London ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘এখন সংস্কার না হলে, কখনোই হবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এখন সংস্কার না হলে, আর কখনোই হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার  (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এই সময়ে যদি আমরা কিছু সংস্কার করতে না পারি, তাহলে আর কখনোই করা যাবে না। কারণ আমরা ২০০৭ সালে একবার চেষ্টা করেছিলাম, কিছু কিছু করেছিলাম। তবে সেগুলো থাকেনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর কারণে। এখন যদি সংস্কার না করতে পারি, সংবিধানের দোহাই দিই, অন্যান্য আইনের দোহাই দিই, তাহলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা রক্ত দিয়েছেন তাদের প্রতি অন্যায় হবে। বলছি না যে আমরা চার-পাঁচ বছর থাকব। এক বছরের মধ্যে সংস্কার করা সম্ভব।’

তরুণদের রাজনৈতিক দল গঠনে উৎসাহিত করা উচিত উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের অনুৎসাহ করা ঠিক নয়। আমরা মনে করি নতুন রক্ত প্রয়োজন। তাদের নিরুৎসাহিত করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ, তাদের উৎসাহিত করুন। তারা আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। তাদেরকে যদি উৎসাহিত না করেন, তাহলে আমরা এ জিনিসই (আওয়ামী লীগের পতন) দেখব। আজকে না হয় ১০ / ১৫ বছর পরে দেখব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। নির্বাচন আইন পরিবর্তন করলে হবে না রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও পদ্ধতির পরিবর্তন করলেই নির্বাচনী আইনও পরিবর্তন হয়ে যাবে। এবারের নির্বাচনের আগে বলেছিলাম, যে নির্বাচনে যাবে আম-ছালা দুটোই যাবে। সেটাই হয়েছে।’

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘খুব সামনে আমাদের জন্য বড় অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এটা শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসবে দেশের বাহির থেকে। আমাদের নতুন প্রতিবেশী তৈরি হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিক নয়, ভিন্নধর্মী প্রতিবেশী। আরাকান এখন নতুন বাস্তবতা। আমরা এত দিন বিবেচনা করতে পারিনি। এখন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।’

দেশে নির্বাচনী আইনের বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন বলেও মনে করেন এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।’

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের ছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি করতে গেলে সেটার পরিণতি কী সেটা দেখতে হবে। ছাত্রদের রাজনীতি অবশ্যই করা উচিত। তবে সেটা অবশ্যই ছাত্র সংসদের মাধ্যমে হওয়া উচিত। ছাত্রদল বা ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শেষ পর্যন্ত লীগ হতে হতে বাচ্চা লীগও হয়ে গেছে। সেটার পরিণতি কী সেটা দেশ দেখছে।’

বাংলাদেশে অবশ্যই দ্বিকক্ষ সংসদ ব্যবস্থা হতে হবে বলে মনে করেন এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, সেই জায়গায় বিভিন্ন রকমের মানুষ আসবে। তারা একটা নির্বাচনের জন্য গাইডলাইন তৈরি করতে পারে। সেখানে আলাদা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:২৪:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
১৩
Translate »

‘এখন সংস্কার না হলে, কখনোই হবে না’

আপডেট : ০৩:২৪:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

এখন সংস্কার না হলে, আর কখনোই হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার  (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এই সময়ে যদি আমরা কিছু সংস্কার করতে না পারি, তাহলে আর কখনোই করা যাবে না। কারণ আমরা ২০০৭ সালে একবার চেষ্টা করেছিলাম, কিছু কিছু করেছিলাম। তবে সেগুলো থাকেনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর কারণে। এখন যদি সংস্কার না করতে পারি, সংবিধানের দোহাই দিই, অন্যান্য আইনের দোহাই দিই, তাহলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যারা রক্ত দিয়েছেন তাদের প্রতি অন্যায় হবে। বলছি না যে আমরা চার-পাঁচ বছর থাকব। এক বছরের মধ্যে সংস্কার করা সম্ভব।’

তরুণদের রাজনৈতিক দল গঠনে উৎসাহিত করা উচিত উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের অনুৎসাহ করা ঠিক নয়। আমরা মনে করি নতুন রক্ত প্রয়োজন। তাদের নিরুৎসাহিত করবেন না। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ, তাদের উৎসাহিত করুন। তারা আপনাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। তাদেরকে যদি উৎসাহিত না করেন, তাহলে আমরা এ জিনিসই (আওয়ামী লীগের পতন) দেখব। আজকে না হয় ১০ / ১৫ বছর পরে দেখব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। নির্বাচন আইন পরিবর্তন করলে হবে না রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও পদ্ধতির পরিবর্তন করলেই নির্বাচনী আইনও পরিবর্তন হয়ে যাবে। এবারের নির্বাচনের আগে বলেছিলাম, যে নির্বাচনে যাবে আম-ছালা দুটোই যাবে। সেটাই হয়েছে।’

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘খুব সামনে আমাদের জন্য বড় অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। এটা শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসবে দেশের বাহির থেকে। আমাদের নতুন প্রতিবেশী তৈরি হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিক নয়, ভিন্নধর্মী প্রতিবেশী। আরাকান এখন নতুন বাস্তবতা। আমরা এত দিন বিবেচনা করতে পারিনি। এখন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।’

দেশে নির্বাচনী আইনের বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন বলেও মনে করেন এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।’

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের ছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি করতে গেলে সেটার পরিণতি কী সেটা দেখতে হবে। ছাত্রদের রাজনীতি অবশ্যই করা উচিত। তবে সেটা অবশ্যই ছাত্র সংসদের মাধ্যমে হওয়া উচিত। ছাত্রদল বা ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শেষ পর্যন্ত লীগ হতে হতে বাচ্চা লীগও হয়ে গেছে। সেটার পরিণতি কী সেটা দেশ দেখছে।’

বাংলাদেশে অবশ্যই দ্বিকক্ষ সংসদ ব্যবস্থা হতে হবে বলে মনে করেন এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, সেই জায়গায় বিভিন্ন রকমের মানুষ আসবে। তারা একটা নির্বাচনের জন্য গাইডলাইন তৈরি করতে পারে। সেখানে আলাদা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে না।