রসিকের সাবেক মেয়রের পি, এস, টিটু গ্রেপ্তার

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নওগাঁর বদলগাছীতে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বাড়িতে লুকিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার (৯ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ওই বাড়ি থেকে তিনি গ্রেফতার হন।
পুলিশ জানিয়েছে, বদলগাছি উপজেলার চাকরাইল চৌধুরীপাড়া গ্রামে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাগর চৌধুরীর বাসায় পাওয়া গেছে টিটুকে। এ সময় টিটুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাগর চৌধুরীকেও নেওয়া হয়েছে পুলিশ হেফাজতে। তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রেফতার আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি রাজশাহীর রাণীবাজার চিনিপট্টি মহল্লায়।
টিটু রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সেকশন অফিসার হলেও দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ছুটি ছাড়াই মেয়র লিটনের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং এই সময় দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই বেতন গ্রহণ করেছেন। টিটুর বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট দুই হাতে পিস্তল নিয়ে ছাত্র ও জনতার ওপর গুলি চালিয়ে ভাইরাল হওয়া সন্ত্রাসী জহিরুল হক রুবেল এই টিটুর বন্ধু। রুবেলকে নিয়ে কিশোর গ্যাং লালন, জমি দখল ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে টিটুর বিরুদ্ধে। এসব কারণে লিটন মেয়র থাকাকালেই তাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন টিটু।
স্থানীয়রা জানান, টিটুকে আশ্রয় দেওয়া বিএনপি নেতা সাগর চৌধুরী নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি। সাগর চৌধুরী সাবেক ডেপুটি স্পিকার আক্তার হামিদ সিদ্দিকীর ছেলে বিএনপি নেতা আরেফিন সিদ্দিকী জনির অনুসারী। জনি মহাদেবপুর-বদলগাছি আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।
বদলগাছি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম সময়ের আলোকে জানান, সাগর চৌধুরী ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবে শুনলাম তিনি আগে থেকেই দল থেকে বহিষ্কৃত। তার বাড়ি থেকেই টিটুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। টিটুকে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। সাগরও এখনো পুলিশ হেফাজতে আছেন।
নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার সময়ের আলোকে বলেন, সাগর চৌধুরী কেন টিটুকে আশ্রয় দিয়েছিলেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ জানান, গত ৫ আগস্ট রাজশাহীতে চলমান আন্দোলনের সময় নিহত সাকিব আনজুম হত্যা মামলার আসামি টিটু। এছাড়া ছাত্র ও জনতার ওপর হামলার একটি মামলারও এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।
বদলগাছী থানা তাকে হস্তান্তর করলে ওই দুই মামলায়ও টিটুকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা । টিটুর নামে আরও মামলা আছে কিনা সেটাও তদন্ত করা হচ্ছে ।