ইউক্রেনে ৩ দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেন পুতিন

যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে নিশ্চিতের একটি প্রকৃত প্রচেষ্টা না কেবলই লোকদেখানো? রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ৩ দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর এখন এমন প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
সম্প্রতি ক্রেমলিনের সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রথমে পুতিন ইস্টার উপলক্ষে ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন। এবং এটিকে ‘মানবিক’ পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেন। আর এখন তিনি নতুন করে মে মাসের শুরুতে একতরফা তিন দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। যা ৮ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত স্থায়ী হবে। আর এটি করা হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে।
যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে বলছে, ৭২ ঘণ্টার জন্য সমস্ত সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। এটি ‘মানবিক’ বিবেচনায় করা হচ্ছে। বিবৃতিতে মস্কো ইউক্রেনকে এই যুদ্ধবিরতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
মস্কোর এমন প্রস্তাবের জবাবে ইউক্রেন পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলছে, রাশিয়া কেন অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে পারে না। এ ব্যাপারে কিয়েভ কমপক্ষে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, ‘যদি রাশিয়া সত্যিই শান্তি চায়, তাহলে তাদের অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি করতে হবে। ৮ মে পর্যন্ত অপেক্ষা কেন?’
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেনে সত্যিই কি যুদ্ধ বন্ধে আন্তরিক রুশ প্রেসিডেন্ট। নাকি কেবল ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রভাবিত করার জন্যই লোকদেখানো এ পদক্ষেপ তার।
অবশ্য পূর্বের ইস্টার যুদ্ধবিরতির সময়, ইউক্রেন রাশিয়ান সেনাদের বিরুদ্ধে বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছিল। তাই মস্কোর ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে হোয়াইট হাউসকে বার্তা দেওয়ার কারণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। যাতে দেখানো যায়- এই যুদ্ধে রাশিয়া শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী এবং কিয়েভ আক্রমণকারী।
অবশ্য পুতিনের ওপর সম্প্রতি কিছুটা নাখোশ হয়েছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকা, শহর এবং শহরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কোনও কারণ ছিল না। এটা আমাকে ভাবতে বাধ্য করে হয়তো তিনি (পুতিন) যুদ্ধ বন্ধ করতে চান না, তিনি কেবল আমাকেই সাহায্য করছেন। এটি এখন ‘ব্যাংকিং’ বা ‘সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা’র মাধ্যমে ভিন্নভাবে মোকাবিলা করতে হবে? কারণ অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে!’
ট্রাম্পের এমন পোস্টের পরই ৩ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়েছেন পুতিন। যা নিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড ট্রাম্প) স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে, রক্তপাত বন্ধ করতে প্রথমে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দেখতে চান। আর সেটি এখনো না হওয়ায় তিনি উভয় দেশের নেতাদের নিয়ে হতাশ।’