London ১১:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
হামজার ছোঁয়ায় ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের দারুণ জয় এই রাতে আলো ছিল, জয় ছিল, আর ছিল একজন হামজা চৌধুরী ইতালিতে সাংগঠনিক কাজে‌ বিশেষ অবদান রাখায় ইকবাল বেপারী‌কে সংবর্ধনা দিলো‌ প্রগতি ব্যবসায়ী সমিতি পটুয়াখালীতে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষনে বিনামূল্যে ৪৭ মেট্রিক টন লবন বিতরণ পটুয়াখালীতে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন পশুর হাট রাজশাহীতে প্রতারণা করে ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ ব্যারিস্টার কায়সার কামালের ঈদ উপহার পেলো দুর্গাপুরের চার শহীদের পরিবার সিরাজগঞ্জে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী‌কে খুনের অ‌ভি‌যোগ-আটক ১ জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ইতালির পিসাকানে স্কুলে টেস্ট দ্যা ওয়ার্ল্ড নামে অনুষ্ঠিত বহুজাতিক সংস্কৃতির মিলনমেলা

আলফাডাঙ্গা বিএনপির মঞ্চে নৌকার প্রার্থী!

ফরিদপুর প্রতিনিধি :

আলোচিত কর্মীসভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী মনোনয়ন প্রত্যাশী মাসুদ, মঞ্চে আরও এক আওয়ামী নেতা—খন্দকার নাসিরুল ইসলামের বিস্ফোরক বক্তব্য: “নৌকার প্রার্থীরাও এখন বিএনপি করতে পারে”

বিএনপির আদর্শ আজ কি প্রশ্নবিদ্ধ? আলফাডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত এক কর্মীসভায় বিএনপির নেতাদের অবস্থান যেন নিজেরাই বুঝে উঠতে পারছেন না। ইউনিয়ন পর্যায়ের এই সভায় মঞ্চে দেখা গেলো নৌকা-মনোনয়নপ্রত্যাশীকে সভাপতি হিসেবে, সাথে আরও একজন আওয়ামী লীগ নেতাকেও—ঘটনাটি স্থানীয় রাজনীতিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

শুক্রবার বিকেল ৫টায় আলফাডাঙ্গার বেজিডাঙ্গা আমেনা ওয়াহেদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আলফাডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মীসভা হয়। সভাপতিত্ব করেন মনিরুল ইসলাম মাসুদ মাস্টার, যিনি ২০২২ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা চেয়েছিলেন।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষকদলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

নাসিরুল ইসলামের বিস্ফোরক বক্তব্য: “নৌকার প্রার্থীরাও এখন বিএনপি করতে পারে”

প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন,
“এখন কেউ নৌকার প্রার্থী হলেও বিএনপি করতে পারবে। রাজনীতির বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”

তিনি আরও বলেন,
“মাসুদ চেয়ারম্যান ছিলেন, তাকে মাত্র ৬২ ভোটে জোর করে হারানো হয়েছে। এমন জনপ্রিয় লোককে আমরা বাদ দিতে পারি না।”

মঞ্চে আরও একজন: আনোয়ার, পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতা!

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়—এই কর্মীসভার মঞ্চে ছিলেন আনোয়ার নামে আরও একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। প্রশ্ন উঠেছে, এটি কি বিএনপির মঞ্চ, নাকি আওয়ামী লীগের ছায়ায় ঢাকা পড়া একটি কর্মসূচি?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদারেস আলী ঈসা বলেন,
“সমর্থক হতে পারে, এমনকি প্রাথমিক সদস্যও হতে পারে—তাই বলে সংগঠনের বাইরে কাউকে সভাপতি করা যায় না। এটা আদর্শভ্রষ্টতা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার লঙ্ঘন।”

তিনি হুঁশিয়ারি দেন,
“বিএনপির আদর্শে কোনো আপস নেই। বিষয়টি তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সভায় অনেক নেতাকর্মী তাৎক্ষণিক অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কেউ কেউ সভাস্থল ত্যাগ করেন, আবার কেউ কেউ ‘বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে মন্তব্য করেন।

আলফাডাঙ্গা বিএনপির মঞ্চে ‘নৌকার ছায়া’ দেখে কর্মীরা হতবাক। এ শুধু একটি কর্মীসভা নয়, এটি সম্ভবত বিএনপির নীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। এখন প্রশ্ন—এটি কি বিচ্যুতি, নাকি নতুন কোনো বাস্তবতার মেনে নেওয়া?

