গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের প্রতি ওয়াশিংটনের ভূরাজনৈতিক সমর্থনের জানান দিতেই উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় এসেছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক থেকেও ঢাকার প্রতি উদার হতে চায় ওয়াশিংটন। এরই মধ্যে গতকাল শনিবার মার্কিন অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে দেশটির বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ঢাকায় পা রেখেছেন।
গতকাল ঢাকায় পৌঁছানোর পর মার্কিন প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠক নিয়ে মার্কিন দূতাবাস জানায়, জ্বালানি নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ডেটা সেন্টার এবং পরিবহন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। সঠিক অর্থনৈতিক সংস্কার হলে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ঢাকা ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলছিল সম্পর্কের টানাপোড়েন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই ‘বয়সসীমা’ প্রসঙ্গটি সামনে এনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ছেঁটে ফেলা হয়। এর পর তাঁকে অপসারণের মামলাটি উচ্চ আদালতে গড়ালে সেখানেও জিততে পারেননি ড. ইউনূস। তাঁকে যাতে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরানো না হয়, সে সময় শেখ হাসিনাকে ফোন করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। তবে সে অনুরোধ রাখেননি শেখ হাসিনা। তখন থেকেই দুই দেশের মধ্যে দেখা দেয় শীতল সম্পর্ক। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের আগে থেকেই দু’দেশের বৈরিতা সামনে চলে আসে।
নির্বাচনের ঠিক আগের বছর সাভারের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি ও তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডে বহু শ্রমিকের মৃত্যুর কারণে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে ওয়াশিংটন। এর পর থেকে দু’দেশের মধ্যে ‘ঠান্ডা লড়াই’ চলতে থাকে। এক পর্যায়ে ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূতরা দরপত্র প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার কারণে কাজ না পাওয়ার অভিযোগ তুলতে থাকে। পাশাপাশি মেধাস্বত্ব, তথ্য সুরক্ষা আইন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয় সামনে এনে ঢাকাকে চাপে রাখে। এ সময়ের মধ্যে ঢাকায় দুই মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হয়। সব মিলিয়ে ঢাকায় ঠিক সুবিধা করে উঠতে পারছিল না ওয়াশিংটন।
তবে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপরই তাঁর সামনে চলে আসে অনেক চ্যালেঞ্জ। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রেখে জনগণের কাঙ্ক্ষিত সংস্কারে নজর দেওয়া এর মধ্যে অন্যতম। সেই সঙ্গে ভঙ্গুর অর্থনীতির মেরুদণ্ড সোজা করাও তাঁর সামনে কঠিন আরেকটি কাজ।
আর সেসব চ্যালেঞ্জে সহযোগিতার হাত বাড়াতেই এসেছে মার্কিন এ প্রতিনিধি দল। দলটির নেতৃত্বে অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি থাকলেও রাজনৈতিক পটভূমিতে ‘মূল আকর্ষণ’ পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু’কে ঘিরে। কারণ, ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে পা রাখার আগে যৌথভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন ওয়াশিংটন-দিল্লি ২+২ প্রতিরক্ষাবিষয়ক ইন্টারসেশনাল সংলাপে। যেখানে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। তাতে ভারতের পক্ষ থেকে অন্যান্য সহযোগিতার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। ভারতের তরফ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ঢাকায় ভারতবিরোধী প্রচারণা ও জঙ্গিবাদের প্রভাব বিস্তারের মতো ইস্যু সামনে আনা হয়। তবে এখন ওয়াশিংটনের অগ্রাধিকার, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে। এ কারণে দিল্লির পক্ষ থেকে ঢাকাকে যাতে বেকায়দায় ফেলা না হয়, দেশটিকে সে বার্তাই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টেলিফোনে কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে। সে আলাপের পর মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছিলেন, বাইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে জো বাইডেন তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে কিছু বলেননি।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফর নিয়ে গেল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফরই প্রমাণ করে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের আলোচনা বহুমাত্রিক হবে। কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর সঙ্গে সংগতি রেখে বাংলাদেশও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার মতো বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে, অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ যেন আবারও ঘুরে দাঁড়ায়, উন্নয়ন অগ্রযাত্রা যাতে চলমান থাকে। তাই বাংলাদেশের বর্তমান সংকট উত্তরণের চাহিদা জানতে চাইবে ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে সামনের দিনে এসব বিষয়ে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা করবে দু’দেশ।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান। সঙ্গে থাকছেন মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর, পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু, অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্র্যান্ডন লিঞ্চসহ অন্যরা। গতকাল শনিবার প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় পৌঁছায়। আর আগামীকাল সোমবার ভোরে ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে দলটির।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস মার্কিনিদের খুবই ভালো বন্ধু। মার্কিনিরা কখনোই চাইবে না, ড. ইউনূস ব্যর্থ হোক। এ কারণে আর্থিক বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে কীভাবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেদিকে ওয়াশিংটনের জোর। তারা ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দু’দিক থেকেই সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে ঢাকায় এসেছেন।
আজ রোববার মার্কিন প্রতিনিধি দলটি সকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু করবে। এরপর একই স্থানে বৈঠক করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে দলটি। সেখানে দু’দেশের উন্নয়ন-সংক্রান্ত অনুদান চুক্তির সই হবে।
এরপর দুপুরে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে ওয়ার্কিং মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবে প্রতিনিধি দলটি। দলের একটি অংশ আজ বিকেলে ঢাকা ছাড়ার কথা। আরেকটি অংশ সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতার পাশাপাশি পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে সহায়তা করা, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করে নতুন বিনিয়োগের পথ সুগম করতে চায় তারা। এ ছাড়া কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের চাহিদাতে সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে প্রতিনিধি দলটি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকগুলোতে বর্তমান সংকটের সহযোগিতার বিষয় প্রাধান্য পাবে। মার্কিন এ সফরের মাধ্যমে আসবে তাৎক্ষণিক সহযোগিতার ২০ কোটি ডলারের একটি ঘোষণা। আর দীর্ঘ মেয়াদে সহযোগিতার বিষয়ে দলটি ওয়াশিংটন ফিরে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবে।
এদিকে সম্প্রতি দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা দূর করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী। আইএমএফ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পৃক্ততা, যুক্তরাষ্ট্র তাতে সমর্থন দেবে। আর্থিক খাতের গভীর সংস্কার, দুর্নীতি কমানো ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থার উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে চায়, তাতেও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকবে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ বাড়ানো দরকার
বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বাভাবিক ধারায় ফেরাতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। ডলার সংকটে প্রায় চার বছর ধরে কয়েকটি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে তাদের মুনাফা নিতে না পারার সমস্যার কথাও তুলে ধরেন তারা। বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিভিন্ন কোম্পানির দেশীয় প্রধানরা সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন। গতকাল রাজধানীর গুলশানে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, বিনিয়োগ পরিবেশ, ব্যাংক ও আর্থিক খাত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশ ও সরকারের কাছে পাওনা অর্থের বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
মার্কিন জ্বালানি খাতের কোম্পানি শেভরন, বীমা কোম্পানি মেটলাইফ, প্রযুক্তি কোম্পানি মাইক্রোসফট, কোমল পানীয় কোম্পানি কোকা-কোলা, বহুজাতিক আর্থিক কোম্পানি সিটি ব্যাংক এনএ, মাস্টারকার্ড, জেনারেল ইলেকট্রনিকসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশ প্রধানরা বৈঠকে অংশ নেন। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভসহ সফররত প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, প্রতিনিধি দল মূলত বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশের বিষয়ে জানতে আগ্রহী ছিল। এদেশে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো কী এবং তা থেকে উত্তরণে কী পদক্ষপে নেওয়া দরকার, তা জানতে চেয়েছেন তারা। ব্যবসায় যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে কিনা, তারা তা জানতে চেয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কী সুবিধা তৈরি হলো– এ প্রসঙ্গে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেছেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হয়রানি কিছুটা কমেছে। তবে অনেক ব্যবসায়ী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে শিল্প পুলিশকে সক্রিয় করা দরকার। এ ছাড়া বন্দরে পণ্য ওঠানামায় যে জট রয়েছে, সে ক্ষেত্রেও উন্নতি ঘটানো প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলকে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের করব্যবস্থা এমন, যারা সব নিয়ম মেনে কর দিয়ে থাকে, তাদের ওপর করের চাপ বেশি পড়ে। যেহেতু বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আইন মেনে ব্যবসা-বাণিজ্য করে, তাই তাদের ওপর করের বোঝা প্রতিবছর বাড়তেই থাকে। এ কারণে করব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন বীমা কোম্পানি মেটলাইফ চার বছরের বেশি সময় ধরে তাদের লভ্যাংশের অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে না পারার বিষয়টি তুলে ধরে হয় বৈঠকে। পাশাপাশি সরকারের কাছে পাওনা বাবদ শেভরনের বিপুল অনাদায়ী অর্থের কথাও প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়। বাংলাদেশ থেকে মুনাফা পাঠাতে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটার তরফ থেকে। ব্যবসায়ীরা জানান, এ ধরনের পরিস্থিতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা দিচ্ছে।