ফরিদপুর আলফাডাঙ্গা পৌরসভার নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তির কোন শেষ নেই এমন অভিযোগ উঠেছে। অর্ন্তবর্তী কালীন সরকার গঠন হবার পর স্থানীয় সরকার বিভাগের সকল, সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভার সকল জনপ্রতিনিধিদের অপসারন করার পর থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় প্রতিটা সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভার প্রশাসক কমিটি নিয়োগ দেয় সরকার।
প্রত্যেক উপজেলায় ও পৌরসভার প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এবং প্রশাসক কমিটিতে সদস্য হিসাবে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের।
তার ধারাবাহিকতায় দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কর্ম এলাকা বন্টন সমূহ ১,২,৫ নং ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম।৮,৯ ওয়ার্ডের দায়িত্ব রয়েছেন সমাজসেবা কর্মকর্তা ঝুমুর সরকার।৩,৪ নং ওয়ার্ডের রয়েছেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এ কে এম মাকসুদুল হাসান। ৬,৭ নং ওয়ার্ডের রয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাহাত ইসলাম।
অভিযোগ রয়েছে এই প্রশাসক কমিটি দায়িত্ব গ্রহন করার পর থেকে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার সেবা পেতে বাড়তি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নাগরিকরা। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন , নাগরিক সনদ ও ওয়ারিশ সনদ পেতে দুই থেকে আড়াই মাস পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। সেবাপ্রার্থীদের অভিযোগ, মেয়রের দায়িত্বে প্রশাসক ও কাউন্সিলরের পরিবর্তে সরকারি দপ্তরের প্রধানরা আসায় ঠিকমতো মিলছে না সেবা। কয়েক মাস ধরেই নাগরিক সেবা ঠিকমতে পাচ্ছে না।
সেবা প্রত্যাশিত নাগরিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে যে সকল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন সে সকল কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়,তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে গেলে এসব অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন বলে আখ্যা দিয়ে উড়িয়ে দেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম। অপর দিকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি,অফিস রুমে তালা ঝুলছে দেখা যায়।
পৌরসভায় নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তিতে ভুক্তভোগী ১নং ওয়ার্ডের আসমা ৪৫দিন,একই ওয়ার্ডের সালেহা ৩০দিন, ৫ নং ওয়ার্ডের ইছাপাশা গ্রামের রুবাইয়া ৭৫দিন, ২ নং ওয়ার্ডের আল-আমীন তালুকদার ৩০ দিন, সহ নাগরিক সনদের জন্য ঘুরছে। ৪ নং ওয়ার্ডের বেদনা সার্টিফিকেট, ৪নং ওয়ার্ডের সিয়াম ৩০দিন, যাবত নাগরিক সনদের জন্য, ২ নং ওয়ার্ডের ওবাদুর ৪৫দিন যাবত, নাগরিক ও ওয়ারিশ সনদের জন্য দপ্তরে গিয়ে কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে বলে অভিযোগ করেন।
পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, সনদের কোনো আবেদন পৌরসভার দায়িত্বরত কর্মচারী গ্রহণ করেনা ভেরিফিকেশনের জন্য নেন কাউন্সিলরের কাছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব দেন তার অফিসের দু’জন কর্মকর্তাকে। তারা সম্মতি দিলেই অনুমোদন দেন কাউন্সিলর। আবার কাউন্সিলর বাইরে থাকলে তাঁর কর্মস্থলে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ফলে এখন একটি আবেদন অনুমোদনে চারটি ভেরিফিকেশন লাগছে। অথচ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি একবার ভেরিফিকেশন করে স্বাক্ষর দিলেই অনুমোদন হয়ে যেত।
পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক প্রতিবেদক কে জানান ঝুমুর সরকার নিয়মিত অফিস না করায় তার টেবিলের নাগরিক সেবার আবেদন অপেক্ষার পর অপেক্ষায় থাকতে হয়।
শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম অমনোযোগী হওয়া ঠিক মত মিলছে না সেবা।যুব উন্নায়ন অফিসার ও উপজেলা প্রকৌশলী হাতে কোন ফাইল আটকে থাকে না
পৌর দায়িত্ব প্রাপ্ত সদস্য ঝুমুর সরকারকে তার মুঠোফোনে কল দিলে বলেন ভাই নিউজ করার দরকার নেই।কাল অফিসে আসেন কথা বলবো।বারবার সেবা ভোগান্তি কথা জানতে চাইল উত্তর না দিয়ে একই কথা বলে।আরো বলেন আমার মা অসুস্থ আমি তিনদিন ছুটিতে আছি,পরে কথা বলবো।
আরেক দায়িত্ব প্রাপ্ত সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন,আমি নিয়মিত অফিস করি,সকল কর্মকর্তার পরে যাই, দায়িত্বের কোন কাজই ফাঁকি দেইনা।সাংবাদিক ভাই দেখেন আমার টেবিলে কোন ফাইল স্বাক্ষর করতে বাকী নেই। উদ্যক্তা ঠিকমত অফিসে আসেন না ও টিসিবি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ভোগান্তি হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রাসেল ইকবাল বলেন,ইউএনও হিসাবে সদ্য যোগদান ও পৌর দায়িত্ব নেওয়ার পরে সেবা প্রাপ্তি ভোগান্তির অভিযোগ আজই শুনলাম,তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিক করে দিবো।