London ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১০ গুণীজন মেডিকেলে ভর্তির টাকা এখনো জোগাড় হয়নি ইমার যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেশার কুকারে রান্না করলেন সাবেক সৈনিক খোলাবাজার থেকে ১০ হাজার বিনামূল্যের পাঠ্যবই জব্দ, গ্রেপ্তার ২ শেরপুরে মাধ্যমিকের ৯ হাজার সরকারি বই জব্দ! আটক ১ মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ডাক্তারী লেখা পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রান্তি ও পরিবার খাগড়াছড়িতে একক আধিপত্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার, গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ নোয়াখালীতে শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই ১১ দোকান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে : ইসি মাছউদ

ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাগরিকদের মতামত গ্রহণ করবে সংবিধান সংস্কার কমিশন

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘কমিশন সংস্কারের সুপারিশ তৈরির জন্য বিভিন্ন অংশীজনদের মতামত ও প্রস্তাব গ্রহণ করবে। পাশাপাশি কমিশন সাধারণ নাগরিকদের মতামত ও প্রস্তাব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সংগ্রহ করবে।’

আজ রবিবার বিকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংবিধান সংস্কার বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।আলী রিয়াজ বলেন, মঙ্গলবার থেকে এই ওয়েবসাইট কার্যকর হবে। প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এই ঠিকানা জানানো হবে, এর ব্যাপক প্রচারের জন্য আমরা গণমাধ্যমগুলোর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ করব লিখিত মতামত এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর জন্য। সরকার বিভিন্ন কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবে।’

‘ফলে কমিশনগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করবে না। কিন্তু তাদের দেওয়া প্রতিটি লিখিত প্রস্তাব ও মতামত কমিশন নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করবে এবং কমিশনের সুপারিশে তার যথাসাধ্য প্রতিফলন ঘটাতে সচেষ্ট থাকবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘কমিশন এই পর্যায়ে সংবিধান বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী, সিভিল সোসাইটির সংগঠনসমূহের প্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, পেশাজীবী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধি, তরুণ চিন্তাবিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবে এবং তাদের কাছে থেকে লিখিত প্রস্তাব আহ্বান করবে। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে। আমরা আশা করছি যে, আগামী সপ্তাহ থেকেই অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে সক্ষম হবো।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘যেসব ব্যক্তি, সংগঠন, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা দল জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সক্রিয়ভাবে হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থেকেছে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নকে সমর্থন করেছে, ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমকে বৈধতা দানে সাহায্য করেছে কমিশন সেইসব ব্যক্তি, সংগঠন, সংস্থা, প্রতিষ্ঠানকে সংস্কার প্রস্তাবের সুপারিশ তৈরিতে যুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‌‘চব্বিশ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানকে পাশ কাটিয়ে সংবিধান প্রণয়নের কোনো সুযোগ নেই। জনআকাঙ্খার বাস্তবায়ন ঘটাতে চাইলে নিঃসন্দেহে সংবিধানে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি রাখতে হবে। গণঅভ্যুত্থাণ না হলে এই কমিশন হতো না, এমনকি আমরা এখানে উপস্থিতও হতে পারতাম না।’

‘আপনারা, আমরা, সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ বর্তমানে যা কিছু হচ্ছে সবকিছুই হাজারো মানুষের আত্মদানের ফসল। ফ্যাসিবাদীরা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যা যা করেছে এবং তার বিপরীতে সাধারণ ছাত্র-জনতা যে ভূমিকা পালন করেছে, তা যদি উল্লেখ না থাকে তাহলে সংবিধানে কী লিপিবদ্ধ করব? কেন আমরা এতো মানুষের আত্মত্যাগ দেখলাম, তা তো লিপিবদ্ধ অবশ্যই করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধানে থাকুক বা না থাকুক, নিঃসন্দেহে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পেছনে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন আছে। সেটা তো নিঃসন্দেহে ডকুমেন্টেড হতে হবে। এর বাইরে গিয়ে বা এই ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে আমরা জাতি হিসেবে কিছুই করতে পারব না। আমি মনে করি চব্বিশের গণমানুষের বিপ্লবকে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করা শুধু জরুরিই নয়, অনিবার্যও বটে।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪
২১
Translate »

ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাগরিকদের মতামত গ্রহণ করবে সংবিধান সংস্কার কমিশন

আপডেট : ১২:৩৬:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘কমিশন সংস্কারের সুপারিশ তৈরির জন্য বিভিন্ন অংশীজনদের মতামত ও প্রস্তাব গ্রহণ করবে। পাশাপাশি কমিশন সাধারণ নাগরিকদের মতামত ও প্রস্তাব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সংগ্রহ করবে।’

আজ রবিবার বিকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সংবিধান সংস্কার বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।আলী রিয়াজ বলেন, মঙ্গলবার থেকে এই ওয়েবসাইট কার্যকর হবে। প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এই ঠিকানা জানানো হবে, এর ব্যাপক প্রচারের জন্য আমরা গণমাধ্যমগুলোর প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ করব লিখিত মতামত এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর জন্য। সরকার বিভিন্ন কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবে।’

‘ফলে কমিশনগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করবে না। কিন্তু তাদের দেওয়া প্রতিটি লিখিত প্রস্তাব ও মতামত কমিশন নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করবে এবং কমিশনের সুপারিশে তার যথাসাধ্য প্রতিফলন ঘটাতে সচেষ্ট থাকবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘কমিশন এই পর্যায়ে সংবিধান বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী, সিভিল সোসাইটির সংগঠনসমূহের প্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, পেশাজীবী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধি, তরুণ চিন্তাবিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবে এবং তাদের কাছে থেকে লিখিত প্রস্তাব আহ্বান করবে। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে। আমরা আশা করছি যে, আগামী সপ্তাহ থেকেই অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে সক্ষম হবো।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘যেসব ব্যক্তি, সংগঠন, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা দল জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় সক্রিয়ভাবে হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থেকেছে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যাকাণ্ড ও নিপীড়নকে সমর্থন করেছে, ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমকে বৈধতা দানে সাহায্য করেছে কমিশন সেইসব ব্যক্তি, সংগঠন, সংস্থা, প্রতিষ্ঠানকে সংস্কার প্রস্তাবের সুপারিশ তৈরিতে যুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‌‘চব্বিশ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানকে পাশ কাটিয়ে সংবিধান প্রণয়নের কোনো সুযোগ নেই। জনআকাঙ্খার বাস্তবায়ন ঘটাতে চাইলে নিঃসন্দেহে সংবিধানে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি রাখতে হবে। গণঅভ্যুত্থাণ না হলে এই কমিশন হতো না, এমনকি আমরা এখানে উপস্থিতও হতে পারতাম না।’

‘আপনারা, আমরা, সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ বর্তমানে যা কিছু হচ্ছে সবকিছুই হাজারো মানুষের আত্মদানের ফসল। ফ্যাসিবাদীরা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য যা যা করেছে এবং তার বিপরীতে সাধারণ ছাত্র-জনতা যে ভূমিকা পালন করেছে, তা যদি উল্লেখ না থাকে তাহলে সংবিধানে কী লিপিবদ্ধ করব? কেন আমরা এতো মানুষের আত্মত্যাগ দেখলাম, তা তো লিপিবদ্ধ অবশ্যই করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধানে থাকুক বা না থাকুক, নিঃসন্দেহে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পেছনে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন আছে। সেটা তো নিঃসন্দেহে ডকুমেন্টেড হতে হবে। এর বাইরে গিয়ে বা এই ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে আমরা জাতি হিসেবে কিছুই করতে পারব না। আমি মনে করি চব্বিশের গণমানুষের বিপ্লবকে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করা শুধু জরুরিই নয়, অনিবার্যও বটে।’