London ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
পটুয়াখালীতে নিরাপত্তা জোরদারে ডিআইজি’র আকস্মিক থানা পরিদর্শন রাজশাহীতে পুরোহিতকে মারধর মেডিকেল ক্যাম্প–রক্তদানে ব্যতিক্রমী আয়োজন, পালিত হলো প্রেসক্লাব আলফাডাঙ্গার ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিনব্যাপী সেবামূলক কার্যক্রমে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন ভাই আজাদসহ দুই স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকচালক নিহত রাজশাহীতে চলছে ট্রাফিক সপ্তাহ ২০২৫ কালিয়াকৈর ৫ নং ওয়ার্ড পৌর বি এন পির নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা ও মতবিনিময় বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণ: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক রায়ের প্রতিবাদে লন্ডনে প্রবাসীদের গণজমায়েত রাজশাহীতে চলছে উদ্যোক্তা মেলা গাজীপুর-১ আসন কালিয়াকৈরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর

শিক্ষার্থীদের দাবি অযৌক্তিক, ১০ এপ্রিল থেকেই এসএসসি পরীক্ষা

অনলাইন ডেস্ক:

আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এক মাস পেছানোর দাবি জানিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। এই দাবি পুরণ না হলে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তারা। তবে তাদের এ দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক মনে করছেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে জুন মাসের এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। এ পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। তাই, চাইলেও পরীক্ষার পেছানো সুযোগ নেই। অভিভাবকরাও পরীক্ষা পেছানোর বিপক্ষে।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার‌ সমকালকে বলেন, ইতোমধ্যে পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ। সব কেন্দ্রে পরীক্ষার সরঞ্জামাদিও পাঠানো হয়েছে। এই মুহূর্তে পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।

‘পরীক্ষা পেছানোর যেসব দাবি শিক্ষার্থীরা করেছে, সেগুলোর কোনোটারই যৌক্তিকতা নেই। তাদের এসব দাবি আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবেও জানানো হয়নি।’- যোগ করেন এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার‌। তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে প্রায় সব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার পক্ষে। শিক্ষার্থী নামধারী কিছু কিছু ব্যক্তি ফেসবুকের মাধ্যমে পরীক্ষা পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে।

সব পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এসব গুজবে কান না দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানান এ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ১০ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে, সে ঘোষণা আরও ৮-৯ মাস আগে দেওয়া হয়। সে মোতাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি গ্রহণ করে। পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে পরীক্ষার পেছানোর দাবি শুধু অযৌক্তিক নয়; এটা পরীক্ষা বানচালেরও ষড়যন্ত্র।

তারা আরও বলেন, দেশে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অস্থিরতা তৈরি না হলে সাধারণত পরীক্ষার পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলে পরীক্ষা পেছানোসহ দুই দফা দাবি তুলে ধরেন একদল শিক্ষার্থী। তাদের দাবিগুলো হলো- পরীক্ষা এক মাস পেছানো এবং সব পরীক্ষায় ৩ থেকে ৪ দিন বন্ধ দেওয়া।

তারা দাবির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, রমজান মাসে রোজা রেখে ভালোভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া ঈদের পরপরই পরীক্ষা হওয়ায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই, এক মাস সময় দিলে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।

অভিভাবকরা বললেন, দাবি অযৌক্তিক: এসএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে দাবি করেছে অভিভাবকদের সংগঠন অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।

ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু ও সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) এক যুক্ত বিবৃতিতে  সরকারঘোষিত ১০ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী নিধারিত তারিখে যথাযথ সময়ে আয়োজন করার দাবি জানান।

নেতৃদ্বয় বলেন, বারে বারে পরীক্ষার তারিখ ও রুটিন পরিবর্তন করলে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং এর ফলে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হতে বাধ্য। কতিপয় শিক্ষার্থী পরীক্ষা পেছানোর জন্য অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক দাবি নিয়ে তথাকথিত অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। তা, প্রত্যাহার করে পরীক্ষার্থীদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরে গিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান এই অভিভাবক নেতারা।

তারা আরও বলেন, করোনাকালে ও ফ্যাসিস্ট সরকার উৎখাতের আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই লেখাপড়ার ঘাটতি পোষানোর কোনো ব্যবস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয় নেয়নি।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি শিক্ষা উপযোগী হওয়ায় দ্রুত সময়ে সিলেবাস শেষ করে পূর্বের নির্ধারিত তারিখে পরবর্তী সব এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের পদক্ষেপ নেবে। প্রকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া  আর কখনোই যাতে কোনো পাবলিক পরীক্ষা পেছানো না হয়; সে বিষয়ে শিক্ষাবোর্ডের পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। পরীক্ষা যতবার পেছনো হয়; অভিভাবকদের তত আর্থিক কষ্ট হয়, এটা শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যক্তির উপলব্ধি করতে হবে। খোঁড়া যুক্তিতে কোনোভাবেই এসএসসি পরীক্ষা পেছানো যাবে না মর্মে নেতৃদ্বয় অভিমত দেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০১:৩৯:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫
১০২
Translate »

