London ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এএসপি পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন প্রতারক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

পুলিশের এএসপি পরিচয় দিয়ে অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া এক পেশাদার প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গ্রেফতার প্রতারকের নাম ফখরুল ইসলাম বিজয় (৩০)।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, গত ২৩ অক্টোবর দুপুরে জনৈক আল-আমিন ঢালীর ম্যাসেঞ্জারে একটি ফেক ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাঠালে এ ঘটনায় আল-আমিন ডিএমপির গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ২৪ অক্টোবর ফখরুল আল-আমিনকে ফোন করে হোয়াটসঅ্যাপে ওই জিডির কপি পাঠিয়ে নিজেকে পুলিশের এটিইউয়ের এএসপি পরিচয় দেয় এবং এটিইউর সাইবার ক্রাইম বিভাগে কাজ করে বলে জানায়।

ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ফখরুল ফোন করে জিডির সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস দিয়ে আল-আমিনের কাছে টাকা দাবি করে। সরল বিশ্বাসে ভুক্তভোগী আল-আমিন প্রথমে তাকে দুই হাজার ১৯০ টাকা দেয়। পরে ফখরুলের কথা মতো ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে মোট পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রদান করেন।

তালেবুর রহমান আরও বলেন, কিন্তু সেই জিডির সমস্যা সমাধান করতে ফখরুল আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করলে আল-আমিন বুঝতে পারেন ফখরুল একজন প্রতারক। পরে তিনি টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে প্রতারক ফখরুল তার ফেক ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় আল-আমিনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বর গুলশান থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়।

মামলা দায়েরের পর ভুক্তভোগী আল-আমিন সিটিটিসিকে এই অভিনব প্রতারণার বিষয়টি জানালে সিটিটিসি এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারকের অবস্থান শনাক্ত করে। এরপর ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের পূর্ব লামাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক ফখরুল ইসলাম বিজয়কে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ফখরুল সিটিটিসিকে জানায়, তিনি কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে থানায় অথবা অনলাইনে দায়ের করা মিসিং জিডির কপি সংগ্রহ করতেন। পরে নিজেকে এটিইউ সাইবার ক্রাইমের এএসপি পরিচয় দিয়ে সেই জিডির সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিতেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:২৭:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
১৪
Translate »

এএসপি পরিচয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেন প্রতারক

আপডেট : ০২:২৭:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

পুলিশের এএসপি পরিচয় দিয়ে অভিনব কৌশলে প্রতারণা করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া এক পেশাদার প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। গ্রেফতার প্রতারকের নাম ফখরুল ইসলাম বিজয় (৩০)।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, গত ২৩ অক্টোবর দুপুরে জনৈক আল-আমিন ঢালীর ম্যাসেঞ্জারে একটি ফেক ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাঠালে এ ঘটনায় আল-আমিন ডিএমপির গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ২৪ অক্টোবর ফখরুল আল-আমিনকে ফোন করে হোয়াটসঅ্যাপে ওই জিডির কপি পাঠিয়ে নিজেকে পুলিশের এটিইউয়ের এএসপি পরিচয় দেয় এবং এটিইউর সাইবার ক্রাইম বিভাগে কাজ করে বলে জানায়।

ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ফখরুল ফোন করে জিডির সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস দিয়ে আল-আমিনের কাছে টাকা দাবি করে। সরল বিশ্বাসে ভুক্তভোগী আল-আমিন প্রথমে তাকে দুই হাজার ১৯০ টাকা দেয়। পরে ফখরুলের কথা মতো ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে মোট পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রদান করেন।

তালেবুর রহমান আরও বলেন, কিন্তু সেই জিডির সমস্যা সমাধান করতে ফখরুল আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করলে আল-আমিন বুঝতে পারেন ফখরুল একজন প্রতারক। পরে তিনি টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে প্রতারক ফখরুল তার ফেক ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় আল-আমিনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বর গুলশান থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়।

মামলা দায়েরের পর ভুক্তভোগী আল-আমিন সিটিটিসিকে এই অভিনব প্রতারণার বিষয়টি জানালে সিটিটিসি এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারকের অবস্থান শনাক্ত করে। এরপর ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের পূর্ব লামাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক ফখরুল ইসলাম বিজয়কে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ফখরুল সিটিটিসিকে জানায়, তিনি কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে থানায় অথবা অনলাইনে দায়ের করা মিসিং জিডির কপি সংগ্রহ করতেন। পরে নিজেকে এটিইউ সাইবার ক্রাইমের এএসপি পরিচয় দিয়ে সেই জিডির সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিতেন।