কসবায় বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে মানুষের ঢল — গ্যাস সংযোগ দেয়া ও শিল্পনগরী গড়ার ঘোষণা দিলেন সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী কবির আহম্মদ ভূঁইয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এক মিলনমেলায় পরিণত হয় কসবা পৌর মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণ। ১১ এপ্রিল বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত এই রাজনৈতিক-সামাজিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং তুলে ধরা হয় কসবার ভবিষ্যৎ উন্নয়নের সম্ভাব্য রূপরেখা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কসবা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট ফকরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসন থেকে বিএনপির সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সদস্য আলহাজ্ব কবির আহম্মদ ভূঁইয়া।
বিপুল মানুষের উপস্থিতি ও দলীয় সংহতি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী মিছিল সহকারে ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিয়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। নারীদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য। ঈদের পর এমন একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে এই গণজমায়েত কসবার রাজনীতিতে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি ও পুনরুজ্জীবনের বার্তা দেয়।
মুক্তমঞ্চ চত্বর কানায় কানায় ভরে ওঠে। পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। অনেকেই বলেন, গত এক যুগের মধ্যে বিএনপির এ ধরনের আয়োজন কসবায় দেখা যায়নি।
নেতৃত্বে পরিবর্তনের বার্তা ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব কবির আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, “আমি কসবাবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনারা আজ এখানে যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তা আমার রাজনৈতিক জীবনের জন্য অনুপ্রেরণা। আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে একসময় গুম হয়েছিলাম। কিন্তু আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় আমি আবার আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমার স্বপ্ন—কসবাকে একটি আধুনিক শিল্পনগরীতে রূপান্তর করা। এখানে শিল্পকারখানা, বেকারত্ব দূরীকরণ, আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং গ্যাস সংযোগ—সবই পরিকল্পনার অংশ। আমরা ক্ষমতায় গেলে এই অঞ্চলকে দেশের অন্যতম উন্নত শিল্প এলাকা হিসেবে গড়ে তুলব।”
বক্তৃতার মঞ্চে নেতৃত্বের ছায়া অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন,
“আজকের এই পুনর্মিলনী আমাদের দলীয় ঐক্য ও জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধির একটি বড় উদাহরণ। আমরা বিশ্বাস করি, কসবাবাসী এবার পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল উদ্দিন সরকার বলেন, “দীর্ঘদিন পরে এমন জমজমাট পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে বিএনপির জোয়ার আসছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করে আগামী নির্বাচনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।”
অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন কসবা পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল উদ্দিন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আয়ুম খান প্রমুখ। বক্তারা সকলেই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করার আহ্বান জানান।
রাজনীতি ছাড়াও ছিল মানবিক আবেদন
অনুষ্ঠানে বক্তারা শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তনের কথা বলেননি, বরং কসবায় শিক্ষার উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা প্রসার, যুব সমাজের দক্ষতা উন্নয়ন এবং প্রবাসী কল্যাণ নিয়েও আলোচনা করেন। কবির আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, “আমার দরজা সবার জন্য খোলা। আমি চাই, যারা বিদেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, তাঁদের অধিকার ও নিরাপত্তাও নিশ্চিত হোক।”
পরিশেষে এই ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি শুধু একটি রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, ছিল একটি সমবেত মানবিক বার্তা—নেতৃত্বে পরিবর্তন, উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও জনসম্পৃক্ত রাজনীতির প্রতি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ।
আশা করা যায়, এ ধরনের ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল রাজনীতি আগামী দিনে কসবা তথা দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।