London ১২:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়ির আঙিনা থেকে ডেকে এনে ছাত্রদল নেতাকে গুলি করে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, এলাকার আধিপত্য ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নরসিংদীর মেহেরপাড়ায় এক ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নরসিংদীর পাঁচদোনা মেহেরপাড়ার বাড়ির আঙিনার ব্যাডমিন্টন খেলার কোট থেকে তাকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

নিহত হুমায়ুন কবির (২৬) মেহেরপাড়া ইউনিয়নের নাগরারহাট এলাকার একরামুল হকের ছেলে। তিনি মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য।

নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, এলাকার আধিপত্য ও জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একই এলাকার বাদল মিয়া, শাহআলম ও আতাউর মেম্বারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল তার। দ্বন্দ্বের জেরে তাদের মধ্যে একাধিক মামলা মোকদ্দার ঘটনাও ঘটে। শনিবার রাতে হুমায়ুন বাড়ির পাশের আঙিনায় ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। রাত ১২টার দিকে দুইটি মোটরসাইকেলে শাহ আলম ও টিপুসহ ৪ জন হুমায়ুনের বাড়ির সামনে আসেন। ওই সময় তারা হুমায়ুনকে খেলা থেকে ডেকে পাঁচদোনা বাজার মাছের আড়ত মসজিদের দিকে নিয়ে যান। সেখানে সন্ত্রাসীরা তার বুকে, পিঠে ও ঘাড়ে ৩টি গুলি করে। গুলির শব্দ শুনে লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে তারা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় হুমায়ুনকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত হুমায়ুনের বন্ধু ও মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক সুজন ভূইয়া বলেন, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল হুমায়ুনের। তার নেতৃত্বেই পাচঁদোনা মেহেরপাড়া ও মাধবদীতে আন্দোলন হয়েছিল। এসব ঘটনা নিয়ে তিনি এলাকার অনেকের রোষানলে পড়েন। এসবের জের ধরে তার বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গতকাল তাকে বাড়ির আঙিনা থেকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করে। দুইটি মোটরসাইকেলে ৪ জন আসে। এরমধ্যে দুই জনকে চেনা গেছে।

নিহতের বড় ভাই আল মামুন বলেন, আমাদের ১৭ শতাংশের একটি জমি দখল করে নেয় বাদল মিয়ারা। পরে মামলার রায় পাওয়ার পর আমার জামিটি দখলে নিই। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। এরই জের ধরে তারা আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। এছাড়া স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এসব নিয়ে অনেকে তাকে দমানোর চেষ্টা করছিল।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো পূর্বশত্রুতার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ হত্যাকারীদের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৫:৪৯:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
১৬
Translate »

বাড়ির আঙিনা থেকে ডেকে এনে ছাত্রদল নেতাকে গুলি করে হত্যা

আপডেট : ০৫:৪৯:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, এলাকার আধিপত্য ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নরসিংদীর মেহেরপাড়ায় এক ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নরসিংদীর পাঁচদোনা মেহেরপাড়ার বাড়ির আঙিনার ব্যাডমিন্টন খেলার কোট থেকে তাকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

নিহত হুমায়ুন কবির (২৬) মেহেরপাড়া ইউনিয়নের নাগরারহাট এলাকার একরামুল হকের ছেলে। তিনি মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য।

নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, এলাকার আধিপত্য ও জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একই এলাকার বাদল মিয়া, শাহআলম ও আতাউর মেম্বারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল তার। দ্বন্দ্বের জেরে তাদের মধ্যে একাধিক মামলা মোকদ্দার ঘটনাও ঘটে। শনিবার রাতে হুমায়ুন বাড়ির পাশের আঙিনায় ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। রাত ১২টার দিকে দুইটি মোটরসাইকেলে শাহ আলম ও টিপুসহ ৪ জন হুমায়ুনের বাড়ির সামনে আসেন। ওই সময় তারা হুমায়ুনকে খেলা থেকে ডেকে পাঁচদোনা বাজার মাছের আড়ত মসজিদের দিকে নিয়ে যান। সেখানে সন্ত্রাসীরা তার বুকে, পিঠে ও ঘাড়ে ৩টি গুলি করে। গুলির শব্দ শুনে লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে তারা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় হুমায়ুনকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত হুমায়ুনের বন্ধু ও মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক সুজন ভূইয়া বলেন, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল হুমায়ুনের। তার নেতৃত্বেই পাচঁদোনা মেহেরপাড়া ও মাধবদীতে আন্দোলন হয়েছিল। এসব ঘটনা নিয়ে তিনি এলাকার অনেকের রোষানলে পড়েন। এসবের জের ধরে তার বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গতকাল তাকে বাড়ির আঙিনা থেকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করে। দুইটি মোটরসাইকেলে ৪ জন আসে। এরমধ্যে দুই জনকে চেনা গেছে।

নিহতের বড় ভাই আল মামুন বলেন, আমাদের ১৭ শতাংশের একটি জমি দখল করে নেয় বাদল মিয়ারা। পরে মামলার রায় পাওয়ার পর আমার জামিটি দখলে নিই। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। এরই জের ধরে তারা আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। এছাড়া স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এসব নিয়ে অনেকে তাকে দমানোর চেষ্টা করছিল।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো পূর্বশত্রুতার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ হত্যাকারীদের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ।