London ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আয়োজনটি জলমাথা ও মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভোগা শিশুদের

বিশ্ব হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবসের আয়োজনছবি: সংগৃহীত

রোগ দুটির নাম একটু খটমট—হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা। জন্মের পর থেকে শিশুর মাথা ক্রমেই বড় হয়ে বিরাট আকার ধারণ করার রোগটিই হাইড্রোকেফালাস বা জলমাথা। আর স্পাইনা বিফিডা হলো মেরুদণ্ডের সমস্যা। এতে শিশুর পিঠে বিরাট টিউমার দেখা যায়, মলমূত্রের নিয়ন্ত্রণও থাকে না। দেশে এ দুই ধরনের ত্রুটিযুক্ত নবজাতকের সংখ্যাও কম নয়। জন্মগত ক্রটি নিয়ে বেড়ে ওঠা শিশুদের এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতেই প্রতিবছর ২৫ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবস।

দেশে এমন রোগে আক্রান্ত শিশুদের সেবা দিতে কাজ করছে ‘বাংলাদেশ হাইড্রোকেফালাস অ্যান্ড স্পাইনা বিফিডা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’। এই ট্রাস্টের আয়োজনে গতকাল ২৫ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডিতে উদ্‌যাপিত হয়েছে দিবসটি। সেই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মা–বাবার সঙ্গে হাজির হয়েছিল হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সী রোগী। সেখানে তারা নিজেদের মতো করে সময় কাটিয়েছে।

হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবসের আগত শিশু–কিশোরেরা নিজেদের মতো সময় কাটিয়েছে

হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবসের আগত শিশু–কিশোরেরা নিজেদের মতো সময় কাটিয়েছেছবি: সংগৃহীত

আয়োজন নিয়ে রাব্বিয়াতুল বাইত নামের একজন মা ট্রাস্টের ফেসবুক পোস্টে কমেন্টে করেছেন, ‘অসাধারণ একটি প্রোগ্রাম হয়েছে। এটা শুধু একটা দিবসই নয়, এটা আমার মতো মায়েদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেই যখন দেখি হাইড্রোকেফালাস বাচ্চা কি সুন্দর তিলাওয়াত করছে, গান গাইছে, তখন চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি। এখানে যাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল বাকি বাচ্চাদের অবস্থা দেখা, কেমন আছে তারা, তা জানতে চাওয়া। এই অনুষ্ঠানে গেলে আমার মনোবল হাজার গুণ বেড়ে যায়।’

হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা আক্রান্ত রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও অনুষ্ঠানে ছিলেন চিকিৎসকেরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন, গর্ভকালের শুরুর দিনগুলোয় ফলিক অ্যাসিড স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। অন্তঃসত্ত্বা নারীর ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার গ্রহণ স্পাইনা বিফিডাসহ অন্যান্য জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। একটু সচেতন হলেই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বাংলাদেশ হাইড্রোকেফালাস অ্যান্ড স্পাইনা বিফিডা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের চেয়্যারম্যান অধ্যাপক রেজিনা হামিদ বলেন, দেশে সব অঞ্চল ও সরকারি হাসপাতালে এ ধরনের রোগের চিকিৎসা অপ্রতুল। তাই এ রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় সরকার, জনগণসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:৩০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪
২৮
Translate »

আয়োজনটি জলমাথা ও মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভোগা শিশুদের

আপডেট : ১২:৩০:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

বিশ্ব হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবসের আয়োজনছবি: সংগৃহীত

রোগ দুটির নাম একটু খটমট—হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা। জন্মের পর থেকে শিশুর মাথা ক্রমেই বড় হয়ে বিরাট আকার ধারণ করার রোগটিই হাইড্রোকেফালাস বা জলমাথা। আর স্পাইনা বিফিডা হলো মেরুদণ্ডের সমস্যা। এতে শিশুর পিঠে বিরাট টিউমার দেখা যায়, মলমূত্রের নিয়ন্ত্রণও থাকে না। দেশে এ দুই ধরনের ত্রুটিযুক্ত নবজাতকের সংখ্যাও কম নয়। জন্মগত ক্রটি নিয়ে বেড়ে ওঠা শিশুদের এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতেই প্রতিবছর ২৫ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবস।

দেশে এমন রোগে আক্রান্ত শিশুদের সেবা দিতে কাজ করছে ‘বাংলাদেশ হাইড্রোকেফালাস অ্যান্ড স্পাইনা বিফিডা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’। এই ট্রাস্টের আয়োজনে গতকাল ২৫ অক্টোবর রাজধানীর ধানমন্ডিতে উদ্‌যাপিত হয়েছে দিবসটি। সেই আয়োজনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মা–বাবার সঙ্গে হাজির হয়েছিল হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সী রোগী। সেখানে তারা নিজেদের মতো করে সময় কাটিয়েছে।

হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবসের আগত শিশু–কিশোরেরা নিজেদের মতো সময় কাটিয়েছে

হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা দিবসের আগত শিশু–কিশোরেরা নিজেদের মতো সময় কাটিয়েছেছবি: সংগৃহীত

আয়োজন নিয়ে রাব্বিয়াতুল বাইত নামের একজন মা ট্রাস্টের ফেসবুক পোস্টে কমেন্টে করেছেন, ‘অসাধারণ একটি প্রোগ্রাম হয়েছে। এটা শুধু একটা দিবসই নয়, এটা আমার মতো মায়েদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেই যখন দেখি হাইড্রোকেফালাস বাচ্চা কি সুন্দর তিলাওয়াত করছে, গান গাইছে, তখন চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি। এখানে যাওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল বাকি বাচ্চাদের অবস্থা দেখা, কেমন আছে তারা, তা জানতে চাওয়া। এই অনুষ্ঠানে গেলে আমার মনোবল হাজার গুণ বেড়ে যায়।’

হাইড্রোকেফালাস ও স্পাইনা বিফিডা আক্রান্ত রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও অনুষ্ঠানে ছিলেন চিকিৎসকেরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন, গর্ভকালের শুরুর দিনগুলোয় ফলিক অ্যাসিড স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। অন্তঃসত্ত্বা নারীর ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার গ্রহণ স্পাইনা বিফিডাসহ অন্যান্য জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। একটু সচেতন হলেই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বাংলাদেশ হাইড্রোকেফালাস অ্যান্ড স্পাইনা বিফিডা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের চেয়্যারম্যান অধ্যাপক রেজিনা হামিদ বলেন, দেশে সব অঞ্চল ও সরকারি হাসপাতালে এ ধরনের রোগের চিকিৎসা অপ্রতুল। তাই এ রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় সরকার, জনগণসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।