London ০১:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তালা ঝুলছে চট্টগ্রামের ডিমের আড়তে, সরকারি সংস্থা বলছে ‘লুকোচুরি’

সরকারি দামে ডিম কেচা-বেনা করতে না পারায় আড়তগুলো বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আজ সকালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বাজারে

চট্টগ্রামে ডিমের সবচেয়ে বড় আড়ত নগরের পাহাড়তলী বাজার। গতকাল সোমবারও এই বাজারে ছোট-বড় প্রায় ৩০টি ডিমের দোকানে সীমিত আকারে কেনাবেচা হয়েছে। তবে আজ মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, বাজারে একটি ছাড়া সব দোকানে তালা ঝুলছে। সরকারি দামে ডিম কেনাবেচা করতে না পারায় আড়তগুলো বন্ধ রেখেছেন বলে আড়তদারেরা জানান।

বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, কার্যত গত শনিবার থেকে বড় আকারের ডিমের চালান আসা বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে কিছু দোকান খুললেও প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করার পর আবার সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম নগরে ডিমের পুরো সরবরাহ নির্ভর করে পাহাড়তলী বাজারের ওপর। ছোট–বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০টি ডিমের আড়ত ও পাইকারি দোকান রয়েছে এখানে। প্রতিদিন ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ ডিম বিক্রি হয় এই বাজারে। তবে গত শনিবার থেকে এই বাজারের প্রায় প্রতিটি আড়তে কেনাবেচা বন্ধ। দু-একটি আড়ত খোলা থাকলেও বিক্রি নেই বললেই চলে। তবে সরকারি সংস্থা বলছে, রাতে দোকান খুলে বাড়তি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। যাকে লুকোচুরি বলছে তারা।

আড়তদারেরা জানান, সরকারি দামে ডিম কিনতে না পারা এবং প্রশাসনের অভিযানে জরিমানার কারণে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। দেড় মাস ধরে তাঁদের ডিম কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তবে সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে আরও কম। ফলে লোকসান গুনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এর ওপর প্রশাসনের অভিযানের কারণে আরও লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই তাঁরা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ব্রয়লার মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। বেঁধে দেওয়া দাম অনুসারে, উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের মূল্য ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে তা ১১ টাকা ৮৭ পয়সা হওয়ার কথা। তবে আড়তদারেরা বলছেন, খামারিদের কাছ থেকেই ১২ টাকা ৮০ পয়সা দরে ডিম কিনতে হচ্ছে।

ডিমের দাম কমাতে আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে তাতেও কমেনি দাম। পাহাড়তলী বাজারে ডিমের আড়তদার হুমায়ুন কবির বলেন, নির্ধারিত দামে কিনতে পারলে নির্ধারিত দামে বিক্রি করা যায়। বাড়তি দামে কেনাবেচার কারণে শুধু তাঁদের দায়ী করা হচ্ছে, অভিযান চালানো হচ্ছে। এ জন্য ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন তাঁরা।

যে কারণে দোকানে তালা

চট্টগ্রামে ডিম সরবরাহ হয় মূলত টাঙ্গাইল, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, কাপাসিয়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে। এর মধ্যে পাহাড়তলী বাজারে বড় অংশ সরবরাহ হয় কুমিল্লা ও নোয়াখালী থেকে। একে ‘লেয়ার বেল্ট’ হিসেবে বলছেন আড়তদারেরা। সম্প্রতি বন্যার কারণে এই এলাকার খামারগুলো তলিয়ে গেছে। এর পর থেকেই চট্টগ্রামের বাজারে ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে।

আড়তদারেরা জানান, খামারি ও ব্যাপারীরা ডিম সরবরাহ করছেন ১২ টাকা ৮০ পয়সা দরে। সেখানে সরকার বলছে ১১ টাকায় বিক্রি করতে। এত লোকসান দিয়ে ডিম বিক্রি সম্ভব নয়। অন্যদিকে বাড়তি দামে বিক্রি করলে জরিমানা করা হচ্ছে। সব দিকে আড়তদারেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অথচ উৎপাদক পর্যায়ে তদারকি হচ্ছে না।

আজ বাজারে প্রতিটি লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে সাড়ে ১৩ টাকায়। দুই সপ্তাহ ধরেই বাজারে এই দর রয়েছে। খামারিরা জানান, ডিম, মুরগির পুরো নিয়ন্ত্রণ করপোরেট ব্যবসায়ীদের হাতে। তবে তাঁদের জরিমানা করা হয় না।

চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর বলেন, ‘আমাদের বাড়তি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে। অথচ অভিযানে এলে কর্মকর্তারা কোনো কথা শোনেন না। বৈঠকের কথা বললেও তাঁরা রাজি হন না। তাই যত দিন সরবরাহকারীরা সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ করবে না, তত দিন আমাদের আড়তও বন্ধ থাকবে।’

তিন মাস বাড়তি থাকে দাম

চট্টগ্রামে ডিমের চাহিদা কত, তা নিয়ে সরকারি সংস্থাগুলোর নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনের বিক্রি ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ ডিম। সেটিকেই চাহিদা হিসেবে বলছেন তাঁরা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতিবছর বর্ষা ও বর্ষার পর ডিমের সরবরাহ কম থাকে। তখন দামও বাড়তি থাকে। এ বছর বন্যার কারণে সংকট প্রকট হয়েছে। তবে সরকারি সংস্থাগুলো এসব হিসাব দেখছে না। ব্যাপারী থেকে মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে ডিম আসে, সেটি মানছেন না তাঁরা।

ব্যবসায়ীদের বক্তব্যের সত্যতা মেলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যে। গত পাঁচ বছরের তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ডিমের দাম বেশি ছিল বছরের অন্য মাসের তুলনায়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিটি ডিমের দাম ছিল ১০ টাকার আশপাশে। এই তিন মাসে গড়ে দাম ছিল ১৩ টাকার আশপাশে। এ বছরের জানুয়ারি মাসে দাম ছিল ১০ টাকার আশপাশে। গত দুই মাসে দাম ১৩ টাকা ছাড়িয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করে চট্টগ্রামের এক ডিম ব্যবসায়ী বলেন, সরকারি সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ভোক্তা ও খামারিদের স্বার্থ না দেখে পোলট্রি খাদ্য ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখার অভিযোগ রয়েছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুবিধা দিতে শুধু আড়তদারদের জরিমানা করছে ভোক্তা অধিদপ্তর। আর তিন দিন আড়ত বন্ধ থাকলে দাম ১৮ টাকার বেশি হবে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘বিভিন্ন জেলায় অভিযান হয়েছে। মধ্যস্বত্বভোগী আসলে আড়তদারেরাই। তাঁরা একযোগে সব দোকান বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু রাতে আবার বিক্রিও করছেন। এটি একধরনের লুকোচুরি। আমরা তাঁদের জরিমানার পর সতর্কও করেছি।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০১:২৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪
২৪
Translate »

তালা ঝুলছে চট্টগ্রামের ডিমের আড়তে, সরকারি সংস্থা বলছে ‘লুকোচুরি’

আপডেট : ০১:২৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

সরকারি দামে ডিম কেচা-বেনা করতে না পারায় আড়তগুলো বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আজ সকালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বাজারে

চট্টগ্রামে ডিমের সবচেয়ে বড় আড়ত নগরের পাহাড়তলী বাজার। গতকাল সোমবারও এই বাজারে ছোট-বড় প্রায় ৩০টি ডিমের দোকানে সীমিত আকারে কেনাবেচা হয়েছে। তবে আজ মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, বাজারে একটি ছাড়া সব দোকানে তালা ঝুলছে। সরকারি দামে ডিম কেনাবেচা করতে না পারায় আড়তগুলো বন্ধ রেখেছেন বলে আড়তদারেরা জানান।

বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, কার্যত গত শনিবার থেকে বড় আকারের ডিমের চালান আসা বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে কিছু দোকান খুললেও প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করার পর আবার সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম নগরে ডিমের পুরো সরবরাহ নির্ভর করে পাহাড়তলী বাজারের ওপর। ছোট–বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০টি ডিমের আড়ত ও পাইকারি দোকান রয়েছে এখানে। প্রতিদিন ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ ডিম বিক্রি হয় এই বাজারে। তবে গত শনিবার থেকে এই বাজারের প্রায় প্রতিটি আড়তে কেনাবেচা বন্ধ। দু-একটি আড়ত খোলা থাকলেও বিক্রি নেই বললেই চলে। তবে সরকারি সংস্থা বলছে, রাতে দোকান খুলে বাড়তি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। যাকে লুকোচুরি বলছে তারা।

আড়তদারেরা জানান, সরকারি দামে ডিম কিনতে না পারা এবং প্রশাসনের অভিযানে জরিমানার কারণে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। দেড় মাস ধরে তাঁদের ডিম কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তবে সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে আরও কম। ফলে লোকসান গুনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এর ওপর প্রশাসনের অভিযানের কারণে আরও লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই তাঁরা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ব্রয়লার মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। বেঁধে দেওয়া দাম অনুসারে, উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের মূল্য ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে তা ১১ টাকা ৮৭ পয়সা হওয়ার কথা। তবে আড়তদারেরা বলছেন, খামারিদের কাছ থেকেই ১২ টাকা ৮০ পয়সা দরে ডিম কিনতে হচ্ছে।

