London ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে সাড়ে সাত বছর পর মায়ের বুকে ছেলে

অনলাইন ডেস্ক

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মাকে কাছে পেয়ে গলা জড়িয়ে ধরলেন তারেক রহমান। এসময় তারেক রহমানকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। মা-ছেলের এ মধুর মুহূর্ত এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি করে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাৎ হলো।

উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে তিনি হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান। এসময় তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জোবায়দা রহমান বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। সেখানেই তৈরি হয় এই আবেগঘন মুহূর্ত।

চিকিৎসার জন্য সবশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর তিনি আর কোনো বিদেশ সফর করেননি। এ সময়ের মধ্যে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গেও সরাসরি দেখা হয়নি তার।

বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হযরত আলী খান। তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদসহ খালেদা জিয়ার পরিবারের অন্য সদস্যরা এবং দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির দলীয় সূত্র আগেই জানিয়েছে, খালেদা জিয়াকে ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি করা হবে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর তার যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে।

হিথ্রো বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বিমানবন্দরের চতুর্থ টার্মিনালের রয়্যাল ভিভিআইপি গেট দিয়ে বের হয়ে অ্যাম্বুলেন্সে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে যাওয়ার কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার।

এর আগে মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার পর খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে রওনা হয়। রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাকে বিদায় জানাতে গুলশান থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পথে পথে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল নামে। নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে দলের চেয়ারপারসনকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান।

গাড়িতে খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ও তার স্ত্রী কানিজ ফাতিমা, প্রয়াত ভাই সাইদ ইস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন ইস্কান্দারসহ আত্মীয়স্বজনরা তাকে বিদায় জানান।

খালেদা জিয়া ফিরোজা ছাড়ার পর সেখানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘ম্যাডাম বাসা থেকে রওয়ানা হয়েছেন। তিনি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীসহ সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।’

একাধিক দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের শুরু থেকে কারাবাসে যান খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১১:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
১২
Translate »

অবশেষে সাড়ে সাত বছর পর মায়ের বুকে ছেলে

আপডেট : ১১:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মাকে কাছে পেয়ে গলা জড়িয়ে ধরলেন তারেক রহমান। এসময় তারেক রহমানকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। মা-ছেলের এ মধুর মুহূর্ত এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি করে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাৎ হলো।

উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে তিনি হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান। এসময় তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জোবায়দা রহমান বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। সেখানেই তৈরি হয় এই আবেগঘন মুহূর্ত।

চিকিৎসার জন্য সবশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর তিনি আর কোনো বিদেশ সফর করেননি। এ সময়ের মধ্যে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গেও সরাসরি দেখা হয়নি তার।

বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হযরত আলী খান। তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদসহ খালেদা জিয়ার পরিবারের অন্য সদস্যরা এবং দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির দলীয় সূত্র আগেই জানিয়েছে, খালেদা জিয়াকে ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি করা হবে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর তার যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে।

হিথ্রো বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষে বিমানবন্দরের চতুর্থ টার্মিনালের রয়্যাল ভিভিআইপি গেট দিয়ে বের হয়ে অ্যাম্বুলেন্সে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে যাওয়ার কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার।

এর আগে মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার পর খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে রওনা হয়। রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাকে বিদায় জানাতে গুলশান থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পথে পথে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল নামে। নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে দলের চেয়ারপারসনকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানান।

গাড়িতে খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন তার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ও তার স্ত্রী কানিজ ফাতিমা, প্রয়াত ভাই সাইদ ইস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন ইস্কান্দারসহ আত্মীয়স্বজনরা তাকে বিদায় জানান।

খালেদা জিয়া ফিরোজা ছাড়ার পর সেখানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘ম্যাডাম বাসা থেকে রওয়ানা হয়েছেন। তিনি আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীসহ সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।’

একাধিক দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের শুরু থেকে কারাবাসে যান খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।