London ০৮:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
চারঘাটে ডোবা থেকে যুবকের লা’শ উদ্ধার কালিয়াকৈরে ভুল রক্ত পুশে সিজারের রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ কালিয়াকৈর উপজেলা সূত্রাপুর এলাকায় চলন্ত অ্যাম্বুলেন্সে আগুনে পুড়ে ছাই কালিয়াকৈর ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারনে চরম ভোগান্তিতে দৈনন্দিন জনজীবন কালিয়া হরিপুরে নারীদের ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রমে তৃণমূল নারীদের জাগরণে ইব্রাহিম মোল্লা রাণীনগরে মৌসুমীর উদ্যোগে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত বিএনপির নতুন সদস্য সংহের ফরম বিতরন ও নবায়ন কমসুচি ধানখেত থেকে নারীর লাশ উদ্ধার সিরাজগঞ্জে চুরির মহামারি: সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি, নাগরিকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ কালিয়াকৈরে হাজী বাড়ী ফুটবল প্রিমিয়ার লীগের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত

কালিয়াকৈরে ১৩৯টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবের আনন্দে ভরে উঠছে সর্বত্র, চলছে পূজা শুরুর শেষ প্রস্তুতি

শাকিল হোসেন,গাজীপুর কালিয়াকৈর প্রতিনিধিঃ

ঢাকের তাল আর শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত চারপাশ, ভোরের সূর্যের প্রথম কিরণেই ধ্বনিত হলো দেবী দুর্গার আগমন বার্তা। সারা দেশের নাই গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলাতেও গত রবিবার মহালয়ার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি। ভক্তদের মনে এখন কেবল আনন্দ নয়, রয়েছে গভীর ধর্মীয় শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও ভক্তি। পূজা মানে ভক্তির আরাধনা, শারদীয় দুর্গাপূজা কেবল উৎসবের আমেজ নয়, এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এক মহৎ ধর্মীয় সাধনার উপলক্ষ। ভক্তদের বিশ্বাস মাতা দুর্গা অসুর দমন করে পৃথিবীতে শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনেন। তাই পূজার প্রতিটি আচার-অনুষ্ঠান জুড়ে থাকে ভক্তদের আন্তরিকতা ও আধ্যাত্মিকতার প্রকাশ। পুষ্পাঞ্জলি, আরতি, সন্ধিপূজা কিংবা কুমারী পূজা সবকিছুতেই ভক্তরা দেবীর অশেষ কৃপা লাভের প্রার্থনা করে থাকেন।

এবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় ১৪৯টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। প্রতিমা নির্মাণ, মণ্ডপ সাজানো, আলোকসজ্জা থেকে শুরু করে নিরাপত্তার সব প্রস্তুতিই এখন শেষ পর্যায়ে। রঙিন আলো, ফুল আর ধূপ-ধুনোর গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে পূজামণ্ডপগুলো। সর্বত্রই এখন সাজসজ্জার সরব পরিবেশ, যা ভক্তদের মনে আনন্দের সঞ্চার করছে। শারদীয় দুর্গাপূজার এ সময়ে কালিয়াকৈরসহ সারাদেশে ভক্তদের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে একই সুর “দুর্গতি নাশিনী মা, তুমি এসো, শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনো।”

আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। এরপর যথাক্রমে ষষ্ঠী, সপ্তমী, মহাষ্টমী ও মহানবমী পালন করা হবে। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পূজামণ্ডপগুলো মুখরিত থাকবে ভক্তদের সমাগমে। দেবীর সামনে প্রার্থনা, আরতি, ভজন ও শাস্ত্রপাঠে মুখরিত হবে সর্বত্র। শেষ দিনে বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীকে বিদায় জানাবেন ভক্তরা। বিসর্জনের সময় ভক্তদের চোখে থাকবে অশ্রু, ঠোঁটে থাকবে প্রার্থনা—“মা, আবার এসো।” দেবীকে বিদায় জানিয়ে ভক্তরা আবারও অপেক্ষা করবেন আগামী বছরের পুনরাগমনের জন্য।

প্রতিবারের মতো এবারেও পূজার নির্বিঘ্ন আয়োজন নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্দিরে সরকারি অনুদান ৫০০ কেজি করে মোট ৬৯৫০০ কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে উপজেলায় প্রায় এক হাজার আনসার সদস্য ও ১৩৯ জন পুলিশ সদস্য সহ টহল পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা। প্রতিটা পূজা মন্ডপে ৮ থেকে ৬ জন করে আনসার সদস্য এবং একজন করে পুলিশ সদস্য থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে—শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভক্তরা যেন নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারেন, সেজন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

