London ১১:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাসরুল্লাহকে আগেই সতর্ক করেছিলেন খামেনি, বলেছিলেন ইরানে আসতে

আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ও হাসান নাসরুল্লাহফাইল ছবি: রয়টার্স

লেবাননে হিজবুল্লাহর সদ্যপ্রয়াত প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে তাঁর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার কয়েক দিন আগে নাসরুল্লাহকে লেবানন ছেড়ে যেতে বার্তাও পাঠান খামেনি। সংশ্লিষ্ট ইরানি তিনটি সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্রটি আরও বলেছে, ইরানের সরকারের জ্যেষ্ঠ পদগুলোয় ইসরায়েল-সমর্থিত ব্যক্তিরা ঢুকে পড়েছেন কি না, সেটা নিয়েও এখন গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

লেবাননে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পেজার, ওয়াকিটকিসহ হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত যোগাযোগের বিভিন্ন যন্ত্রে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর পরপরই হিজবুল্লাহপ্রধানকে একটি বার্তা পাঠান খামেনি। ওই বার্তায় হাসান নাসরুল্লাহকে দ্রুত লেবানন ছেড়ে ইরানে চলে আসতে বলেন তিনি।

ইরানের এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ইসরায়েলিরা হিজবুল্লাহর অভ্যন্তরে ঢুকে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করার জন্য নীলনকশা করছে, এমন গোয়েন্দা বার্তার কথাও ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পক্ষ থেকে হিজবুল্লাহপ্রধানকে জানানো হয়।

ওই সূত্রের মতে, ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কোরের (আইআরজিসি) কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্বাস নিলফোরোওশানকে লেবাননে হিজবুল্লাহপ্রধানের কাছে বার্তা দিয়ে পাঠিয়েছিলেন খামেনি। ইসরায়েল যখন বৈরুতে হাসান নাসরুল্লাহর বাংকারে হামলা করে, তখন সেখানে আব্বাস নিলফোরোওশান ছিলেন। তিনিও সেখানে হিজবুল্লাহপ্রধানের সঙ্গে নিহত হয়েছেন।

হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার ঘটনায় গত শনিবার থেকে খামেনি নিজেও অজ্ঞাত নিরাপদ জায়গায় আছেন। ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, তবে সেখান থেকেই তিনি ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান।

আইআরজিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হাসান নাসরুল্লাহ ও আব্বাস নিলফোরোওশানের হত্যার জবাব দিতে এ হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া গত জুলাইয়ে তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যা এবং লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযানের কথাও বলা হয়েছে। যদিও ইসরায়েল এখনো হানিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম দপ্তর এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তরে এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাড়া পাওয়া যায়নি।

গত শতকের আশির দশকে ইরানের সমর্থনে হিজবুল্লাহর যাত্রা শুরু। দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র এই গোষ্ঠী ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত।

সুইডিশ ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির হিজবুল্লাহবিষয়ক বিশ্লেষক মাগনুস রান্সট্রপ বলেন, মূলত গত কয়েক বছরের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হারাল ইরান। হিজবুল্লাহর এই ক্ষতির কারণে ইসরায়েলের সীমান্তে অভিযান চালাতে ইরানের সক্ষমতাও কমে এসেছে।*-

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:১২:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
৪৮
Translate »

নাসরুল্লাহকে আগেই সতর্ক করেছিলেন খামেনি, বলেছিলেন ইরানে আসতে

আপডেট : ০২:১২:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪

আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ও হাসান নাসরুল্লাহফাইল ছবি: রয়টার্স

লেবাননে হিজবুল্লাহর সদ্যপ্রয়াত প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে তাঁর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার কয়েক দিন আগে নাসরুল্লাহকে লেবানন ছেড়ে যেতে বার্তাও পাঠান খামেনি। সংশ্লিষ্ট ইরানি তিনটি সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্রটি আরও বলেছে, ইরানের সরকারের জ্যেষ্ঠ পদগুলোয় ইসরায়েল-সমর্থিত ব্যক্তিরা ঢুকে পড়েছেন কি না, সেটা নিয়েও এখন গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

লেবাননে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পেজার, ওয়াকিটকিসহ হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত যোগাযোগের বিভিন্ন যন্ত্রে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর পরপরই হিজবুল্লাহপ্রধানকে একটি বার্তা পাঠান খামেনি। ওই বার্তায় হাসান নাসরুল্লাহকে দ্রুত লেবানন ছেড়ে ইরানে চলে আসতে বলেন তিনি।

ইরানের এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ইসরায়েলিরা হিজবুল্লাহর অভ্যন্তরে ঢুকে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করার জন্য নীলনকশা করছে, এমন গোয়েন্দা বার্তার কথাও ইরানের সর্বোচ্চ নেতার পক্ষ থেকে হিজবুল্লাহপ্রধানকে জানানো হয়।

ওই সূত্রের মতে, ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কোরের (আইআরজিসি) কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্বাস নিলফোরোওশানকে লেবাননে হিজবুল্লাহপ্রধানের কাছে বার্তা দিয়ে পাঠিয়েছিলেন খামেনি। ইসরায়েল যখন বৈরুতে হাসান নাসরুল্লাহর বাংকারে হামলা করে, তখন সেখানে আব্বাস নিলফোরোওশান ছিলেন। তিনিও সেখানে হিজবুল্লাহপ্রধানের সঙ্গে নিহত হয়েছেন।

হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার ঘটনায় গত শনিবার থেকে খামেনি নিজেও অজ্ঞাত নিরাপদ জায়গায় আছেন। ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, তবে সেখান থেকেই তিনি ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান।

আইআরজিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হাসান নাসরুল্লাহ ও আব্বাস নিলফোরোওশানের হত্যার জবাব দিতে এ হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া গত জুলাইয়ে তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যা এবং লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযানের কথাও বলা হয়েছে। যদিও ইসরায়েল এখনো হানিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম দপ্তর এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তরে এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাড়া পাওয়া যায়নি।

গত শতকের আশির দশকে ইরানের সমর্থনে হিজবুল্লাহর যাত্রা শুরু। দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র এই গোষ্ঠী ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত।

সুইডিশ ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির হিজবুল্লাহবিষয়ক বিশ্লেষক মাগনুস রান্সট্রপ বলেন, মূলত গত কয়েক বছরের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হারাল ইরান। হিজবুল্লাহর এই ক্ষতির কারণে ইসরায়েলের সীমান্তে অভিযান চালাতে ইরানের সক্ষমতাও কমে এসেছে।*-