London ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর বড় অভিযান, ৮ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর একটি বড় অভিযানে কমপক্ষে আট ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট মিলে ‘জেনিনে সন্ত্রাস দমনের’ জন্য একটি ‘বিস্তৃত ও গুরুত্বপূর্ণ’ অভিযান শুরু করেছে।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে কয়েকটি ড্রোন হামলার পর ইসরায়েলি সামরিক যানবাহন জেনিন ও এর শরণার্থী শিবিরে প্রবেশ করে।ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক সপ্তাহব্যাপী সশস্ত্র দলগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের পর ইসরায়েলের এই অভিযান শুরু হলো। এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদও রয়েছে, যারা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিরাপত্তা বাহিনীর একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী ‘বেসামরিক (নাগরিক) ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুলি চালিয়েছে, যার ফলে বেশ কয়েকজন বেসামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্য আহত হয়েছেন।

তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অভিযানটি পশ্চিম তীরে ‘নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে নেওয়া ‘অতিরিক্ত পদক্ষেপ’। তিনি আরো বলেছেন, ইসরায়েল পদ্ধতিগত ও দৃঢ়তার সঙ্গে ইরানি প্রতিরোধ অক্ষের বিরুদ্ধে কাজ করছে। গাজা, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও পশ্চিম তীরে যেখানে তারা রয়েছে সেখানে ইসরায়েল এখনো সক্রিয়।

এ ছাড়া ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আয়রন ওয়াল’ এবং এটি ‘যতক্ষণ প্রয়োজন চালিয়ে যাওয়া হবে।’

জেনিনের গভর্নর কামাল আবু আল-রুব বলেন, ‘যা ঘটছে তা শিবিরে আক্রমণ। এটি খুব দ্রুত হয়েছে, আকাশে অ্যাপাচি (হেলিকপ্টার) এবং সর্বত্র ইসরায়েলি সামরিক যানবাহন।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলা এবং গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি হামলা রোধের জন্য অভিযান জোরদার করার দাবি করলেও এর ফলে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে পশ্চিম তীর দখলের পর থেকে ইসরায়েল সেখানে প্রায় সাত লাখ ইহুদিকে নিয়ে ১৬০টিরও বেশি বসতি নির্মাণ করেছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এসব বসতি অবৈধ বলে বিবেচিত হলেও ইসরায়েল তা অস্বীকার করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:৩৭:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
Translate »

জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর বড় অভিযান, ৮ ফিলিস্তিনি নিহত

আপডেট : ০২:৩৭:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর একটি বড় অভিযানে কমপক্ষে আট ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী, পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট মিলে ‘জেনিনে সন্ত্রাস দমনের’ জন্য একটি ‘বিস্তৃত ও গুরুত্বপূর্ণ’ অভিযান শুরু করেছে।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে কয়েকটি ড্রোন হামলার পর ইসরায়েলি সামরিক যানবাহন জেনিন ও এর শরণার্থী শিবিরে প্রবেশ করে।ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক সপ্তাহব্যাপী সশস্ত্র দলগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের পর ইসরায়েলের এই অভিযান শুরু হলো। এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে হামাস ও ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদও রয়েছে, যারা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) নিরাপত্তা বাহিনীর একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী ‘বেসামরিক (নাগরিক) ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুলি চালিয়েছে, যার ফলে বেশ কয়েকজন বেসামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্য আহত হয়েছেন।

তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অভিযানটি পশ্চিম তীরে ‘নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে নেওয়া ‘অতিরিক্ত পদক্ষেপ’। তিনি আরো বলেছেন, ইসরায়েল পদ্ধতিগত ও দৃঢ়তার সঙ্গে ইরানি প্রতিরোধ অক্ষের বিরুদ্ধে কাজ করছে। গাজা, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও পশ্চিম তীরে যেখানে তারা রয়েছে সেখানে ইসরায়েল এখনো সক্রিয়।

এ ছাড়া ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আয়রন ওয়াল’ এবং এটি ‘যতক্ষণ প্রয়োজন চালিয়ে যাওয়া হবে।’

জেনিনের গভর্নর কামাল আবু আল-রুব বলেন, ‘যা ঘটছে তা শিবিরে আক্রমণ। এটি খুব দ্রুত হয়েছে, আকাশে অ্যাপাচি (হেলিকপ্টার) এবং সর্বত্র ইসরায়েলি সামরিক যানবাহন।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলা এবং গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি হামলা রোধের জন্য অভিযান জোরদার করার দাবি করলেও এর ফলে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে পশ্চিম তীর দখলের পর থেকে ইসরায়েল সেখানে প্রায় সাত লাখ ইহুদিকে নিয়ে ১৬০টিরও বেশি বসতি নির্মাণ করেছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এসব বসতি অবৈধ বলে বিবেচিত হলেও ইসরায়েল তা অস্বীকার করে।