London ০৭:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
নেত্রকোণায় দুদকের ১৮৩তম গণশুনানি, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা বৃদ্ধির আহ্বান জালালাবাদ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির বৃক্ষরোপন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে হাত-পা ও মা’থাবিহীন অ’জ্ঞাতনামা একটি লা’শ উদ্ধার রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ জন তানোরে দুই বাড়িতে দূর্ধষ ডাকাতি কালিয়াকৈর সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ চাঁদা না পেয়ে মহিলাকে কুপিয়ে জখম করলো ইউএনও অফিসের অফিস সুপার বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু সহায়-সম্বলহীন শুক্কুরী বেগমকে ঘর উপহার দিলেন তারেক রহমান পটুয়াখালীতে মার্কিন নাগরিককে গণধর্ষণ মামলার ০৩ আসামি গ্রেফতার

দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে বাড়িতে আসলো চঞ্চল

মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে বাড়িতে আসলো চঞ্চল

 

সব স্বপ্ন শেষ করে করে ,দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে বাড়ীতে আসলেন চঞ্চল।
স্বজনদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০ দিন পর দেশে ফিরলেন শাহ আলম চঞ্চল—তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে। মালয়েশিয়ায় দুর্ঘটনায় নিহত এই প্রবাসীর স্বপ্ন ছিল ধার-দেনা শোধ করে ঘর বাঁধার। কিন্তু সব স্বপ্ন অপূর্ণ রেখেই বিদায় নিতে হলো তাঁকে।

নিহত শাহ আলম চঞ্চল (২৫) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামের জফির উদ্দীন মৃধার ছেলে। গত (৩০ এপ্রিল ২০২৫) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবস্থায় এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিনের ধাক্কায় পড়ে গিয়ে তিনি প্রাণ হারান।

২০ দিন পর, বুধবার (২১ মে ২০২৫) সকালে নিজ গ্রামে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় প্রবাসী চঞ্চলকে। শোকাচ্ছন্ন পরিবেশ। মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্বজনরা। মা-বাবা বাকরুদ্ধ, ছোট বোন সুমি খাতুন বুক চাপড়ে কাঁদছিলেন।

দুই বছর আগে চঞ্চল নতুন স্বপ্ন নিয়ে ধার-দেনা করে শ্রমিকের ভিসায় মালয়েশিয়া যান। সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে এক্সকাভেটর মেশিন চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। সবে মাত্র ধার-দেনা পরিশোধ শেষ করে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই এক্সকাভেটর মেশিনই কেড়ে নেয় তাঁর প্রাণ, ভেঙে দেয় পুরো পরিবারের স্বপ্ন।

 

নিহতের পিতা জফির উদ্দীন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “কোরবানির ঈদের পর ছুটিতে এসে বিয়ে করার কথা ছিল ছেলের। মৃত্যুর আগের রাতেও আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ায় যে কোম্পানিতে চঞ্চল কাজ করতেন, তারা মরদেহ ঢাকায় পাঠানোর খরচ বহন করেছে। তবে ঢাকা থেকে বাড়ি আনতে তাদের নিজ খরচে প্রায় ১৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

মা সাথী বেগম বলেন, “ছেলেকে বিয়ে দিয়ে ঘরে আনব, বউ রান্না করে আমাদের খাওয়াবে—এটাই ছিল স্বপ্ন। ভাবতেও পারিনি, ছেলে লাশ হয়ে ঘরে ফিরবে।”
সব কিছুই যেন আজ শেষ হয়ে গেল ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ১২:০৮:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
৫১
Translate »

দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে বাড়িতে আসলো চঞ্চল

আপডেট : ১২:০৮:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে বাড়িতে আসলো চঞ্চল

 

সব স্বপ্ন শেষ করে করে ,দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে বাড়ীতে আসলেন চঞ্চল।
স্বজনদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০ দিন পর দেশে ফিরলেন শাহ আলম চঞ্চল—তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে। মালয়েশিয়ায় দুর্ঘটনায় নিহত এই প্রবাসীর স্বপ্ন ছিল ধার-দেনা শোধ করে ঘর বাঁধার। কিন্তু সব স্বপ্ন অপূর্ণ রেখেই বিদায় নিতে হলো তাঁকে।

নিহত শাহ আলম চঞ্চল (২৫) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামের জফির উদ্দীন মৃধার ছেলে। গত (৩০ এপ্রিল ২০২৫) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবস্থায় এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিনের ধাক্কায় পড়ে গিয়ে তিনি প্রাণ হারান।

২০ দিন পর, বুধবার (২১ মে ২০২৫) সকালে নিজ গ্রামে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় প্রবাসী চঞ্চলকে। শোকাচ্ছন্ন পরিবেশ। মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্বজনরা। মা-বাবা বাকরুদ্ধ, ছোট বোন সুমি খাতুন বুক চাপড়ে কাঁদছিলেন।

দুই বছর আগে চঞ্চল নতুন স্বপ্ন নিয়ে ধার-দেনা করে শ্রমিকের ভিসায় মালয়েশিয়া যান। সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে এক্সকাভেটর মেশিন চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। সবে মাত্র ধার-দেনা পরিশোধ শেষ করে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই এক্সকাভেটর মেশিনই কেড়ে নেয় তাঁর প্রাণ, ভেঙে দেয় পুরো পরিবারের স্বপ্ন।

 

নিহতের পিতা জফির উদ্দীন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “কোরবানির ঈদের পর ছুটিতে এসে বিয়ে করার কথা ছিল ছেলের। মৃত্যুর আগের রাতেও আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ায় যে কোম্পানিতে চঞ্চল কাজ করতেন, তারা মরদেহ ঢাকায় পাঠানোর খরচ বহন করেছে। তবে ঢাকা থেকে বাড়ি আনতে তাদের নিজ খরচে প্রায় ১৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

মা সাথী বেগম বলেন, “ছেলেকে বিয়ে দিয়ে ঘরে আনব, বউ রান্না করে আমাদের খাওয়াবে—এটাই ছিল স্বপ্ন। ভাবতেও পারিনি, ছেলে লাশ হয়ে ঘরে ফিরবে।”
সব কিছুই যেন আজ শেষ হয়ে গেল ।