London ১২:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর তাণ্ডবে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে মিসৌরিতেই ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। টর্নেডোতে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। খবর বিবিসির।

এ ছাড়া কানসাসে ৫৫টিরও বেশি গাড়ির সংঘর্ষে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। প্রচণ্ড ধুলিঝড়ের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যা পর্যন্ত মিশিগান, মিসৌরি এবং ইলিনয়সহ পাঁচটি রাজ্যে এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি বাড়িঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।

মিসিসিপির গভর্নর টেট রিভস জানিয়েছেন, তার রাজ্যে ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং একাধিক টর্নেডো বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আঘাত হেনেছে।

এ ছাড়া, আলাবামা, লুইজিয়ানা, টেনেসি ও আরকানসাসে আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা (এনডব্লিউএস) সতর্ক করে বলেছে, ‘একাধিক শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী টর্নেডো আঘাত হানতে পারে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি।’

আলাবামার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বহু টর্নেডোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

মিসৌরির গভর্নর মাইক কেহো জানিয়েছেন, ‘এই রাজ্য ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে, বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, ১৯টি টর্নেডো এখন পর্যন্ত ২৫টি কাউন্টিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এদিকে, আরকানসাসে তিনজন নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজ্যের গভর্নর সারা হাকাবি স্যান্ডার্স জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।

জর্জিয়া ও ওকলাহোমার গভর্নররাও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।

অপরদিকে, টেক্সাসের ধূলিঝড়ে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৮টি গাড়ি একসঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটি আমার দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ধুলিঝড় থামার পর বোঝা গেছে গাড়িগুলো একসঙ্গে জড়ো হয়েছিল।’

টর্নেডোর পাশাপাশি, ওকলাহোমাসহ কয়েকটি রাজ্যে ১০০টিরও বেশি দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে।

ওকলাহোমায় ‘৮৪০ রোড ফায়ার’ নামে একটি ভয়াবহ দাবানলে ইতোমধ্যে ২৭ হাজার ৫০০ একর জমি পুড়ে গেছে এবং তা এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

রাজ্যের বন বিভাগ ‘রেড ফ্ল্যাগ’ সতর্কতা জারি করেছে, যা চরম অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের যে চারটি রাজ্যে টর্নেডোর কারণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো ‘টর্নেডো অ্যালি’ নামে পরিচিত। এখানকার ভৌগোলিক অবস্থান টর্নেডো তৈরির জন্য উপযুক্ত হওয়ায় প্রায়ই এমন দুর্যোগ দেখা যায়।

২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ৫৪ জন টর্নেডোতে প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে টেক্সাসে ৯ জন, ওকলাহোমায় ৮ জন, আরকানসাসে ৫ জন এবং মিসৌরিতে ১ জন নিহত হয়েছেন।

মে-জুন মাসকে সাধারণত টর্নেডোর মৌসুম ধরা হলেও আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, ‘টর্নেডো যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৭:৪৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
১৫
Translate »

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর তাণ্ডবে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪

আপডেট : ০৭:৪৯:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে মিসৌরিতেই ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। টর্নেডোতে বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। খবর বিবিসির।

এ ছাড়া কানসাসে ৫৫টিরও বেশি গাড়ির সংঘর্ষে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। প্রচণ্ড ধুলিঝড়ের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যা পর্যন্ত মিশিগান, মিসৌরি এবং ইলিনয়সহ পাঁচটি রাজ্যে এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি বাড়িঘর বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।

মিসিসিপির গভর্নর টেট রিভস জানিয়েছেন, তার রাজ্যে ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং একাধিক টর্নেডো বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আঘাত হেনেছে।

এ ছাড়া, আলাবামা, লুইজিয়ানা, টেনেসি ও আরকানসাসে আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা (এনডব্লিউএস) সতর্ক করে বলেছে, ‘একাধিক শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী টর্নেডো আঘাত হানতে পারে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি।’

আলাবামার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বহু টর্নেডোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

মিসৌরির গভর্নর মাইক কেহো জানিয়েছেন, ‘এই রাজ্য ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে, বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, ১৯টি টর্নেডো এখন পর্যন্ত ২৫টি কাউন্টিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এদিকে, আরকানসাসে তিনজন নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজ্যের গভর্নর সারা হাকাবি স্যান্ডার্স জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।

জর্জিয়া ও ওকলাহোমার গভর্নররাও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।

অপরদিকে, টেক্সাসের ধূলিঝড়ে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৮টি গাড়ি একসঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটি আমার দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ধুলিঝড় থামার পর বোঝা গেছে গাড়িগুলো একসঙ্গে জড়ো হয়েছিল।’

টর্নেডোর পাশাপাশি, ওকলাহোমাসহ কয়েকটি রাজ্যে ১০০টিরও বেশি দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে।

ওকলাহোমায় ‘৮৪০ রোড ফায়ার’ নামে একটি ভয়াবহ দাবানলে ইতোমধ্যে ২৭ হাজার ৫০০ একর জমি পুড়ে গেছে এবং তা এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

রাজ্যের বন বিভাগ ‘রেড ফ্ল্যাগ’ সতর্কতা জারি করেছে, যা চরম অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের যে চারটি রাজ্যে টর্নেডোর কারণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো ‘টর্নেডো অ্যালি’ নামে পরিচিত। এখানকার ভৌগোলিক অবস্থান টর্নেডো তৈরির জন্য উপযুক্ত হওয়ায় প্রায়ই এমন দুর্যোগ দেখা যায়।

২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ৫৪ জন টর্নেডোতে প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে টেক্সাসে ৯ জন, ওকলাহোমায় ৮ জন, আরকানসাসে ৫ জন এবং মিসৌরিতে ১ জন নিহত হয়েছেন।

মে-জুন মাসকে সাধারণত টর্নেডোর মৌসুম ধরা হলেও আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, ‘টর্নেডো যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে।