London ০৬:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
ট্রাম্পের গাজা দখলের পরিকল্পনা, দেশে দেশে নিন্দার ঝড় সংস্কার কমিশনের সুপারিশ গ্রহণ করতে দেশবাসীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে আওয়ামী দোষরদের অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ও বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাব মালিথার শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত রাজমিস্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, খুনিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ফাঁসির ৯ জনসহ সব আসামি খালাস কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ নীলফামারীতে যুবককে মারধর, থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে হামলার শিকার ১৭বছর আওয়ামী সরকার আমলে ভোট-ভাতের অধিকার হরণ করেছিলেন, জিলানী শাবান মাসে রোজা রাখার গুরুত্ব

২৪ অক্টোবর থেকে কিশোরীরা পাবে জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা

জরায়ুমুখ ক্যানসার সৃষ্টিকারী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নিয়ে আলোচনা সভা। ঢাকা, ২২ অক্টোবরছবি: সংগৃহীত

নারীদের জরায়ু মুখে ক্যানসার সৃষ্টিকারী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) বিরুদ্ধে এক ডোজ টিকাই যথেষ্ট। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা ব্যতীত দেশের ৭টি বিভাগে শুরু হতে যাচ্ছে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মোট ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৫৯ কিশোরীকে বিনা মূল্যে এ টিকার আওতায় আনতে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

এ উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নেতৃত্বে এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)। এতে সহায়তা করছে ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি)।

আলোচনার শুরুতে এইচপিভি কী, কীভাবে এটি সংক্রমিত হয়ে জরায়ুমুখ ক্যানসার সৃষ্টি করে, এটি প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতা, অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকা নিবন্ধন করার উপায় সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় জানানো হয়, ১৮ দিনব্যাপী এ কর্মসূচির প্রথম দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি এবং বাকি দিনগুলোতে গ্রুপভিত্তিকভাবে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের বিনা মূল্যে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য রয়েছে।

সভায় জানানো হয়, প্রতিবছর বাংলাদেশে জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান প্রায় ৫ হাজার নারী। দেশে নারীদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যানসার এটি। এইচপিভি জীবাণু শরীরে প্রবেশের পর এর লক্ষণ প্রকাশ পেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ বছর। আক্রান্ত রোগীদের প্রায় সবাই শনাক্ত হন একদম শেষ সময়ে গিয়ে। তখন আর সেরে ওঠার উপায় থাকে না। কিন্তু, কিশোরী বয়সে মাত্র একটি টিকা নিয়ে সারা জীবনের জন্য এই ক্যানসার থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।

আলোচনা সভায় জরায়ুমুখ ক্যানসার সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন মাতৃ, নবজাতক, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য বিভাগের লাইন ডিরেক্টর মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস একটি যৌনবাহিত ভাইরাস। এই ভাইরাসের ১৩ ও ১৮ নম্বর সেলোটাইপ যৌনাঙ্গে ও জরায়ুমুখে ক্যানসার সৃষ্টি করে। নারীরা আক্রান্ত হলেও এটির বাহক মূলত পুরুষেরা। বাল্যবিবাহ, অপ্রাপ্ত বয়সে সন্তান ধারণ, বহু গর্ভধারণ, একাধিক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী জনগোষ্ঠী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধকারী বা এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি, প্রজনন সম্পর্কে অসচেতন জনগোষ্ঠী এই ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন।’

সভার সূচনা বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) শেখ সাইদুল হক বলেন, গত বছর ঢাকা বিভাগে স্কুল পর্যায়ে প্রায় ১৫ লাখের বেশি কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে কারও শরীরে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এই সাফল্যের ফলে এ বছর অন্য ৭টি বিভাগের সব জেলা, উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনের সব স্কুল ও স্কুল বহির্ভূত কিশোরীদের এই টিকা দেওয়া হবে। টিকা গ্রহণের জন্য কিশোরীরা ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে নিজেরাই নিবন্ধন করতে পারবে। এর জন্য প্রয়োজন হবে ১৭ ডিজিটের জন্মনিবন্ধন নম্বর।