শিক্ষার্থীদের দাবি অযৌক্তিক, ১০ এপ্রিল থেকেই এসএসসি পরীক্ষা

আপডেট : ০১:৩৯:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫

আগামী ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এক মাস পেছানোর দাবি জানিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। এই দাবি পুরণ না হলে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে তারা। তবে তাদের এ দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক মনে করছেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে জুন মাসের এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে। এ পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। তাই, চাইলেও পরীক্ষার পেছানো সুযোগ নেই। অভিভাবকরাও পরীক্ষা পেছানোর বিপক্ষে।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার‌ সমকালকে বলেন, ইতোমধ্যে পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ। সব কেন্দ্রে পরীক্ষার সরঞ্জামাদিও পাঠানো হয়েছে। এই মুহূর্তে পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।

‘পরীক্ষা পেছানোর যেসব দাবি শিক্ষার্থীরা করেছে, সেগুলোর কোনোটারই যৌক্তিকতা নেই। তাদের এসব দাবি আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবেও জানানো হয়নি।’- যোগ করেন এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার‌। তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে প্রায় সব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার পক্ষে। শিক্ষার্থী নামধারী কিছু কিছু ব্যক্তি ফেসবুকের মাধ্যমে পরীক্ষা পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে।

সব পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এসব গুজবে কান না দিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানান এ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ১০ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে, সে ঘোষণা আরও ৮-৯ মাস আগে দেওয়া হয়। সে মোতাবেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি গ্রহণ করে। পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে পরীক্ষার পেছানোর দাবি শুধু অযৌক্তিক নয়; এটা পরীক্ষা বানচালেরও ষড়যন্ত্র।

তারা আরও বলেন, দেশে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অস্থিরতা তৈরি না হলে সাধারণত পরীক্ষার পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলে পরীক্ষা পেছানোসহ দুই দফা দাবি তুলে ধরেন একদল শিক্ষার্থী। তাদের দাবিগুলো হলো- পরীক্ষা এক মাস পেছানো এবং সব পরীক্ষায় ৩ থেকে ৪ দিন বন্ধ দেওয়া।

তারা দাবির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, রমজান মাসে রোজা রেখে ভালোভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া ঈদের পরপরই পরীক্ষা হওয়ায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই, এক মাস সময় দিলে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।

অভিভাবকরা বললেন, দাবি অযৌক্তিক: এসএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে দাবি করেছে অভিভাবকদের সংগঠন অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।

ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু ও সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) এক যুক্ত বিবৃতিতে  সরকারঘোষিত ১০ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা রুটিন অনুযায়ী নিধারিত তারিখে যথাযথ সময়ে আয়োজন করার দাবি জানান।

নেতৃদ্বয় বলেন, বারে বারে পরীক্ষার তারিখ ও রুটিন পরিবর্তন করলে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং এর ফলে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হতে বাধ্য। কতিপয় শিক্ষার্থী পরীক্ষা পেছানোর জন্য অগ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক দাবি নিয়ে তথাকথিত অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। তা, প্রত্যাহার করে পরীক্ষার্থীদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরে গিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান এই অভিভাবক নেতারা।

তারা আরও বলেন, করোনাকালে ও ফ্যাসিস্ট সরকার উৎখাতের আন্দোলনে ছাত্রছাত্রীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই লেখাপড়ার ঘাটতি পোষানোর কোনো ব্যবস্থা শিক্ষা মন্ত্রণালয় নেয়নি।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি শিক্ষা উপযোগী হওয়ায় দ্রুত সময়ে সিলেবাস শেষ করে পূর্বের নির্ধারিত তারিখে পরবর্তী সব এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের পদক্ষেপ নেবে। প্রকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া  আর কখনোই যাতে কোনো পাবলিক পরীক্ষা পেছানো না হয়; সে বিষয়ে শিক্ষাবোর্ডের পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। পরীক্ষা যতবার পেছনো হয়; অভিভাবকদের তত আর্থিক কষ্ট হয়, এটা শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যক্তির উপলব্ধি করতে হবে। খোঁড়া যুক্তিতে কোনোভাবেই এসএসসি পরীক্ষা পেছানো যাবে না মর্মে নেতৃদ্বয় অভিমত দেন।