ডিমের দাম কমাতে আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে তাতেও কমেনি দাম। পাহাড়তলী বাজারে ডিমের আড়তদার হুমায়ুন কবির বলেন, নির্ধারিত দামে কিনতে পারলে নির্ধারিত দামে বিক্রি করা যায়। বাড়তি দামে কেনাবেচার কারণে শুধু তাঁদের দায়ী করা হচ্ছে, অভিযান চালানো হচ্ছে। এ জন্য ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন তাঁরা।

যে কারণে দোকানে তালা

চট্টগ্রামে ডিম সরবরাহ হয় মূলত টাঙ্গাইল, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, কাপাসিয়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে। এর মধ্যে পাহাড়তলী বাজারে বড় অংশ সরবরাহ হয় কুমিল্লা ও নোয়াখালী থেকে। একে ‘লেয়ার বেল্ট’ হিসেবে বলছেন আড়তদারেরা। সম্প্রতি বন্যার কারণে এই এলাকার খামারগুলো তলিয়ে গেছে। এর পর থেকেই চট্টগ্রামের বাজারে ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে।

আড়তদারেরা জানান, খামারি ও ব্যাপারীরা ডিম সরবরাহ করছেন ১২ টাকা ৮০ পয়সা দরে। সেখানে সরকার বলছে ১১ টাকায় বিক্রি করতে। এত লোকসান দিয়ে ডিম বিক্রি সম্ভব নয়। অন্যদিকে বাড়তি দামে বিক্রি করলে জরিমানা করা হচ্ছে। সব দিকে আড়তদারেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অথচ উৎপাদক পর্যায়ে তদারকি হচ্ছে না।

আজ বাজারে প্রতিটি লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে সাড়ে ১৩ টাকায়। দুই সপ্তাহ ধরেই বাজারে এই দর রয়েছে। খামারিরা জানান, ডিম, মুরগির পুরো নিয়ন্ত্রণ করপোরেট ব্যবসায়ীদের হাতে। তবে তাঁদের জরিমানা করা হয় না।

চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর বলেন, ‘আমাদের বাড়তি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে। অথচ অভিযানে এলে কর্মকর্তারা কোনো কথা শোনেন না। বৈঠকের কথা বললেও তাঁরা রাজি হন না। তাই যত দিন সরবরাহকারীরা সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ করবে না, তত দিন আমাদের আড়তও বন্ধ থাকবে।’

তিন মাস বাড়তি থাকে দাম

চট্টগ্রামে ডিমের চাহিদা কত, তা নিয়ে সরকারি সংস্থাগুলোর নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনের বিক্রি ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ ডিম। সেটিকেই চাহিদা হিসেবে বলছেন তাঁরা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতিবছর বর্ষা ও বর্ষার পর ডিমের সরবরাহ কম থাকে। তখন দামও বাড়তি থাকে। এ বছর বন্যার কারণে সংকট প্রকট হয়েছে। তবে সরকারি সংস্থাগুলো এসব হিসাব দেখছে না। ব্যাপারী থেকে মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে ডিম আসে, সেটি মানছেন না তাঁরা।

ব্যবসায়ীদের বক্তব্যের সত্যতা মেলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যে। গত পাঁচ বছরের তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ডিমের দাম বেশি ছিল বছরের অন্য মাসের তুলনায়। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিটি ডিমের দাম ছিল ১০ টাকার আশপাশে। এই তিন মাসে গড়ে দাম ছিল ১৩ টাকার আশপাশে। এ বছরের জানুয়ারি মাসে দাম ছিল ১০ টাকার আশপাশে। গত দুই মাসে দাম ১৩ টাকা ছাড়িয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করে চট্টগ্রামের এক ডিম ব্যবসায়ী বলেন, সরকারি সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ভোক্তা ও খামারিদের স্বার্থ না দেখে পোলট্রি খাদ্য ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখার অভিযোগ রয়েছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুবিধা দিতে শুধু আড়তদারদের জরিমানা করছে ভোক্তা অধিদপ্তর। আর তিন দিন আড়ত বন্ধ থাকলে দাম ১৮ টাকার বেশি হবে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘বিভিন্ন জেলায় অভিযান হয়েছে। মধ্যস্বত্বভোগী আসলে আড়তদারেরাই। তাঁরা একযোগে সব দোকান বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু রাতে আবার বিক্রিও করছেন। এটি একধরনের লুকোচুরি। আমরা তাঁদের জরিমানার পর সতর্কও করেছি।’