London ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১০ গুণীজন মেডিকেলে ভর্তির টাকা এখনো জোগাড় হয়নি ইমার যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেশার কুকারে রান্না করলেন সাবেক সৈনিক খোলাবাজার থেকে ১০ হাজার বিনামূল্যের পাঠ্যবই জব্দ, গ্রেপ্তার ২ শেরপুরে মাধ্যমিকের ৯ হাজার সরকারি বই জব্দ! আটক ১ মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ডাক্তারী লেখা পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রান্তি ও পরিবার খাগড়াছড়িতে একক আধিপত্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার, গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ নোয়াখালীতে শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই ১১ দোকান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে : ইসি মাছউদ

কালিয়াকৈরে বিদ্যালয়ের জমি জবর দখলের অভিযোগ

শাকিল হোসেন কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ

 

 

 

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় আটাবহ ইউনিয়নের গোসাত্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠে বাঁশের বেড়া দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের খেলাধূলায় প্রতিনিয়ত বিঘ্ন ঘটছে। খেলা ধূলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দুই শতাধিক শিক্ষাথী। বিদ্যালয়ের জমি দখল করে সীমানা প্রাচীর ও জমি জবর দখল করে বিদ্যালয়ের মাঠে বাঁশের বেড়া ও চারা রোপন করার অভিযোগ উঠেছে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক শওকত হাসান খান ও মহসিন আলী খানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মোঃ মহসিন আলী খান বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তার দাবী তিনি যে জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়েছেন তা অন্য দাগের জমি। তাই স্কুলের খেলার মাঠ দখলের প্রশ্নই উঠে না। বিষয়টি সুরাহা করার জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন

শনিবার দুপুরে দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গোসাত্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনশেটসহ তিনটি ভবন রয়েছে। ছাদ পেটানো স্কুলের মাঠের পূর্বপাশের ভবনের দক্ষিণ পাশ ঘেষে আশা ইকো পার্কের জন্য যাতায়াত সড়ক ও গেইট তৈরি করা হয়েছে। এই পার্কের গেইট দিয়ে যাতায়াতের জন্য স্কুল মাঠের দক্ষিণে একটি বহুতল বাড়ী রয়েছে। সেই বাড়ীর মালিক মোঃ মহসিন আলী খান ও শওকত হাসান খান স্কুল মাঠের অধিকাংশ এলাকায় বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে দিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের মিশ্র প্রতিকৃয়া দেখা দেয়। এঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছালমা বেগম স্কুলের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার এবং সীমানা নির্ধারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন।
