London ০৪:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থ আত্মসাতের তদন্তে ফেঁসে যাচ্ছেন লেবারমন্ত্রী টিউলিপ

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া তার খালাকে তহবিল চুরিতে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে

 

বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারের একটি রিপোর্ট তদন্তে একজন লেবারমন্ত্রী ধরা পড়েছেন।

হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেটের লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তার খালা, বাংলাদেশের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তহবিল আত্মসাৎ করতে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে।

লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা অভিযোগগুলিকে “ভুয়া দাবি” হিসাবে চিহ্নিত করেছেন এবং বলেছেন যে এই বিষয়ে সিটি মন্ত্রী মিসেস সিদ্দিকের সাথে যোগাযোগ করা হয়নি।

যদি নিশ্চিত হয়, তদন্তের ফলে যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন মঙ্গলবার স্থানীয় সংবাদ আউটলেটকে বলেছে যে পরিবারটি একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং আটটি বড় মাপের প্রকল্প নির্মাণের উদ্দেশ্যে বেআইনিভাবে ৫.২ বিলিয়ন পাউন্ড চুরি করেছে এমন অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে।

সবগুলোই বাস্তবায়ন করেছে আওয়ামী লীগ, দেশের সাবেক ক্ষমতাসীন দল যা মিসেস হাসিনার নেতৃত্বে ছিল। ৭৬ বছর বয়সী, বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী প্রধানমন্ত্রী, ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ক্ষমতাচ্যুত হয়ে এখন ভারতে রয়েছেন।

তার শাসনামলে, বিরোধীদের আক্রমণ করা হয়, গ্রেফতার করা হয় এবং গোপনে বন্দী করা হয় কারণ শাসন বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড চালায়।

এরপর থেকে একটি নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে এবং এখন প্রাক্তন শাসক ও তার পরিবারকে তদন্ত করছে।

মিসেস সিদ্দিক তদন্তের বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য টেলিগ্রাফের অনুরোধের জবাব দেননি।

তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের পর মিস হাসিনা আগস্টে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে মিসেস সিদ্দিকের পরিবারের পশ্চাদপসরণ কীভাবে লুটপাট করা হয়েছিল তা টেলিগ্রাফ পূর্বে প্রতিবেদন করেছিল।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ছাত্র, সরকার সমর্থক ও সশস্ত্র পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে ১৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

প্রাণঘাতী বিক্ষোভের সময় একজন মুদি ব্যবসায়ীকে পুলিশ হত্যার ঘটনায় মিস হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যার তদন্ত শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি বা ৫৯ হাজার কোটি টাকাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ওঠা ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগে রূপপুর ছাড়াও আশ্রয়ণসহ ৮টি প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য আমলে নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রকল্পগুলোতে ২১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্ব পাঁচ সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তার বোন শেখ রেহানা ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাট করেছেন।

গত ৩ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের এসব দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। রিটে রূপপুর প্রকল্পের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রিটের বিবাদী করা হয়।

রিটের শুনানি নিয়ে এসব অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বেশ কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার লোপাট করেছেন। বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধানকারী গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পোরেশনের তথ্যের বরাত দিয়ে এসব প্রতিবেদন করা হয়।

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেয়। যাতে মধ্যস্থতা করেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক।

একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় এক হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেক বেশি। যাতে মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম। নিজের ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সময় সঙ্গী ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের দাবি, সে সময় ঢাকা-মস্কোর বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাও করেন তিনি। ২০০৯ সালে ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানি চালু করেন টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা ও চাচা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। যুক্তরাষ্ট্রেও ‘জুমানা ইনভেস্টমেন্ট’ নামে একটি কোম্পানি রয়েছে তাদের।

গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের অভিযোগ, এ কোম্পানির মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থ পাচার করতেন শেখ হাসিনা। তাদের এ কোম্পানিটি ডেসটিনি গ্রুপ নামে একটি চিটিং ফান্ড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাচার করে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৬:০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
১৩
Translate »

