London ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল হাউসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মধ্য ইসরাইলে মঙ্গলবার ভোরে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হাউসি বিদ্রোহীরা। এ সময় সতর্কতামূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাইরেন বেজে উঠলে ইসরাইলিরা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়।

জানা গেছে, হামাসের সাথে পর্যায়ক্রমে যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছানো সত্ত্বেও গাজা উপত্যকায় যখন ইসরাইলি বাহিনী রাতভর ও মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালায়, ঠিক তখনি হাউসিদের এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে একাধিক বাধা দেয়ার চেষ্টার কথা জানিয়ে বলেছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘সম্ভবত প্রতিহত করা হয়েছিল।’

ক্ষেপণাস্ত্র বা এর ধ্বংসাবশেষ থেকে কেউ আহত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলের জরুরি পরিষেবা বিভাগ ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় কিছু লোক আহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনের রাজধানী সানা নিয়ন্ত্রণকারী ইরান সমর্থিত হাউসি বিদ্রোহীরা গাজায় হামাসের সাথে ইসরাইলের চলমান সংঘর্ষের মধ্যে ইসরাইল ও প্রায় ১০০টি বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। বিদ্রোহীরা এখনো সর্বশেষ হামলার দায় স্বীকার করেনি। যা তারা কখনো কখনো কয়েক ঘণ্টা বা দিন দেরি করে।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় ইসরাইলি হামলায় দুই নারী, তাদের চার সন্তান (এক মাস থেকে ৯ বছর বয়সী) এবং এক অনাগত শিশুসহ ছয়জন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এক নারী দুই সন্তানের জননী এবং অন্যজন তার ছেলে ও মেয়ের সাথে নিহত হয়েছেন।

দেইর আল-বালাহর আল আকসা মার্টারস হাসপাতাল লাশগুলো গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এ হামলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৬০০ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ সময়ে আহত হয়েছেন অন্তত এক লাখ ৯ হাজার ৫৭১ ফিলিস্তিনি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, নিহত ও আহতের সংখ্যা আরো বেশি। এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকা পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে না পারায় সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এজন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।

জাতিসঙ্ঘের হিসাব মতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসাথে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।

ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে
সূত্র : টাইমস অফ ইসরাইল

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৬:৩৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫
১৩
Translate »

ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল হাউসি

আপডেট : ০৬:৩৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

মধ্য ইসরাইলে মঙ্গলবার ভোরে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হাউসি বিদ্রোহীরা। এ সময় সতর্কতামূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাইরেন বেজে উঠলে ইসরাইলিরা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়।

জানা গেছে, হামাসের সাথে পর্যায়ক্রমে যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছানো সত্ত্বেও গাজা উপত্যকায় যখন ইসরাইলি বাহিনী রাতভর ও মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালায়, ঠিক তখনি হাউসিদের এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে একাধিক বাধা দেয়ার চেষ্টার কথা জানিয়ে বলেছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘সম্ভবত প্রতিহত করা হয়েছিল।’

ক্ষেপণাস্ত্র বা এর ধ্বংসাবশেষ থেকে কেউ আহত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলের জরুরি পরিষেবা বিভাগ ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় কিছু লোক আহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনের রাজধানী সানা নিয়ন্ত্রণকারী ইরান সমর্থিত হাউসি বিদ্রোহীরা গাজায় হামাসের সাথে ইসরাইলের চলমান সংঘর্ষের মধ্যে ইসরাইল ও প্রায় ১০০টি বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। বিদ্রোহীরা এখনো সর্বশেষ হামলার দায় স্বীকার করেনি। যা তারা কখনো কখনো কয়েক ঘণ্টা বা দিন দেরি করে।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় ইসরাইলি হামলায় দুই নারী, তাদের চার সন্তান (এক মাস থেকে ৯ বছর বয়সী) এবং এক অনাগত শিশুসহ ছয়জন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এক নারী দুই সন্তানের জননী এবং অন্যজন তার ছেলে ও মেয়ের সাথে নিহত হয়েছেন।

দেইর আল-বালাহর আল আকসা মার্টারস হাসপাতাল লাশগুলো গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এ হামলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৬০০ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ সময়ে আহত হয়েছেন অন্তত এক লাখ ৯ হাজার ৫৭১ ফিলিস্তিনি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, নিহত ও আহতের সংখ্যা আরো বেশি। এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকা পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে না পারায় সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এজন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।

জাতিসঙ্ঘের হিসাব মতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসাথে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।

ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে
সূত্র : টাইমস অফ ইসরাইল