দুর্নীতির অভিযোগ এনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবির জাহিদকে এক অনুষ্ঠানে অবরুদ্ধ করে রাখার পর ক্যাম্পাস ছাড়া করতে বাধ্য করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ওই শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলেন। এরপরও মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা আবারও তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করেন।
এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির। ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পরও অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন এবং ড. ইকবালের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এক পর্যায়ে তিনি অনুষ্ঠান ছেড়ে নিজ বাসায় (শিক্ষকদের বাসভবন) চলে যান। এরপর শিক্ষার্থীরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগের জন্য ১৫ মিনিট সময় বেঁধে দেন। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে প্রক্টরের নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে করে ক্যাম্পাস ছাড়েন ড. ইকবাল।
এ বিষয়ে কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকা শাহানি উর্মি বলেন, আমাদের উপাচার্য যেদিন পদত্যাগ করেন তখন ড. ইকবাল কবির জাহিদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। তাকে বলা হয়েছিল তিনি যেন আর ক্যাম্পাসে প্রবেশ না করেন। তারপরেও তিনি অবাধে চলাফেরা করছিলেন। তাকে প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা একটি চিঠিও দিয়েছিলাম। তারপরও আজ অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অনুষ্ঠানে তাকে দেখে শিক্ষার্থীরা আর সহ্য করতে পারেননি। পরে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়।
যবিপ্রবির প্রক্টর ড. ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও নীল দলের সভাপতি ড. ইকবাল কবির জাহিদকে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি দিয়ে মেইন গেইট পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি। তার সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল। তিনি চলে যেতে সম্মতি জানান এবং তার কথাতেই তাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।
অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, আমার এক সহকর্মীর বিদায় অনুষ্ঠানে ছিলাম। এক পর্যায়ে কিছু শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিয়ে বের হয়ে যেতে বলেন। আমি আমার জিনিসপত্র নিয়ে চলে এসেছি।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বলেছি- সরকারি চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষকদের একটি বিধি রয়েছে। ইচ্ছা করলেই তো বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করা যায় না। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার। তবে এভাবে লাঞ্ছিত করতে আমি আমার শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেছিলাম।
প্রসঙ্গত, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ আগস্ট যবিপ্রবির ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন পদত্যাগ করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, জিনোম সেন্টারের সহকারী পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগ বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।