London ১১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:

স্মার্ট ভূমি সেবায় জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে গণ অধিকার পরিষদের সক্রিয় ভূমিকা

কসবায় “ভূমি মেলা ২০২৫” এর জমকালো উদ্বোধন

মো: বিল্লাল সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি

দেশব্যাপী স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে কসবা উপজেলা ভূমি অফিস, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে আজ থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী “ভূমি মেলা ২০২৫”। ২৫ মে থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২৭ মে পর্যন্ত। মেলার মূল উদ্দেশ্য—ভূমি সেবাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনবান্ধব ও হয়রানিমুক্ত করে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া।

উদ্বোধনী আয়োজন:
মেলার উদ্বোধন হয় আজ সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে উপজেলা ভূমি অফিস চত্বরে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার মিয়া (উদাহরণস্বরূপ), বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি), স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং সেবা প্রত্যাশী সাধারণ মানুষ।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় বক্তারা বলেন, স্মার্ট ভূমি সেবা জনগণের জন্য সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ, যা দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ ভূমি ব্যবস্থাপনা গঠনে সহায়ক হবে।

স্মার্ট সেবা ও প্রযুক্তিনির্ভর ভূমি ব্যবস্থাপনা:
ভূমি মেলায় আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর একাধিক সেবা বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ খুব সহজেই নিচের সেবাসমূহ গ্রহণ করতে পারছেন—

স্মার্ট ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান: অনলাইনে হোল্ডিং অনুযায়ী জমির কর পরিশোধ ও রসিদ প্রাপ্তি।

স্মার্ট নামজারি: জমির মালিকানা হস্তান্তরের ডিজিটাল আবেদন, অবস্থা ট্র্যাকিং ও দ্রুত নিষ্পত্তি।

স্মার্ট খতিয়ান (পর্চা) সংগ্রহ: অনলাইনে নির্ভুল খতিয়ান ডাউনলোড ও যাচাই সেবা।

ডিজিটাল জমির ম্যাপ পেতে সহায়তা: প্লটভিত্তিক জমির মানচিত্র দেখতে ও সংগ্রহ করতে সেবা প্রদান।

ভূমি বিষয়ক পরামর্শ: আইনগত ও ব্যবহারিক দিক থেকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান।

সেবাগুলো সরাসরি উপস্থিত থেকে নেওয়া যাচ্ছে, আবার কেউ চাইলে নিজ বাড়িতে বসেও অনলাইনে এ সেবা পেতে পারেন।

গণ অধিকার পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ:
ভূমি মেলায় গণ অধিকার পরিষদের কসবা উপজেলা শাখার ছিলো উৎসাহী ও সংগঠিত অংশগ্রহণ। শাখার সভাপতি জনাব হিজবুল্লাহ হেলালী মেলায় অংশ নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন,
“ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মার্ট সেবা নাগরিকদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে পারছে, এটা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা চাই, এ সেবার সুফল যেন সর্বস্তরের জনগণ ভোগ করতে পারে। সচেতনতা বাড়াতে আমরা মাঠে কাজ করে যাবো।”

ছাত্র নেতৃত্বের ভূমিকা:
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কসবা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মোঃ বিল্লাল সরকার মেলার প্রচার, তথ্য প্রদান এবং সচেতনতা কার্যক্রমে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তিনি বলেন,
“সাধারণ মানুষ যেন ভূমি সেবায় আত্মবিশ্বাসী হয় এবং কোন দালাল বা দুর্নীতির আশ্রয় না নেয়—এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”

জনসচেতনতা ও সেবাপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া:
মেলার প্রথম দিনেই ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। অনেকেই সরাসরি খতিয়ান সংগ্রহ করেছেন, নামজারির আবেদন করেছেন এবং ডিজিটাল কর দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, এমন উদ্যোগ তাঁদের ভোগান্তি কমিয়েছে এবং ভরসা তৈরি করেছে।

পরিশেষে “ভূমি মেলা ২০২৫” কসবাবাসীর জন্য একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। জনগণের অংশগ্রহণ, ছাত্র ও সামাজিক সংগঠনের ভূমিকা এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে এই মেলা সুশৃঙ্খলভাবে সফল হবে বলেই বিশ্বাস করেন সংশ্লিষ্টরা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:৪৮:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
১৭
Translate »

স্মার্ট ভূমি সেবায় জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে গণ অধিকার পরিষদের সক্রিয় ভূমিকা

কসবায় “ভূমি মেলা ২০২৫” এর জমকালো উদ্বোধন

আপডেট : ১১:৪৮:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

দেশব্যাপী স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে কসবা উপজেলা ভূমি অফিস, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্যোগে আজ থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী “ভূমি মেলা ২০২৫”। ২৫ মে থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২৭ মে পর্যন্ত। মেলার মূল উদ্দেশ্য—ভূমি সেবাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনবান্ধব ও হয়রানিমুক্ত করে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া।

উদ্বোধনী আয়োজন:
মেলার উদ্বোধন হয় আজ সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে উপজেলা ভূমি অফিস চত্বরে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়ার মিয়া (উদাহরণস্বরূপ), বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি), স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং সেবা প্রত্যাশী সাধারণ মানুষ।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় বক্তারা বলেন, স্মার্ট ভূমি সেবা জনগণের জন্য সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ, যা দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ ভূমি ব্যবস্থাপনা গঠনে সহায়ক হবে।

স্মার্ট সেবা ও প্রযুক্তিনির্ভর ভূমি ব্যবস্থাপনা:
ভূমি মেলায় আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর একাধিক সেবা বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ খুব সহজেই নিচের সেবাসমূহ গ্রহণ করতে পারছেন—

স্মার্ট ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান: অনলাইনে হোল্ডিং অনুযায়ী জমির কর পরিশোধ ও রসিদ প্রাপ্তি।

স্মার্ট নামজারি: জমির মালিকানা হস্তান্তরের ডিজিটাল আবেদন, অবস্থা ট্র্যাকিং ও দ্রুত নিষ্পত্তি।

স্মার্ট খতিয়ান (পর্চা) সংগ্রহ: অনলাইনে নির্ভুল খতিয়ান ডাউনলোড ও যাচাই সেবা।

ডিজিটাল জমির ম্যাপ পেতে সহায়তা: প্লটভিত্তিক জমির মানচিত্র দেখতে ও সংগ্রহ করতে সেবা প্রদান।

ভূমি বিষয়ক পরামর্শ: আইনগত ও ব্যবহারিক দিক থেকে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান।

সেবাগুলো সরাসরি উপস্থিত থেকে নেওয়া যাচ্ছে, আবার কেউ চাইলে নিজ বাড়িতে বসেও অনলাইনে এ সেবা পেতে পারেন।

গণ অধিকার পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ:
ভূমি মেলায় গণ অধিকার পরিষদের কসবা উপজেলা শাখার ছিলো উৎসাহী ও সংগঠিত অংশগ্রহণ। শাখার সভাপতি জনাব হিজবুল্লাহ হেলালী মেলায় অংশ নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন,
“ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মার্ট সেবা নাগরিকদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে পারছে, এটা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা চাই, এ সেবার সুফল যেন সর্বস্তরের জনগণ ভোগ করতে পারে। সচেতনতা বাড়াতে আমরা মাঠে কাজ করে যাবো।”

ছাত্র নেতৃত্বের ভূমিকা:
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কসবা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মোঃ বিল্লাল সরকার মেলার প্রচার, তথ্য প্রদান এবং সচেতনতা কার্যক্রমে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তিনি বলেন,
“সাধারণ মানুষ যেন ভূমি সেবায় আত্মবিশ্বাসী হয় এবং কোন দালাল বা দুর্নীতির আশ্রয় না নেয়—এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”

জনসচেতনতা ও সেবাপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া:
মেলার প্রথম দিনেই ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। অনেকেই সরাসরি খতিয়ান সংগ্রহ করেছেন, নামজারির আবেদন করেছেন এবং ডিজিটাল কর দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, এমন উদ্যোগ তাঁদের ভোগান্তি কমিয়েছে এবং ভরসা তৈরি করেছে।

পরিশেষে “ভূমি মেলা ২০২৫” কসবাবাসীর জন্য একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। জনগণের অংশগ্রহণ, ছাত্র ও সামাজিক সংগঠনের ভূমিকা এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে এই মেলা সুশৃঙ্খলভাবে সফল হবে বলেই বিশ্বাস করেন সংশ্লিষ্টরা।