টিকা নিবন্ধনে প্রয়োজনীয় জন্ম সনদ না থাকলে তা খুব অল্প সময়েই তৈরি করা যাবে বলে আশ্বাস দেন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়; জন্ম, মৃত্যু নিবন্ধন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. যাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, জন্ম সনদ না থাকলে সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে সনদ তৈরি করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যা হলে সেখানে দেওয়া দুইটি টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে। বাবা-মায়ের নাম না থাকলে অপ্রাপ্য হিসেবে জন্ম সনদ তৈরি করা যাবে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, এই উদ্যোগের বৃহত্তর লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে সম্পূর্ণভাবে জরায়ুমুখ ক্যানসার মুক্ত করা। এর জন্য এখন থেকেই সর্বজনীন জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।

পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রের জন্য এইচপিভি টিকার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপপ্রতিনিধি ডা. রাজেশ নারওয়াল বলেন, কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত হলে তো শুধু সে একা কষ্ট পায় না। তার সঙ্গে পরিবারও দুর্দশায় পড়ে। ক্যানসার হলে ব্যাপক অর্থনীতিক ক্ষতিও অনিবার্য।

এরপর মারিয়া নামের নবম শ্রেণির একটি শিক্ষার্থীর গল্প শোনান বাংলাদেশে ইউনিসেফের ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম। তিনি বলেন, ‘ছোট্ট একটি মেয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে দ্বিধায় থাকা সত্ত্বেও গত বছর সে এইচপিভি টিকা গ্রহণ করে। এখন সে তার বন্ধুদেরও এই টিকা নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেয়। আমাদের সবাইকে এভাবেই একে অপরের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সব প্রান্তের মেয়েরা নিজেরা সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যদেরও সচেতন করে তুলতে হবে।’

কোনো কিশোরী যেন টিকা থেকে বাদ না যায়, সে জন্য সার্বিক সহায়তা চেয়ে বক্তব্য দেন সভার প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ।

সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য অনুবিভাগ) মোমেনা মনি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব কানিজ মওলা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল হাকিম প্রমুখ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
২৫
Translate »

২৪ অক্টোবর থেকে কিশোরীরা পাবে জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা

আপডেট : ০৩:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

জরায়ুমুখ ক্যানসার সৃষ্টিকারী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নিয়ে আলোচনা সভা। ঢাকা, ২২ অক্টোবরছবি: সংগৃহীত

নারীদের জরায়ু মুখে ক্যানসার সৃষ্টিকারী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) বিরুদ্ধে এক ডোজ টিকাই যথেষ্ট। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা ব্যতীত দেশের ৭টি বিভাগে শুরু হতে যাচ্ছে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মোট ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৫৯ কিশোরীকে বিনা মূল্যে এ টিকার আওতায় আনতে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

এ উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নেতৃত্বে এই কর্মসূচি পরিচালনা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)। এতে সহায়তা করছে ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি)।

আলোচনার শুরুতে এইচপিভি কী, কীভাবে এটি সংক্রমিত হয়ে জরায়ুমুখ ক্যানসার সৃষ্টি করে, এটি প্রতিরোধে টিকার কার্যকারিতা, অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকা নিবন্ধন করার উপায় সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় জানানো হয়, ১৮ দিনব্যাপী এ কর্মসূচির প্রথম দুই সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি এবং বাকি দিনগুলোতে গ্রুপভিত্তিকভাবে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের বিনা মূল্যে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য রয়েছে।

সভায় জানানো হয়, প্রতিবছর বাংলাদেশে জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান প্রায় ৫ হাজার নারী। দেশে নারীদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যানসার এটি। এইচপিভি জীবাণু শরীরে প্রবেশের পর এর লক্ষণ প্রকাশ পেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ বছর। আক্রান্ত রোগীদের প্রায় সবাই শনাক্ত হন একদম শেষ সময়ে গিয়ে। তখন আর সেরে ওঠার উপায় থাকে না। কিন্তু, কিশোরী বয়সে মাত্র একটি টিকা নিয়ে সারা জীবনের জন্য এই ক্যানসার থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।