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০১:২২:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
১৫
Translate »

আলফাডাঙ্গা বিএনপির মঞ্চে নৌকার প্রার্থী!

আপডেট : ০১:২২:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

আলোচিত কর্মীসভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী মনোনয়ন প্রত্যাশী মাসুদ, মঞ্চে আরও এক আওয়ামী নেতা—খন্দকার নাসিরুল ইসলামের বিস্ফোরক বক্তব্য: “নৌকার প্রার্থীরাও এখন বিএনপি করতে পারে”

বিএনপির আদর্শ আজ কি প্রশ্নবিদ্ধ? আলফাডাঙ্গায় অনুষ্ঠিত এক কর্মীসভায় বিএনপির নেতাদের অবস্থান যেন নিজেরাই বুঝে উঠতে পারছেন না। ইউনিয়ন পর্যায়ের এই সভায় মঞ্চে দেখা গেলো নৌকা-মনোনয়নপ্রত্যাশীকে সভাপতি হিসেবে, সাথে আরও একজন আওয়ামী লীগ নেতাকেও—ঘটনাটি স্থানীয় রাজনীতিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

শুক্রবার বিকেল ৫টায় আলফাডাঙ্গার বেজিডাঙ্গা আমেনা ওয়াহেদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আলফাডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মীসভা হয়। সভাপতিত্ব করেন মনিরুল ইসলাম মাসুদ মাস্টার, যিনি ২০২২ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা চেয়েছিলেন।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষকদলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

নাসিরুল ইসলামের বিস্ফোরক বক্তব্য: “নৌকার প্রার্থীরাও এখন বিএনপি করতে পারে”

প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন,
“এখন কেউ নৌকার প্রার্থী হলেও বিএনপি করতে পারবে। রাজনীতির বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”

তিনি আরও বলেন,
“মাসুদ চেয়ারম্যান ছিলেন, তাকে মাত্র ৬২ ভোটে জোর করে হারানো হয়েছে। এমন জনপ্রিয় লোককে আমরা বাদ দিতে পারি না।”

মঞ্চে আরও একজন: আনোয়ার, পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতা!

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়—এই কর্মীসভার মঞ্চে ছিলেন আনোয়ার নামে আরও একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। প্রশ্ন উঠেছে, এটি কি বিএনপির মঞ্চ, নাকি আওয়ামী লীগের ছায়ায় ঢাকা পড়া একটি কর্মসূচি?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদারেস আলী ঈসা বলেন,
“সমর্থক হতে পারে, এমনকি প্রাথমিক সদস্যও হতে পারে—তাই বলে সংগঠনের বাইরে কাউকে সভাপতি করা যায় না। এটা আদর্শভ্রষ্টতা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার লঙ্ঘন।”

তিনি হুঁশিয়ারি দেন,
“বিএনপির আদর্শে কোনো আপস নেই। বিষয়টি তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সভায় অনেক নেতাকর্মী তাৎক্ষণিক অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কেউ কেউ সভাস্থল ত্যাগ করেন, আবার কেউ কেউ ‘বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে মন্তব্য করেন।

আলফাডাঙ্গা বিএনপির মঞ্চে ‘নৌকার ছায়া’ দেখে কর্মীরা হতবাক। এ শুধু একটি কর্মীসভা নয়, এটি সম্ভবত বিএনপির নীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। এখন প্রশ্ন—এটি কি বিচ্যুতি, নাকি নতুন কোনো বাস্তবতার মেনে নেওয়া?