London ০৭:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
মেডিকেলে ভর্তির টাকা এখনো জোগাড় হয়নি ইমার যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেশার কুকারে রান্না করলেন সাবেক সৈনিক খোলাবাজার থেকে ১০ হাজার বিনামূল্যের পাঠ্যবই জব্দ, গ্রেপ্তার ২ শেরপুরে মাধ্যমিকের ৯ হাজার সরকারি বই জব্দ! আটক ১ মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ডাক্তারী লেখা পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রান্তি ও পরিবার খাগড়াছড়িতে একক আধিপত্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার, গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ নোয়াখালীতে শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই ১১ দোকান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে : ইসি মাছউদ নায়িকা নিঝুমকে অপহরণের চেষ্টা, গাড়ি থেকে লাফিয়ে রক্ষা

রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের হাসিমুখে বরণ করুন: রাষ্ট্রদূত মুশফিক

অনলাইন ডেস্ক

অতীতে দূতাবাসে সেবা নিতে আসা বাংলাদেশিরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। এখন থেকে দূতাবাসে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভালো ব‍্যবহার পাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

দূতাবাসে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের চৌকস কর্মীবাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের রেমিট্যান্সযোদ্ধারা প্রয়োজনে দূতাবাসে এলে একটি গোলাপ দিয়ে বরণ করতে না পারলেও অন্তত একটা স্মিত হাসি দিয়ে বরণ করুন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুধু স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম ছিল না, এটি ছিল আমাদের পরিচয়, মর্যাদা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। আমাদের বিজয় কেউ উপঢৌকন হিসেবে তুলে দেয়নি বরং আমাদের অর্জন করতে হয়েছে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ২০২৪ এর জুলাইয়ের সফল বিপ্লব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই কখনোই শেষ হয় না। ১৯৭১ সালে আমরা বাইরের শোষণের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম; চব্বিশের জুলাইয়ে আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি।

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে মুশফিক বলেন, আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজ আমরা গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং শান্তির প্রতি যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করি। আমরা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও অটুট করার অঙ্গীকার করছি।

নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম স্বাগত বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘ সংগ্রাম ও যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে। বিপ্লব পরবর্তী বিজয়ের উদযাপনেও এসেছে ভিন্ন মাত্রা। প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে চলেছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত সিয়াম। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রিক অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চিউলিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সকল সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানায়। বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পেছনে যে ত‍্যাগ এবং সংগ্রাম তা পৃথিবীতে এক অনন্য নজির।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক এবং সমৃদ্ধ দেশ দেখতে চায়- উল্লেখ করে এই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে বৃহত্তম অংশীদার হতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পাশে আছে এবং গণতন্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সংস্কার কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ায় সরকারের পদক্ষেপকে দেশটি স্বাগত জানায়।

সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে প্রফেসর ইউনূসের ফলপ্রসূ বৈঠকের কথা উল্লেখ করে নিকোল বলেন, অভিন্ন স্বার্থ রক্ষায় দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রমবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনিকা জেকবসেন, রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরিচালকসহ অনেকেই।

বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির উপস্থিতিতে এসময় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:৪৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
১৮
Translate »

রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের হাসিমুখে বরণ করুন: রাষ্ট্রদূত মুশফিক

আপডেট : ০৩:৪৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

অতীতে দূতাবাসে সেবা নিতে আসা বাংলাদেশিরা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। এখন থেকে দূতাবাসে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভালো ব‍্যবহার পাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

দূতাবাসে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের চৌকস কর্মীবাহিনী হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের রেমিট্যান্সযোদ্ধারা প্রয়োজনে দূতাবাসে এলে একটি গোলাপ দিয়ে বরণ করতে না পারলেও অন্তত একটা স্মিত হাসি দিয়ে বরণ করুন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুধু স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম ছিল না, এটি ছিল আমাদের পরিচয়, মর্যাদা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। আমাদের বিজয় কেউ উপঢৌকন হিসেবে তুলে দেয়নি বরং আমাদের অর্জন করতে হয়েছে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ২০২৪ এর জুলাইয়ের সফল বিপ্লব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াই কখনোই শেষ হয় না। ১৯৭১ সালে আমরা বাইরের শোষণের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম; চব্বিশের জুলাইয়ে আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি।

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে মুশফিক বলেন, আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আজ আমরা গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং শান্তির প্রতি যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করি। আমরা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও অটুট করার অঙ্গীকার করছি।

নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম স্বাগত বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘ সংগ্রাম ও যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে। বিপ্লব পরবর্তী বিজয়ের উদযাপনেও এসেছে ভিন্ন মাত্রা। প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে চলেছে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত সিয়াম। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রিক অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চিউলিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সকল সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানায়। বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের পেছনে যে ত‍্যাগ এবং সংগ্রাম তা পৃথিবীতে এক অনন্য নজির।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক এবং সমৃদ্ধ দেশ দেখতে চায়- উল্লেখ করে এই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে বৃহত্তম অংশীদার হতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পাশে আছে এবং গণতন্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সংস্কার কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ায় সরকারের পদক্ষেপকে দেশটি স্বাগত জানায়।

সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সাথে প্রফেসর ইউনূসের ফলপ্রসূ বৈঠকের কথা উল্লেখ করে নিকোল বলেন, অভিন্ন স্বার্থ রক্ষায় দুই দেশের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রমবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনিকা জেকবসেন, রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরিচালকসহ অনেকেই।

বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির উপস্থিতিতে এসময় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা।