জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে কীভাবে বের করে দেওয়া হয়, জানালেন ট্রাম্পের উপদেষ্টা

ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও তাঁর প্রতিনিধিরা হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যান। কীভাবে তাঁরা এমন পরিস্থিতিতে উপনীত হন, তা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎজ।
দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে গত শুক্রবার এক বৈঠকে ওই বাগ্বিতণ্ডা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ নিয়ে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করতে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল।
সেদিন বৈঠকের শুরুটা ভালোই ছিল। বিতণ্ডার সূত্রপাত হয় যখন জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলতে শুরু করেন, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মস্কোর সঙ্গে একটি চুক্তির যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেখানে নিরপেক্ষ ভূমিকায় না থেকে ট্রাম্পের উচিত কিয়েভকে আরও বেশি সমর্থন করা।
তখন ট্রাম্প অভিযোগ করেন, জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন না এবং যুদ্ধ বন্ধ করতে যেসব ছাড় দেওয়া প্রয়োজন, তা দিতে ইচ্ছুক নন।
সে সময় জে ডি ভ্যান্স সমালোচনা করে বলেন, জেলেনস্কির কূটনৈতিক জ্ঞানের অভাব আছে।
গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ব্রেইটবার্ট নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাইক ওয়ালৎজ বলেন, ‘যাঁর নেতৃত্বে চুক্তি হয়, তাঁকে জানতে হয়, কখন একটি খারাপ চুক্তি বা খারাপ আলোচনা থেকে বেরিয়ে আসতে হয়’। তিনি ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কীভাবে জেলেনস্কির দলকে ট্রাম্পের অনুভূতির বিষয়ে জানিয়েছিলেন, সেটাও বলেছেন ওয়ালৎজ।
এর আগে নাম প্রকাশ না করে হোয়াইট হাউসের এক কর্মী বলেছিলেন যে ট্রাম্প আসলে জেলেনস্কিকে ‘বের করে দিয়েছিলেন’। তবে রুবিও ও ওয়ালৎজ জোর দিয়ে বলেছেন, জেলেনস্কি ও তাঁর প্রতিনিধিরা বাগ্বিতণ্ডার পর দ্রুতই হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণ ছেড়ে যান। এমনটাই জানান ফক্স নিউজের সাংবাদিক জ্যাকি হেনরিখ।
ওয়ালৎজ আরও বলেন, ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলকে জানানো হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। এটা বলে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তার ব্যাখ্যায় ওয়ালৎজ বলেন, ‘কীভাবে আপনি এসে এমন একজনকে অসম্মান করেন, যেখানে আপনি আসলে তাঁদের কাছে অর্থ ও সহায়তা ভিক্ষা করতে এসেছেন। তাই আমরা তাঁদের স্পষ্ট করে সবকিছু বলে দিয়েছি। আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি, এ আলোচনা যেটি তাঁদের ও তাঁদের দেশের জন্য দারুণ একটি দিন হতে পারত, সেটা শেষ হয়ে গেছে এবং চলে যাওয়ার সময় হয়েছে।’
এদিকে জেলেনস্কির সমালোচনা করে রুবিও বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) নিজের আচরণ দিয়ে সবার সময় নষ্ট করেছেন। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে জেলেনস্কির মতলব আসলে কী, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবিও আরও বলেন, এমন শীর্ষ পর্যায়ের একটি বৈঠককে ‘চরম ব্যর্থ’ করে দেওয়ার জন্য জেলেনস্কির ক্ষমা চাওয়া উচিত।
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরপরই জেলেনস্কি স্বীকার করেন যে এটা ভালো হয়নি। তবে তিনি এ ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন যে মার্কিন নেতাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় আমাদের অবশ্যই খুবই স্বচ্ছ ও সৎ হতে হবে।’