London ০১:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপি নেতার নির্যাতনে রাজমিস্ত্রীর মৃত্যু 

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিএনপি নেতার নির্যাতনে মো. ইসরাফিল (২৪) নামে এক রাজমিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মসজিদের ব্যাটারি চুরির অপবাদে তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে কোমর ও হাত-পায়ে রশি দিয়ে বেঁধে গায়ে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা কামরুল হাসান লিটনের বিরুদ্ধে।

উপজেলার বাঁশবাড়ি এলাকায় নির্মম এ ঘটনার শিকার ইসরাফিল টানা ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

গত ১৩ সেপ্টেম্বর বাঁশবাড়ি গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে রাজমিস্ত্রী ইসরাফিলের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় স্থানীয় বিএনপি নেতা কামরুল হাসান লিটন ও তার সহযোগীরা। জানা যায়, লিটনের নেতৃত্বে ইসরাফিলের দুই পা ভেঙে শরীরে ঢেলে দেওয়া হয় ফুটন্ত পানি। অভিযুক্ত ওই বিএনপি নেতা বর্তমানে পলাতক আছেন।

অভিযুক্ত লিটন পার্শ্ববর্তী শৈলাট গ্রামের প্রয়াত মনির উদ্দিনের ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় রাজমিস্ত্রি ইসরাফিলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় লিটন ও তার লোকজন। পরে স্থানীয় স্কুল মাঠে নিয়ে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়। তারপর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকা ইসরাফিলের কোমরের নিচে ফুটন্ত পানি ঢেলে দেওয়া হয়। এরফলে তার পায়ের পাতা থেকে কোমর পর্যন্ত ঝলসে যায়। 

খবর পেয়ে ইসরাফিলের বাবা নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। যন্ত্রণায় কাতর ছেলেকে হাসপাতালেও নিতে দিচ্ছিল না তারা। একপর্যায়ে বিএনপি নেতা লিটনকে নন জুডিশিয়াল সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে গুরুতর অবস্থায় ছেলেকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। 

নাসির বলেন, আমার ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। ঘটনার দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পরপরই লিটন ও তার লোকজন ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে আমার ছেলেকে নির্যাতন করে। শেষ পর্যন্ত ছেলেটাকে আর বাঁচানোই গেলো না।

স্থানীয়রা বলেন, এলাকার মসজিদ ও বিভিন্ন বাড়ি থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হচ্ছিল। এই চুরি দায় ইসরাফিলের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের বাবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৬:৪৮:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫৪
Translate »

বিএনপি নেতার নির্যাতনে রাজমিস্ত্রীর মৃত্যু 

আপডেট : ০৬:৪৮:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিএনপি নেতার নির্যাতনে মো. ইসরাফিল (২৪) নামে এক রাজমিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মসজিদের ব্যাটারি চুরির অপবাদে তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে কোমর ও হাত-পায়ে রশি দিয়ে বেঁধে গায়ে গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা কামরুল হাসান লিটনের বিরুদ্ধে।

উপজেলার বাঁশবাড়ি এলাকায় নির্মম এ ঘটনার শিকার ইসরাফিল টানা ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন। পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

গত ১৩ সেপ্টেম্বর বাঁশবাড়ি গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে রাজমিস্ত্রী ইসরাফিলের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় স্থানীয় বিএনপি নেতা কামরুল হাসান লিটন ও তার সহযোগীরা। জানা যায়, লিটনের নেতৃত্বে ইসরাফিলের দুই পা ভেঙে শরীরে ঢেলে দেওয়া হয় ফুটন্ত পানি। অভিযুক্ত ওই বিএনপি নেতা বর্তমানে পলাতক আছেন।

অভিযুক্ত লিটন পার্শ্ববর্তী শৈলাট গ্রামের প্রয়াত মনির উদ্দিনের ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় রাজমিস্ত্রি ইসরাফিলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় লিটন ও তার লোকজন। পরে স্থানীয় স্কুল মাঠে নিয়ে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়। তারপর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকা ইসরাফিলের কোমরের নিচে ফুটন্ত পানি ঢেলে দেওয়া হয়। এরফলে তার পায়ের পাতা থেকে কোমর পর্যন্ত ঝলসে যায়। 

খবর পেয়ে ইসরাফিলের বাবা নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। যন্ত্রণায় কাতর ছেলেকে হাসপাতালেও নিতে দিচ্ছিল না তারা। একপর্যায়ে বিএনপি নেতা লিটনকে নন জুডিশিয়াল সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে গুরুতর অবস্থায় ছেলেকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। 

নাসির বলেন, আমার ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। ঘটনার দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পরপরই লিটন ও তার লোকজন ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে আমার ছেলেকে নির্যাতন করে। শেষ পর্যন্ত ছেলেটাকে আর বাঁচানোই গেলো না।

স্থানীয়রা বলেন, এলাকার মসজিদ ও বিভিন্ন বাড়ি থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হচ্ছিল। এই চুরি দায় ইসরাফিলের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের বাবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।