দুর্গাপূজাকে ঘিরে সর্বত্র এখন আনন্দ-উৎসবের আমেজ থাকলেও এর কেন্দ্রে রয়েছে গভীর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য। এ উৎসব ভক্তদের জন্য যেমন আনন্দের, তেমনি এটি এক আত্মিক সাধনার সময়। সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশায় ভক্তরা দেবীর চরণে নিবেদন করছেন প্রার্থনা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৫:৩৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৩৩
Translate »

কালিয়াকৈরে ১৩৯টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবের আনন্দে ভরে উঠছে সর্বত্র, চলছে পূজা শুরুর শেষ প্রস্তুতি

আপডেট : ০৫:৩৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকের তাল আর শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত চারপাশ, ভোরের সূর্যের প্রথম কিরণেই ধ্বনিত হলো দেবী দুর্গার আগমন বার্তা। সারা দেশের নাই গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলাতেও গত রবিবার মহালয়ার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি। ভক্তদের মনে এখন কেবল আনন্দ নয়, রয়েছে গভীর ধর্মীয় শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও ভক্তি। পূজা মানে ভক্তির আরাধনা, শারদীয় দুর্গাপূজা কেবল উৎসবের আমেজ নয়, এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এক মহৎ ধর্মীয় সাধনার উপলক্ষ। ভক্তদের বিশ্বাস মাতা দুর্গা অসুর দমন করে পৃথিবীতে শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনেন। তাই পূজার প্রতিটি আচার-অনুষ্ঠান জুড়ে থাকে ভক্তদের আন্তরিকতা ও আধ্যাত্মিকতার প্রকাশ। পুষ্পাঞ্জলি, আরতি, সন্ধিপূজা কিংবা কুমারী পূজা সবকিছুতেই ভক্তরা দেবীর অশেষ কৃপা লাভের প্রার্থনা করে থাকেন।

এবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় ১৪৯টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। প্রতিমা নির্মাণ, মণ্ডপ সাজানো, আলোকসজ্জা থেকে শুরু করে নিরাপত্তার সব প্রস্তুতিই এখন শেষ পর্যায়ে। রঙিন আলো, ফুল আর ধূপ-ধুনোর গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে পূজামণ্ডপগুলো। সর্বত্রই এখন সাজসজ্জার সরব পরিবেশ, যা ভক্তদের মনে আনন্দের সঞ্চার করছে। শারদীয় দুর্গাপূজার এ সময়ে কালিয়াকৈরসহ সারাদেশে ভক্তদের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে একই সুর “দুর্গতি নাশিনী মা, তুমি এসো, শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনো।”

আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। এরপর যথাক্রমে ষষ্ঠী, সপ্তমী, মহাষ্টমী ও মহানবমী পালন করা হবে। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পূজামণ্ডপগুলো মুখরিত থাকবে ভক্তদের সমাগমে। দেবীর সামনে প্রার্থনা, আরতি, ভজন ও শাস্ত্রপাঠে মুখরিত হবে সর্বত্র। শেষ দিনে বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীকে বিদায় জানাবেন ভক্তরা। বিসর্জনের সময় ভক্তদের চোখে থাকবে অশ্রু, ঠোঁটে থাকবে প্রার্থনা—“মা, আবার এসো।” দেবীকে বিদায় জানিয়ে ভক্তরা আবারও অপেক্ষা করবেন আগামী বছরের পুনরাগমনের জন্য।

প্রতিবারের মতো এবারেও পূজার নির্বিঘ্ন আয়োজন নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্দিরে সরকারি অনুদান ৫০০ কেজি করে মোট ৬৯৫০০ কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে উপজেলায় প্রায় এক হাজার আনসার সদস্য ও ১৩৯ জন পুলিশ সদস্য সহ টহল পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা। প্রতিটা পূজা মন্ডপে ৮ থেকে ৬ জন করে আনসার সদস্য এবং একজন করে পুলিশ সদস্য থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে—শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভক্তরা যেন নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারেন, সেজন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

দুর্গাপূজাকে ঘিরে সর্বত্র এখন আনন্দ-উৎসবের আমেজ থাকলেও এর কেন্দ্রে রয়েছে গভীর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য। এ উৎসব ভক্তদের জন্য যেমন আনন্দের, তেমনি এটি এক আত্মিক সাধনার সময়। সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশায় ভক্তরা দেবীর চরণে নিবেদন করছেন প্রার্থনা।