গ্রামবাসীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ১৯৩৯ সালে ওই গ্রামের সালে আফসার উদ্দিন দেওয়ান নামের এক গ্রামবাসী স্কুলের নামে গোসাত্রা মৌজায় এসএ দাগের ৬১১ দাগের ২৯ শতাংশ, ৬১১ দাগে ৪ শতাংশ মরিয়ম আক্তার নামের আরেক নারী দশমিক ২৫শতাংশ এবং অভিযুক্ত মহসিন আলী খান ৪ শতাংশ জমি লিখে দেন। স্কুলের নামে ৩৭ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি থাকলেও মুলত স্কুলের দখলে ২৫ শতাংশের কম রয়েছে। এতে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি বেহাদ হয়ে গেলেও স্কুল কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। স্কুলের জমি ঘেষে স্কুলের সাবেক সভাপতি মোঃ মহসিন আলী খান ও শওকত হাসান খান বহুতল ভবন তৈরি করে বাড়ীর সীমানায় বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দেন। এতেই স্কুল কর্তৃপক্ষের টনক নড়লে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি সুরহা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও কাছে একটি আবেদন দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের স্কুলের পাশে একটি পার্ক ও খেলার মাঠে বাঁশের বেড়া দেওয়াতে খেলাধুলা করতে পারছে না। অভিলম্বে বাঁশের বেড়া সরিয়ে খেলার মাঠটি অবমুক্ত করার দাবী জানায়।
প্রধান শিক্ষক ছালমা বেগম জানান, আফসার উদ্দিন দেওয়ান স্কুলে জমি লিখে দিলেও নানা জটিলতায় জমিটি স্থানীয় ডা. জলিলুর রহমানের নামে আরএস রেকর্ড হয়ে যায়। ওই সময় হয়তো স্কুলে যারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন তারা রের্কডের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। গত এক সাপ্তাহে স্থানীয় মহসিন আলী খান ও তার ভাই শতকত আলী খান স্কুল মাঠে বাঁশের বেড়া দিয়ে কিছু গাছের চারা লাগিয়েছেন। স্কুলের দেওয়াল ঘেষে কিছু অংশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণও করেছেন। ফলে স্কুলের সীমানা নির্ধারণ না করে বাঁশের বেড়া দেওয়াতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করতে সমস্যা হচ্ছে। তাই স্কুলের জমি মাপা ও সীমানা নির্ধারণ করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাও মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন দিয়েছি।
অভিযুক্ত মহসিন আলী খান বলেন, গোসাত্রা মৌজায় ৬১০ ও ৬১১ দাগে আফছার উদ্দিন দেওয়ান ভুয়া দলিল বানিয়ে স্কুলকে জমি লিখে দেওয়ায় স্কুলের জমি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। আমি নিজেও স্কুলকে চার শতাংশ জমি লিখে দিয়েছি। আরো ২৫ শতাংশ আমরা ভাইবোন মিলে স্কুলের নামে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে যে দাগে বাঁশের বেড়া দিয়েছি সেই দাগ হলো ৬১০ দাগে ২৮ শতাংশ জমি রয়েছে। যা ২৮ শতাংশ জমিই আমাদের নামে এসএ ও আর এস রের্কড রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছি, বিষয়টি দ্রুত সীমাংসা করার জন্য অনুরোধ করেছি। তবে আমি স্কুলের জমি বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করিনি। আমার বের্কডী জমিতে বাঁশের বেড়াতে অনেকেই ভুল বুঝতে শুরু করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, এ বিষয়ে লিখিত আবেদন পেয়েছি। শীঘ্রই বিদ্যালয়ের জমি মেপে সীমানা নির্ধারণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ জানান, গোসাত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমি মেপে সীমানা নির্ধারনের আবেদন পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি কেউ দখল করে নিয়ে আত্মসাৎ করার কোন সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:৫২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
১৬
Translate »

কালিয়াকৈরে বিদ্যালয়ের জমি জবর দখলের অভিযোগ

আপডেট : ০২:৫২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

 

 

 

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় আটাবহ ইউনিয়নের গোসাত্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠে বাঁশের বেড়া দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের খেলাধূলায় প্রতিনিয়ত বিঘ্ন ঘটছে। খেলা ধূলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দুই শতাধিক শিক্ষাথী। বিদ্যালয়ের জমি দখল করে সীমানা প্রাচীর ও জমি জবর দখল করে বিদ্যালয়ের মাঠে বাঁশের বেড়া ও চারা রোপন করার অভিযোগ উঠেছে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক শওকত হাসান খান ও মহসিন আলী খানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মোঃ মহসিন আলী খান বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তার দাবী তিনি যে জায়গায় বাঁশের বেড়া দিয়েছেন তা অন্য দাগের জমি। তাই স্কুলের খেলার মাঠ দখলের প্রশ্নই উঠে না। বিষয়টি সুরাহা করার জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন

শনিবার দুপুরে দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গোসাত্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনশেটসহ তিনটি ভবন রয়েছে। ছাদ পেটানো স্কুলের মাঠের পূর্বপাশের ভবনের দক্ষিণ পাশ ঘেষে আশা ইকো পার্কের জন্য যাতায়াত সড়ক ও গেইট তৈরি করা হয়েছে। এই পার্কের গেইট দিয়ে যাতায়াতের জন্য স্কুল মাঠের দক্ষিণে একটি বহুতল বাড়ী রয়েছে। সেই বাড়ীর মালিক মোঃ মহসিন আলী খান ও শওকত হাসান খান স্কুল মাঠের অধিকাংশ এলাকায় বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে দিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের মিশ্র প্রতিকৃয়া দেখা দেয়। এঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছালমা বেগম স্কুলের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার এবং সীমানা নির্ধারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন।
গ্রামবাসীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ১৯৩৯ সালে ওই গ্রামের সালে আফসার উদ্দিন দেওয়ান নামের এক গ্রামবাসী স্কুলের নামে গোসাত্রা মৌজায় এসএ দাগের ৬১১ দাগের ২৯ শতাংশ, ৬১১ দাগে ৪ শতাংশ মরিয়ম আক্তার নামের আরেক নারী দশমিক ২৫শতাংশ এবং অভিযুক্ত মহসিন আলী খান ৪ শতাংশ জমি লিখে দেন। স্কুলের নামে ৩৭ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি থাকলেও মুলত স্কুলের দখলে ২৫ শতাংশের কম রয়েছে। এতে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি বেহাদ হয়ে গেলেও স্কুল কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। স্কুলের জমি ঘেষে স্কুলের সাবেক সভাপতি মোঃ মহসিন আলী খান ও শওকত হাসান খান বহুতল ভবন তৈরি করে বাড়ীর সীমানায় বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দেন। এতেই স্কুল কর্তৃপক্ষের টনক নড়লে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি সুরহা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও কাছে একটি আবেদন দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের স্কুলের পাশে একটি পার্ক ও খেলার মাঠে বাঁশের বেড়া দেওয়াতে খেলাধুলা করতে পারছে না। অভিলম্বে বাঁশের বেড়া সরিয়ে খেলার মাঠটি অবমুক্ত করার দাবী জানায়।
প্রধান শিক্ষক ছালমা বেগম জানান, আফসার উদ্দিন দেওয়ান স্কুলে জমি লিখে দিলেও নানা জটিলতায় জমিটি স্থানীয় ডা. জলিলুর রহমানের নামে আরএস রেকর্ড হয়ে যায়। ওই সময় হয়তো স্কুলে যারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন তারা রের্কডের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। গত এক সাপ্তাহে স্থানীয় মহসিন আলী খান ও তার ভাই শতকত আলী খান স্কুল মাঠে বাঁশের বেড়া দিয়ে কিছু গাছের চারা লাগিয়েছেন। স্কুলের দেওয়াল ঘেষে কিছু অংশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণও করেছেন। ফলে স্কুলের সীমানা নির্ধারণ না করে বাঁশের বেড়া দেওয়াতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করতে সমস্যা হচ্ছে। তাই স্কুলের জমি মাপা ও সীমানা নির্ধারণ করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাও মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন দিয়েছি।
অভিযুক্ত মহসিন আলী খান বলেন, গোসাত্রা মৌজায় ৬১০ ও ৬১১ দাগে আফছার উদ্দিন দেওয়ান ভুয়া দলিল বানিয়ে স্কুলকে জমি লিখে দেওয়ায় স্কুলের জমি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। আমি নিজেও স্কুলকে চার শতাংশ জমি লিখে দিয়েছি। আরো ২৫ শতাংশ আমরা ভাইবোন মিলে স্কুলের নামে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে যে দাগে বাঁশের বেড়া দিয়েছি সেই দাগ হলো ৬১০ দাগে ২৮ শতাংশ জমি রয়েছে। যা ২৮ শতাংশ জমিই আমাদের নামে এসএ ও আর এস রের্কড রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেছি, বিষয়টি দ্রুত সীমাংসা করার জন্য অনুরোধ করেছি। তবে আমি স্কুলের জমি বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করিনি। আমার বের্কডী জমিতে বাঁশের বেড়াতে অনেকেই ভুল বুঝতে শুরু করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, এ বিষয়ে লিখিত আবেদন পেয়েছি। শীঘ্রই বিদ্যালয়ের জমি মেপে সীমানা নির্ধারণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ জানান, গোসাত্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমি মেপে সীমানা নির্ধারনের আবেদন পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি কেউ দখল করে নিয়ে আত্মসাৎ করার কোন সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে