London ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির শোক স্মরণে সিরাজগঞ্জে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর দোয়া মাহফিল রাজশাহীতে নাবিল গ্রুপকে ২ লাখ টাকা জরিমানা কিন্ডারগার্টেনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখায় গাইবান্ধায় প্রতিবাদ ও মানববন্ধন পটুয়াখালীতে চলতি বছরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা চরমে সিরাজগঞ্জে যমুনা শিশুপার্কের যাত্রা: খুশির নতুন ঠিকানা শিশুদের জন্য পাইকেরছড়া মডেল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা ইজি ডেলিভারি সেবা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ গ্রেটার কামাল বাজার ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকে এর চ‍্যারিটি ব‍্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট-২০২৫ সম্পন্ন সুন্দরগঞ্জের ধর্মপুর কলেজে উপাধ্যক্ষ ও দুই প্রভাষক নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগ বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রাইসা মনির মৃত দেহর খোজ মিললো সিএমএইচয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গোবিন্দগঞ্জে আবারও ২ জন সক্রিয় হ্যাকার গ্রেফতার

কালো টাকা সাদা করতে ‘ভুয়া’ পে অর্ডার দিয়েছিলেন এস আলমের দুই পুত্র

বিতর্কিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলমের দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলম মাহির ৫০০ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার মধ্যেমে ৭৫ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন। দ্য ডেইলি স্টারের প্রাপ্ত নথি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরর কাছে কর কর্মকর্তা এবং দুই ভাইকে দেওয়া নোটিশ অনুসারে, কর ফাঁকি দিতে নিজেদের মালিকানাধীন দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে অনিয়মের আশ্রয় নেন তারা। সাইফুল আলম এই দুই ব্যাংকের চেয়ারম্যান।

নথি অনুসারে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ২৫ কোটি টাকার দুটি পে অর্ডারের মাধ্যমে এই কালোটাকা সাদা করার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হন আশরাফুল ও আসাদুল।

এর কয়েক মাস পর দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় পেমেন্টে সফল হন তারা। এতে বোঝা যায় প্রথম দুটি পে অর্ডার ভুয়া ছিল।

কালো টাকা সাদা করতে তাদেরকে বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। টাকা সাদা করার সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও তারা এই সুবিধা পেয়েছেন। সেই সঙ্গে দায়মুক্তিও পেয়েছেন তারা।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ১০ শতাংশ কর দেওয়ার মাধ্যমে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার অনুমতি দেয়।

এনবিআর এর তথ্য অনুসারে, সেই অর্থবছরে মোট ২ হাজার ৩১১ জন কালো টাকা সাদা করার এই সুবিধাটি ব্যবহার করেছিলেন। তারা নগদ এবং ব্যাংক আমানতে ১ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করেন।

কর কর্মকর্তারা জানান, ব্যক্তিগত পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ করের হার বিবেচনায় নিলে আশরাফুল ও আসাদুলকে অপ্রদর্শিত ৫০০ কোটি টাকার বিপরীতে কমপক্ষে ১২৫ কোটি টাকা কর দিতে হতো। অথচ তারা মাত্র ৫০ কোটি টাকা দিয়েই এই টাকা সাদা করে নেন।

তাদের ট্যাক্স রিটার্ন অনুসারে, আশরাফুল এবং আসাদুল ২০২১ অর্থবছরে তাদের নিট সম্পদ দেখিয়েছেন যথাক্রমে ২৫০ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং ২৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা।

আশরাফুল তার টিন সার্টিফিকেটে নিজেকে ‘জাতীয় পরিচয়পত্রবিহীন বাংলাদেশি নাগরিক’ এবং আসাদুল, ‘বিদেশী (অ-বাংলাদেশি)’ হিসেবে নিজের পরিচয় উল্লেখ করেছেন।

দৈনিক সমকালের গতমাসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তাদের তিন ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল এবং আসাদুল আলম ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন।

তারা একই দিনে বিদেশি নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমোদন পান। এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার এক বছর আগে সাইফুল আলম ও তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য ট্যাক্স ফাইলে নিজেদেরকে ‘বিদেশি’ বা ‘অ-বাংলাদেশি’ হিসাবে পরিচয় দিয়েছিন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৮:১৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১১১
Translate »

কালো টাকা সাদা করতে ‘ভুয়া’ পে অর্ডার দিয়েছিলেন এস আলমের দুই পুত্র

আপডেট : ০৮:১৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিতর্কিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলমের দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলম মাহির ৫০০ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার মধ্যেমে ৭৫ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন। দ্য ডেইলি স্টারের প্রাপ্ত নথি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরর কাছে কর কর্মকর্তা এবং দুই ভাইকে দেওয়া নোটিশ অনুসারে, কর ফাঁকি দিতে নিজেদের মালিকানাধীন দুটি ব্যাংকের মাধ্যমে অনিয়মের আশ্রয় নেন তারা। সাইফুল আলম এই দুই ব্যাংকের চেয়ারম্যান।

নথি অনুসারে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ২৫ কোটি টাকার দুটি পে অর্ডারের মাধ্যমে এই কালোটাকা সাদা করার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হন আশরাফুল ও আসাদুল।

এর কয়েক মাস পর দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় পেমেন্টে সফল হন তারা। এতে বোঝা যায় প্রথম দুটি পে অর্ডার ভুয়া ছিল।

কালো টাকা সাদা করতে তাদেরকে বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। টাকা সাদা করার সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও তারা এই সুবিধা পেয়েছেন। সেই সঙ্গে দায়মুক্তিও পেয়েছেন তারা।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ১০ শতাংশ কর দেওয়ার মাধ্যমে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার অনুমতি দেয়।

এনবিআর এর তথ্য অনুসারে, সেই অর্থবছরে মোট ২ হাজার ৩১১ জন কালো টাকা সাদা করার এই সুবিধাটি ব্যবহার করেছিলেন। তারা নগদ এবং ব্যাংক আমানতে ১ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করেন।

কর কর্মকর্তারা জানান, ব্যক্তিগত পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ করের হার বিবেচনায় নিলে আশরাফুল ও আসাদুলকে অপ্রদর্শিত ৫০০ কোটি টাকার বিপরীতে কমপক্ষে ১২৫ কোটি টাকা কর দিতে হতো। অথচ তারা মাত্র ৫০ কোটি টাকা দিয়েই এই টাকা সাদা করে নেন।

তাদের ট্যাক্স রিটার্ন অনুসারে, আশরাফুল এবং আসাদুল ২০২১ অর্থবছরে তাদের নিট সম্পদ দেখিয়েছেন যথাক্রমে ২৫০ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং ২৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা।

আশরাফুল তার টিন সার্টিফিকেটে নিজেকে ‘জাতীয় পরিচয়পত্রবিহীন বাংলাদেশি নাগরিক’ এবং আসাদুল, ‘বিদেশী (অ-বাংলাদেশি)’ হিসেবে নিজের পরিচয় উল্লেখ করেছেন।

দৈনিক সমকালের গতমাসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন এবং তাদের তিন ছেলে আহসানুল আলম, আশরাফুল এবং আসাদুল আলম ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন।

তারা একই দিনে বিদেশি নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমোদন পান। এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার এক বছর আগে সাইফুল আলম ও তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য ট্যাক্স ফাইলে নিজেদেরকে ‘বিদেশি’ বা ‘অ-বাংলাদেশি’ হিসাবে পরিচয় দিয়েছিন।