London ০৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
বৃষ্টিতে ভিজে জ্বরের আতঙ্কে আছেন? জেনে নিন বাঁচার উপায় ‘ভারতের বি দলকে হারাতেও কষ্ট হবে পাকিস্তানের’ যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে অ্যাপল সুইজার‌ল্যান্ড থেকে ৩৬ টাকা কেজিতে গম কিনছে সরকার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে জামায়াতের একাত্মতা সূর্যমুখীর হাসিতে বদলে গেলো ময়লার ভাগাড় ইউক্রেনে শান্তি আলোচনায় ইউরোপকে প্রয়োজন হবে: পুতিন ছাত্র আন্দোলনে যুগান্তরের ভূমিকা ছিল অতুলনীয় – মুনীর চৌধুরী চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি মূলহোতা আলমগীর ৬, তার ভাই রাজীব ৫ দিনের রিমান্ডে মিষ্টি জান্নাত প্রেম করতে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার গাড়ি অফার করেছিল

১১ বছর পর তোলা হলো গুলিতে নিহত তিন জামায়াত-শিবিরকর্মীর মরদেহ

অনলাইন ডেস্ক

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১১ বছর আগে ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত তিন জামায়াত ও শিবিরকর্মীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার চর হাজার, রামপুর ও চরকাঁকড়া ইউনিয়ন থেকে আদালতের নির্দেশে মরদেহগুলো তোলা হয়।

নিহত শিবিরকর্মীরা হলেন, চরহাজারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল আজিজ ওরফে রায়হান (১৮), রামপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের ছেলে সাইফুল বাবলু (২০)। তাদের মধ্যে সাইফুল বামনী ডিগ্রি কলেজের ও রায়হান বসুরহাট দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী এবং শিবিরকর্মী ছিলেন। এছাড়া বাবলু পেশায় একজন রংমিস্ত্রি ও জামায়াতকর্মী ছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী মরদেহ উত্তোলনে নেতৃত্ব দেন। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মঈনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বলেন, আদালতের নির্দেশে সকালে চর হাজারী থেকে রায়হান, দুপুর পৌনে ৩টার দিকে রামপুর থেকে সাইফুলের ও বিকেল সোয়া ৫টার দিকে চর কাঁকাড়ার বাবলুর মরদেহ তোলা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমির মাওলানা মোশাররফ হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, নিহতের স্বজন বাদি হয়ে ১১ বছর পর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা করেছেন। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনের আসামিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

২০১৩ সালে ১৪ ডিসেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। কোম্পানীগঞ্জ শাখা জামায়াতে ইসলামীর এই বিক্ষোভ মিছিলে আড়াই থেকে তিন হাজার লোক সমবেত হন। জামায়াত নেতাদের নেতৃত্বে করা বিক্ষোভ মিছিলটিতে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাদের গুলিতে জামায়াত ও শিবিরের সাতজন নেতাকর্মী নিহত হন। তাদের মধ্যে তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি চারজনের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় সে সময় কোনো মামলা হয়নি।

গত ৫ আগস্টের পর এ ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয় আদালতে। পরে আদালতের নির্দেশে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করা হয়।

মামলায় কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপ-পরিদর্শক সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস ও উক্যসিং মারমাসহ ১৯ পুলিশকেও আসামি করা হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এর আগে গত গত ১০ ডিসেম্বর উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ন হাজী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে মতিউর রহমান সজীব (১৭) নামে আরও এক শিবির কর্মীর মরদেহ তোলা হয়েছিল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:৫১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
Translate »

১১ বছর পর তোলা হলো গুলিতে নিহত তিন জামায়াত-শিবিরকর্মীর মরদেহ

আপডেট : ০৩:৫১:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ১১ বছর আগে ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত তিন জামায়াত ও শিবিরকর্মীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার চর হাজার, রামপুর ও চরকাঁকড়া ইউনিয়ন থেকে আদালতের নির্দেশে মরদেহগুলো তোলা হয়।

নিহত শিবিরকর্মীরা হলেন, চরহাজারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল আজিজ ওরফে রায়হান (১৮), রামপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের ছেলে সাইফুল বাবলু (২০)। তাদের মধ্যে সাইফুল বামনী ডিগ্রি কলেজের ও রায়হান বসুরহাট দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী এবং শিবিরকর্মী ছিলেন। এছাড়া বাবলু পেশায় একজন রংমিস্ত্রি ও জামায়াতকর্মী ছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী মরদেহ উত্তোলনে নেতৃত্ব দেন। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মঈনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বলেন, আদালতের নির্দেশে সকালে চর হাজারী থেকে রায়হান, দুপুর পৌনে ৩টার দিকে রামপুর থেকে সাইফুলের ও বিকেল সোয়া ৫টার দিকে চর কাঁকাড়ার বাবলুর মরদেহ তোলা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমির মাওলানা মোশাররফ হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, নিহতের স্বজন বাদি হয়ে ১১ বছর পর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা করেছেন। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনের আসামিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

২০১৩ সালে ১৪ ডিসেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। কোম্পানীগঞ্জ শাখা জামায়াতে ইসলামীর এই বিক্ষোভ মিছিলে আড়াই থেকে তিন হাজার লোক সমবেত হন। জামায়াত নেতাদের নেতৃত্বে করা বিক্ষোভ মিছিলটিতে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাদের গুলিতে জামায়াত ও শিবিরের সাতজন নেতাকর্মী নিহত হন। তাদের মধ্যে তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি চারজনের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় সে সময় কোনো মামলা হয়নি।

গত ৫ আগস্টের পর এ ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয় আদালতে। পরে আদালতের নির্দেশে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করা হয়।

মামলায় কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপ-পরিদর্শক সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস ও উক্যসিং মারমাসহ ১৯ পুলিশকেও আসামি করা হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এর আগে গত গত ১০ ডিসেম্বর উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ন হাজী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে মতিউর রহমান সজীব (১৭) নামে আরও এক শিবির কর্মীর মরদেহ তোলা হয়েছিল।