গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বাইপাস এলাকায় অবস্থিত দেওয়ান ডিজিটাল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর পিংকি মালো (১৮) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুল চিকিৎসা ও চরম অবহেলার কারণেই এ মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে।
নিহত পিংকি মালো উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের দক্ষিণ—পূর্ব মাঝিপাড়ার পিন্টু মালোর মেয়ে এবং একই ইউনিয়নের রঘুনাথপুর মধ্যপাড়ার বাবু মালোর ছেলে সুদ্বীপ মালোর স্ত্রী। তাদের বিয়ের বয়স মাত্র এক বছর।
নিহতের পরিবার জানায়, গত বৃহস্পতিবার পিংকিকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো প্রাথমিক পরীক্ষা—নিরীক্ষা ছাড়াই তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর নবজাতককে জীবিত অবস্থায় বের করা হলেও পরে প্রসূতিকে মৃত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়।
গতকাল সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতের মা অভিযোগ করে বলেন, “আমার মেয়েকে সুস্থ অবস্থায় সিজারের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তারা কোনো পরীক্ষা ছাড়াই অপারেশন করে। কিছুক্ষণ পর নার্স নবজাতককে নিয়ে বাইরে আসে ও বকশিশ(উপঢৌকন) চান। পরে মেয়েকে বের করলে দেখি ঠেঁাট কালো, শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে। জানতে চাইলে তারা বলে ‘ঠান্ডা করার ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে পরে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা জানান, সে অনেক আগেই মারা গেছে।
স্বামী সুদ্বীপ মালো বলেন,“ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণেই আমার স্ত্রী মারা গেছে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
দেওয়ান ডিজিটাল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আমিনুল দেওয়ানের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে হোয়াটসঅ্যাপেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তার কোনো প্রতিক্রিয়া মিলেনি।
কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাদিয়া মুনমুন বলেন,“জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশনা পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অবগত নই। খোজ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাওছার আহমেদ বলেন,“ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে জেলা সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করবো এবং জেলা সিভিল সার্জনের সঙ্গে সমন্বয় করে লাইসেন্সবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”