অর্থ আত্মসাতের তদন্তে ফেঁসে যাচ্ছেন লেবারমন্ত্রী টিউলিপ

আপডেট : ০৬:০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া তার খালাকে তহবিল চুরিতে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে

 

বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারের একটি রিপোর্ট তদন্তে একজন লেবারমন্ত্রী ধরা পড়েছেন।

হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেটের লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তার খালা, বাংলাদেশের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তহবিল আত্মসাৎ করতে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে।

লেবার পার্টির অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা অভিযোগগুলিকে “ভুয়া দাবি” হিসাবে চিহ্নিত করেছেন এবং বলেছেন যে এই বিষয়ে সিটি মন্ত্রী মিসেস সিদ্দিকের সাথে যোগাযোগ করা হয়নি।

যদি নিশ্চিত হয়, তদন্তের ফলে যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন মঙ্গলবার স্থানীয় সংবাদ আউটলেটকে বলেছে যে পরিবারটি একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং আটটি বড় মাপের প্রকল্প নির্মাণের উদ্দেশ্যে বেআইনিভাবে ৫.২ বিলিয়ন পাউন্ড চুরি করেছে এমন অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে।

সবগুলোই বাস্তবায়ন করেছে আওয়ামী লীগ, দেশের সাবেক ক্ষমতাসীন দল যা মিসেস হাসিনার নেতৃত্বে ছিল। ৭৬ বছর বয়সী, বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদী প্রধানমন্ত্রী, ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ক্ষমতাচ্যুত হয়ে এখন ভারতে রয়েছেন।

তার শাসনামলে, বিরোধীদের আক্রমণ করা হয়, গ্রেফতার করা হয় এবং গোপনে বন্দী করা হয় কারণ শাসন বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড চালায়।

এরপর থেকে একটি নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে এবং এখন প্রাক্তন শাসক ও তার পরিবারকে তদন্ত করছে।

মিসেস সিদ্দিক তদন্তের বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য টেলিগ্রাফের অনুরোধের জবাব দেননি।

তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভের পর মিস হাসিনা আগস্টে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে মিসেস সিদ্দিকের পরিবারের পশ্চাদপসরণ কীভাবে লুটপাট করা হয়েছিল তা টেলিগ্রাফ পূর্বে প্রতিবেদন করেছিল।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ছাত্র, সরকার সমর্থক ও সশস্ত্র পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে ১৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

প্রাণঘাতী বিক্ষোভের সময় একজন মুদি ব্যবসায়ীকে পুলিশ হত্যার ঘটনায় মিস হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যার তদন্ত শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি বা ৫৯ হাজার কোটি টাকাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ওঠা ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগে রূপপুর ছাড়াও আশ্রয়ণসহ ৮টি প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য আমলে নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রকল্পগুলোতে ২১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্ব পাঁচ সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তার বোন শেখ রেহানা ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাট করেছেন।

গত ৩ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের এসব দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ। রিটে রূপপুর প্রকল্পের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রিটের বিবাদী করা হয়।

রিটের শুনানি নিয়ে এসব অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ আগস্ট রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বেশ কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার লোপাট করেছেন। বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধানকারী গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পোরেশনের তথ্যের বরাত দিয়ে এসব প্রতিবেদন করা হয়।

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেয়। যাতে মধ্যস্থতা করেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক।

একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় এক হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেক বেশি। যাতে মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম। নিজের ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সময় সঙ্গী ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের দাবি, সে সময় ঢাকা-মস্কোর বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাও করেন তিনি। ২০০৯ সালে ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানি চালু করেন টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা ও চাচা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। যুক্তরাষ্ট্রেও ‘জুমানা ইনভেস্টমেন্ট’ নামে একটি কোম্পানি রয়েছে তাদের।

গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের অভিযোগ, এ কোম্পানির মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থ পাচার করতেন শেখ হাসিনা। তাদের এ কোম্পানিটি ডেসটিনি গ্রুপ নামে একটি চিটিং ফান্ড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাচার করে।