আলোচনা সভায় জরায়ুমুখ ক্যানসার সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন মাতৃ, নবজাতক, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য বিভাগের লাইন ডিরেক্টর মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস একটি যৌনবাহিত ভাইরাস। এই ভাইরাসের ১৩ ও ১৮ নম্বর সেলোটাইপ যৌনাঙ্গে ও জরায়ুমুখে ক্যানসার সৃষ্টি করে। নারীরা আক্রান্ত হলেও এটির বাহক মূলত পুরুষেরা। বাল্যবিবাহ, অপ্রাপ্ত বয়সে সন্তান ধারণ, বহু গর্ভধারণ, একাধিক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী জনগোষ্ঠী, স্বল্প রোগ প্রতিরোধকারী বা এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি, প্রজনন সম্পর্কে অসচেতন জনগোষ্ঠী এই ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন।’

সভার সূচনা বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) শেখ সাইদুল হক বলেন, গত বছর ঢাকা বিভাগে স্কুল পর্যায়ে প্রায় ১৫ লাখের বেশি কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে কারও শরীরে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এই সাফল্যের ফলে এ বছর অন্য ৭টি বিভাগের সব জেলা, উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনের সব স্কুল ও স্কুল বহির্ভূত কিশোরীদের এই টিকা দেওয়া হবে। টিকা গ্রহণের জন্য কিশোরীরা ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে নিজেরাই নিবন্ধন করতে পারবে। এর জন্য প্রয়োজন হবে ১৭ ডিজিটের জন্মনিবন্ধন নম্বর।

টিকা নিবন্ধনে প্রয়োজনীয় জন্ম সনদ না থাকলে তা খুব অল্প সময়েই তৈরি করা যাবে বলে আশ্বাস দেন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়; জন্ম, মৃত্যু নিবন্ধন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. যাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, জন্ম সনদ না থাকলে সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে সনদ তৈরি করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যা হলে সেখানে দেওয়া দুইটি টেলিফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে। বাবা-মায়ের নাম না থাকলে অপ্রাপ্য হিসেবে জন্ম সনদ তৈরি করা যাবে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, এই উদ্যোগের বৃহত্তর লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে সম্পূর্ণভাবে জরায়ুমুখ ক্যানসার মুক্ত করা। এর জন্য এখন থেকেই সর্বজনীন জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।

পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রের জন্য এইচপিভি টিকার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপপ্রতিনিধি ডা. রাজেশ নারওয়াল বলেন, কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত হলে তো শুধু সে একা কষ্ট পায় না। তার সঙ্গে পরিবারও দুর্দশায় পড়ে। ক্যানসার হলে ব্যাপক অর্থনীতিক ক্ষতিও অনিবার্য।

এরপর মারিয়া নামের নবম শ্রেণির একটি শিক্ষার্থীর গল্প শোনান বাংলাদেশে ইউনিসেফের ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম। তিনি বলেন, ‘ছোট্ট একটি মেয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে দ্বিধায় থাকা সত্ত্বেও গত বছর সে এইচপিভি টিকা গ্রহণ করে। এখন সে তার বন্ধুদেরও এই টিকা নেওয়ার জন্য উৎসাহ দেয়। আমাদের সবাইকে এভাবেই একে অপরের জন্য এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সব প্রান্তের মেয়েরা নিজেরা সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যদেরও সচেতন করে তুলতে হবে।’

কোনো কিশোরী যেন টিকা থেকে বাদ না যায়, সে জন্য সার্বিক সহায়তা চেয়ে বক্তব্য দেন সভার প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ।

সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য অনুবিভাগ) মোমেনা মনি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব কানিজ মওলা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল হাকিম প্রমুখ।