নেতানিয়াহুকে ‘শয়তানের পুত্র’ আখ্যা দিলেন নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের অবিরাম হামলা চলছেই। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই বর্বর আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভ।
এমন পরিস্থিতিতে নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে তুলনা করেছেন নাৎসি নেতা অ্যাডলফ হিটলারের সাথে। তিনি নেতানিয়াহুকে আখ্যায়িত করেছেন ‘শয়তানের পুত্র’ হিসেবে। এ মন্তব্যের মাধ্যমে ইসরায়েলের নেতৃত্বের ওপর তার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।বুধবার বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে উঠে আসে এই মন্তব্য। প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিকারাগুয়া সম্প্রতি ইসরায়েলের সাথে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এর কয়েকদিন পরই ড্যানিয়েল ওর্তেগা নেতানিয়াহুর সমালোচনা করে বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী একজন শয়তানের পুত্র, যিনি মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসের নীতি পরিচালনা করছেন।
নিকারাগুয়ার রাজধানী মানাগুয়ায় পুলিশের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে ওর্তেগা বলেন, নেতানিয়াহু হিটলারের মতোই জনগণের ধ্বংসের আহ্বান জানাচ্ছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অব্যাহত গণহত্যা চালাচ্ছে, যা হিটলারের নীতির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একটি ধারা।
গত শুক্রবার নিকারাগুয়ার সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়। তারা একটি বিবৃতিতে জানায়, নিকারাগুয়া প্রজাতন্ত্র ইসরায়েলের ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করছে। এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন নিকারাগুয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজারিও মুরিলো যিনি আবার প্রেসিডেন্ট ওর্তেগার স্ত্রী।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে নিকারাগুয়ার সরকার ইসরায়েলে তাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারেরও নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে প্রথমবার সম্পর্ক ছিন্ন করার পর ২০১৭ সালে ইসরায়েল ও নিকারাগুয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
ইসরায়েলের গাজায় চালানো সাম্প্রতিক হামলাগুলোর মধ্যে বহু হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ এবং গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে এবং ৯৮ হাজার ৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এখনও হাজার হাজার লোক ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল তাদের নৃশংস আক্রমণ বন্ধ না করে অবরুদ্ধ গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই ইসরায়েলকে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযুক্ত করা হয়েছে।