনরাতভর দা, বটি, চাকু তৈরি ও শান দিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। লন্ডন বিডি টিভি কে তাদের ব্যস্ততার পাশাপাশি তাদের বেশি টাকা ইনকামের আনন্দ ও যোগ করেন তারা। কামার বাদল কর্মকার লন্ডন বিডি টিভি কে জানান, আমি ২৫ বছর যাবত কামার পেশায় যুক্ত আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা নয় জন। এখন আপনাদের চোখে পড়ার মত দৈনিক একাধিক হাজার টাকা ইনকাম করলেও কোরবানির পর সারাবছর কোন কোনদিন ৫০০- ১০০০ টাকা ইনকাম হয় বেশিরভাগ দিনই একেবারেই খালি ফিরতে হয়। আমরা অনেক কষ্টে দিনপার করি আমাদের দিকে কেউ তাকায় না কেউ আমাদের কষ্ট বোঝার চেষ্টা ও করে না। কামার দিলীপ কর্মকার বলেন, আমি ৩০ বছর যাবত এই পেশায় জড়িত আমার পরিবারের সদস্য পাঁচজন। কোরবানির সময় ইনকাম ভালো হলেও বাকি সময় সংসার পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা ঋণী হয়ে গেছি গ্রামীণ ব্যাংক, আশা সহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চলছি সময়মত কিস্তি ও পরিশোধ করতে পারি না। এজন্য অনেক কথা শুনতে হয়। আমার বয়সে কামারদের কোন রকম সরকারি আর্থিক, পরামর্শ সহায়তা আমরা পাইনি। সরকারের কাছে আমার আবেদন, আমাদের এই পেশা বাপ দাদার পেশা, অনেক কামার আছে অবহেলিত, আমাদের কেউ ঘর ভাড়া দিতে চায় না কারণ ঘরে ময়লা আবর্জনা পড়ে। আমাদের দাবি একটাই , সরকার যেন আমাদের কামারদের জন্য এই পটুয়াখালী শহরে আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করে। পটুয়াখালী জেলা কর্মকার মালিক সমিতির সভাপতি পরিতোষ কর্মকার লন্ডন বিডি টিভি কে বলেন, কোরবানি ব্যতীত আমাদের আয় ইনকাম হয় না বললেই চলে যা হয় তা দিয়ে সংসার চলে না, একবার সমাজসেবা অধিদপ্তর সবার আইডি কার্ড ও নাম নিছিলো তাতেও কিছু পাই নাই। সরকার, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন আমাদের মূল্যয়ন করে না। দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত আমরা পটুয়াখালী শহরে আলাদা জায়গায় কর্মকারদের ঘরের জন্য দাবি জানিয়ে আসছি এ বিষয় কেউ শুনতেও চায় না আমরাও তো একটা শিল্প। আমাদের বাংলাদেশে কর্মকার নামের একটা শিল্প আছে যা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। অন্যান্য সকল পেশা যেমন জেলে, কৃষক দের জন্য আর্থিক, পরামর্শক সুবিধা থাকলেও আমাদের জন্য এসব কিছুই নেই যা বৈষম্যমূলক আচরণ। কিন্তু সবারই আমাদের প্রয়োজন পড়ে বেশিরভাগ কোরবানির সময়গুলোতে। বরগুনা, আমতলী, গলাচিপা কামারদের জন্য আলাদা, নিজস্ব স্থান নির্ধারিত থাকলেও আমাদের পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন কেউ স্থান দেওয়ার মত সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসছে না বিষয়টি দুঃখজনক।