London ০১:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ শুধুই ডিম খাওয়ার দিন, কারণ…

ব্যাচেলর জীবনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় খাবার হচ্ছে ডিম। শুধু ব্যাচেলরদের জন্যই নয়, যে কোন সময় সবচেয়ে দ্রুত পুষ্টির অন্যতম উপকরণ হচ্ছে ডিম। ডিম দিয়ে কত পদের খাবার যে রান্না করা যায়, তার হিসেব নেই। কেউ হয়তো সিদ্ধ ডিম পছন্দ করেন, আবার কেউ হয়তো ডিমের অমলেট, আবার ডিমের মামলেট পছন্দ করেন এমন মানুষের অভাব নেই। তবে যেভাবেই হউক ডিম পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কিছুটা হলেও কষ্টদায়ক। 

আজ বিশ্ব ডিম দিবস। ‘ডিমে পুষ্টি, ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগমুক্তি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস। প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী ডিমের পুষ্টিগুণ ও গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এই দিনটি পালন করা হয়। বাংলাদেশে বিশ্ব ডিম দিবস বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে উদযাপিত হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং ডিম উৎপাদন ও বিতরণে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সচেতনতামূলক এবং প্রমোশনাল কার্যক্রমের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করে থাকে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক ডিম কমিশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বিশ্ব ডিম দিবস পালন করা হয়। দিনটির মূল উদ্দেশ্য হলো ডিমের পুষ্টিগুণ এবং সারা বিশ্বে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে এর ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। কেননা, ডিম সারা বিশ্বে একটি সহজলভ্য এবং পুষ্টিকর খাবার হিসেবে পরিচিত। যা মানবদেহের প্রয়োজনীয় প্রোটিনসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পুষ্টিমান বিবেচনায় ডিমকে বলা হয় ‘সুপারফুড’। ডিমকে ‘সুপারফুড’ বলা হয়। কারণ প্রতিটি ডিমেই রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানে। তাছাড়া ডিমের প্রোটিন মানবদেহের পেশি গঠনে সাহায্য করে, এবং ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

ডিমকে ঘিরে দেশের বাজারে চলমান অস্থিরতা নিরসনে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষ্যে সংগঠনটির সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, প্রান্তিক খামারি ডিম এবং মুরগি উৎপাদন করে, কিন্তু দাম নির্ধারণ করতে পারে না। দাম নির্ধারণ করে কর্পোরেট গ্রুপ ও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের সুবিধামতো যে দাম নির্ধারণ করা হয়, সে দামে প্রান্তিক খামারিদের ডিম ও মুরগি বিক্রি করতে হয়। যখন দাম বাড়ানো হয় তখন খামারি ন্যায্য মূল্য পায়। আবার যখন কমিয়ে দেওয়া হয়, তখন উৎপাদন খরচ থেকে কম দামেই ডিম বিক্রি করতে হয়। এমন অবস্থায় আর্থিক ক্ষতি হওয়ার কারণে উৎপাদন থেকে অনেক খামারিদের সরে যেতে হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, ডিম-মুরগির বাজারে অস্থিরতার কারণ কর্পোরেট গ্রুপ ও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ীদের আধিপত্য রয়েছে। এরা বারবার বাজারে সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিলেও শাস্তি না হওয়ায় বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলছে। কর্পোরেট গ্রুপ ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সিন্ডিকেট শক্তিশালী হওয়ার কারণে বারবার একই পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। ফিড বাচ্চার দাম নির্ধারণ না করে, বিগত দিনের সিন্ডিকেটকারীদের সঙ্গে নিয়ে ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এসব বন্ধ করতে না পারলে দেশের বাজারে ডিম নিয়ে অস্থিরতা কমবে না।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:১৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
৩৪
Translate »

আজ শুধুই ডিম খাওয়ার দিন, কারণ…

আপডেট : ১১:১৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪

ব্যাচেলর জীবনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় খাবার হচ্ছে ডিম। শুধু ব্যাচেলরদের জন্যই নয়, যে কোন সময় সবচেয়ে দ্রুত পুষ্টির অন্যতম উপকরণ হচ্ছে ডিম। ডিম দিয়ে কত পদের খাবার যে রান্না করা যায়, তার হিসেব নেই। কেউ হয়তো সিদ্ধ ডিম পছন্দ করেন, আবার কেউ হয়তো ডিমের অমলেট, আবার ডিমের মামলেট পছন্দ করেন এমন মানুষের অভাব নেই। তবে যেভাবেই হউক ডিম পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কিছুটা হলেও কষ্টদায়ক। 

আজ বিশ্ব ডিম দিবস। ‘ডিমে পুষ্টি, ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগমুক্তি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস। প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী ডিমের পুষ্টিগুণ ও গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এই দিনটি পালন করা হয়। বাংলাদেশে বিশ্ব ডিম দিবস বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে উদযাপিত হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং ডিম উৎপাদন ও বিতরণে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সচেতনতামূলক এবং প্রমোশনাল কার্যক্রমের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করে থাকে।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক ডিম কমিশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বিশ্ব ডিম দিবস পালন করা হয়। দিনটির মূল উদ্দেশ্য হলো ডিমের পুষ্টিগুণ এবং সারা বিশ্বে মানুষের খাদ্যাভ্যাসে এর ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। কেননা, ডিম সারা বিশ্বে একটি সহজলভ্য এবং পুষ্টিকর খাবার হিসেবে পরিচিত। যা মানবদেহের প্রয়োজনীয় প্রোটিনসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পুষ্টিমান বিবেচনায় ডিমকে বলা হয় ‘সুপারফুড’। ডিমকে ‘সুপারফুড’ বলা হয়। কারণ প্রতিটি ডিমেই রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানে। তাছাড়া ডিমের প্রোটিন মানবদেহের পেশি গঠনে সাহায্য করে, এবং ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

ডিমকে ঘিরে দেশের বাজারে চলমান অস্থিরতা নিরসনে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষ্যে সংগঠনটির সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, প্রান্তিক খামারি ডিম এবং মুরগি উৎপাদন করে, কিন্তু দাম নির্ধারণ করতে পারে না। দাম নির্ধারণ করে কর্পোরেট গ্রুপ ও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের সুবিধামতো যে দাম নির্ধারণ করা হয়, সে দামে প্রান্তিক খামারিদের ডিম ও মুরগি বিক্রি করতে হয়। যখন দাম বাড়ানো হয় তখন খামারি ন্যায্য মূল্য পায়। আবার যখন কমিয়ে দেওয়া হয়, তখন উৎপাদন খরচ থেকে কম দামেই ডিম বিক্রি করতে হয়। এমন অবস্থায় আর্থিক ক্ষতি হওয়ার কারণে উৎপাদন থেকে অনেক খামারিদের সরে যেতে হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, ডিম-মুরগির বাজারে অস্থিরতার কারণ কর্পোরেট গ্রুপ ও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ীদের আধিপত্য রয়েছে। এরা বারবার বাজারে সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিলেও শাস্তি না হওয়ায় বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলছে। কর্পোরেট গ্রুপ ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সিন্ডিকেট শক্তিশালী হওয়ার কারণে বারবার একই পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। ফিড বাচ্চার দাম নির্ধারণ না করে, বিগত দিনের সিন্ডিকেটকারীদের সঙ্গে নিয়ে ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এসব বন্ধ করতে না পারলে দেশের বাজারে ডিম নিয়ে অস্থিরতা কমবে না।