London ১১:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুড়িয়ে দেয়া হলো আবু সাঈদের ফেস্টুন, জামায়াতের অফিসে হামলা-ভাঙচুর

অনলাইন ডেস্ক

আধিপত্য বিস্তারের জেরে পাবনা সদর উপজেলায় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা- ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় একটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

সেই সঙ্গে জামায়াত সমর্থক কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ছাত্র আন্দোলনে শহিদ আবু সাইদ ও জাহিদুলের ইসলামের ফেস্টুন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা নাগাদ সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ী এলাকার তিন নাম্বার ওয়ার্ড জামায়াতের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাতজনকে অভিযুক্ত করে পাবনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন- মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, পাবনা সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবির হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি উজ্জ্বল হোসেনসহ সাতজন। অজ্ঞাতনামা অনেকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ১০টার দিকে মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী পিস্তল, বন্দুক, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ি এলাকায় স্থানীয় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে।

এ সময় হামলাকারীরা একটি মুদিখানা দোকান ভাঙচুর ও একটি অটোরিকশার গ্যারেজ ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পাশে থাকা একটি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর তারা স্থানীয় বাসিন্দা পাবনা পৌর জামায়াতের ইঞ্জিনিয়ার ফোরামের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ করিমসহ বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ আবু সাঈদ ও জাহিদুল ইসলামের ফেস্টুন পুড়িয়ে দেয়া হয় হামলাকারীরা।

ভুক্তভোগী জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ করিমের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি নেতা ইয়াকুব আলী, মাহমুদুল হাসান, আবির হোসেনসহ বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা দখলদারিত্ব, আধিপত্য বিস্তার, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। তারই ধারাবাহিতকতায় আমাদের অফিসে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবর্ষণ করেছে। সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।’

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি মোটেও জড়িত নই। যখন এ ঘটনা ঘটে তখন থানার ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। এর বেশি কিছু নয়।’

পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, ‘জমিজমা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি ঝামেলা চলে আসছিল কয়েকদিন ধরে। শনিবার রাতে দোকান ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৫:৫৮:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
২২
Translate »

পুড়িয়ে দেয়া হলো আবু সাঈদের ফেস্টুন, জামায়াতের অফিসে হামলা-ভাঙচুর

আপডেট : ০৫:৫৮:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আধিপত্য বিস্তারের জেরে পাবনা সদর উপজেলায় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা- ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সময় একটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

সেই সঙ্গে জামায়াত সমর্থক কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ছাত্র আন্দোলনে শহিদ আবু সাইদ ও জাহিদুলের ইসলামের ফেস্টুন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা নাগাদ সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ী এলাকার তিন নাম্বার ওয়ার্ড জামায়াতের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাতজনকে অভিযুক্ত করে পাবনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন- মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, পাবনা সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবির হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি উজ্জ্বল হোসেনসহ সাতজন। অজ্ঞাতনামা অনেকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ১০টার দিকে মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার বাহিনী পিস্তল, বন্দুক, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হেমায়েতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ি এলাকায় স্থানীয় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে।

এ সময় হামলাকারীরা একটি মুদিখানা দোকান ভাঙচুর ও একটি অটোরিকশার গ্যারেজ ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পাশে থাকা একটি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর তারা স্থানীয় বাসিন্দা পাবনা পৌর জামায়াতের ইঞ্জিনিয়ার ফোরামের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ করিমসহ বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ আবু সাঈদ ও জাহিদুল ইসলামের ফেস্টুন পুড়িয়ে দেয়া হয় হামলাকারীরা।

ভুক্তভোগী জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ করিমের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি নেতা ইয়াকুব আলী, মাহমুদুল হাসান, আবির হোসেনসহ বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা দখলদারিত্ব, আধিপত্য বিস্তার, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। তারই ধারাবাহিতকতায় আমাদের অফিসে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবর্ষণ করেছে। সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।’

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি মোটেও জড়িত নই। যখন এ ঘটনা ঘটে তখন থানার ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। এর বেশি কিছু নয়।’

পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, ‘জমিজমা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি ঝামেলা চলে আসছিল কয়েকদিন ধরে। শনিবার রাতে দোকান ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত অভিযোগ পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’