London ১২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওটিটিতে আলো ছড়াচ্ছেন নূর

‘রঙিলা কিতাব’ মুক্তি পাচ্ছে ৮ নভেম্বরহইচইয়ের সৌজন্যে

‘মহানগর’, ‘কাইজার’ সিরিজের অভিনয় করে আলোচিত অভিনেতা মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকে আরেক সিরিজ ‘রঙিলা কিতাব’–এ পাওয়া যাবে। নির্মাতা অনম বিশ্বাস পরিচালিত হইচই অরিজিনাল সিরিজটি মুক্তি পাচ্ছে ৮ নভেম্বর।

‘রঙিলা কিতাব’–এ প্রদীপ নামে এক তরুণের চরিত্রে পাওয়া যাবে মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকে। চরিত্রটি একসময় রাজনীতি করত, রাজনীতি ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। তবে প্রদীপকে রাজনীতি ছাড়ে না। তাঁর জীবনে দুঃসহ যাতনা নিয়ে রাজনীতি ফিরে ফিরে আসে।

চরিত্রটি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার নূর বলছিলেন, সেটিকে (রাজনীতি) প্রদীপ কীভাবে ডিল (মোকাবিলা) করে সেটিই চরিত্রের মূল বিষয়। সিরিজকে অদ্ভুত প্রেমের গল্প হিসেবেও দেখা যাবে।

কিঙ্কর আহ্সানের ‘রঙিলা কিতাব’ উপন্যাস ছায়া অবলম্বনে ওয়েব সিরিজটি নির্মাণ করেছেন নির্মাতা অনম বিশ্বাস। চিত্রনাট্য থেকে চরিত্রটি নিয়ে ধারণা তো পেয়েছেন, পাশাপাশি আশপাশের মানুষদের থেকেও চরিত্রের রসদ খুঁজে পেয়েছেন নূর। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী পরীমনি।

‘প্রদীপের মতো প্রচুর চরিত্র চিনি। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এমন অনেক চরিত্র আমি দেখেছি। সেগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছি। সেটি চরিত্রটিকে ধারণে কাজে দিয়েছে’ বলেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান।

‘রঙিলা কিতাব’–এ প্রদীপ নামে এক তরুণের চরিত্রে পাওয়া যাবে মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকে

‘রঙিলা কিতাব’–এ প্রদীপ নামে এক তরুণের চরিত্রে পাওয়া যাবে মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকেহইচইয়ের সৌজন্যে

নূরকে সচরাচর অ্যাকশন চরিত্রে দেখা যায়নি; তবে ‘রঙিলা কিতাব’–এ অ্যাকশনটাও পরখ করে নিতে পেরেছেন তিনি। পরিচালকের সহযোগিতা তো পেয়েছেনই; সঙ্গে প্রশিক্ষক আসিফ হাসান সাগরের কাছে অ্যাকশনের কারিকুরি শিখে ক্যামেরার সামনে চর্চাও করেছেন।

এর আগে খুব বেশি সিনেমা সিরিজে অ্যাকশন চরিত্রে না পাওয়ার প্রশ্নে নূর বললেন, ‘আমি তো অ্যাকশন ভালোবাসি। করতেও পছন্দ করি। হয়তো আমাকে ট্রাই করা হয়নি। অনম ভাই ট্রাই করেছে। আমিও চেষ্টা করেছি।’

‘রঙিলা কিতাব’–এ মোস্তাফিজুর নুর ইমরান ও পরীমনি

‘রঙিলা কিতাব’–এ মোস্তাফিজুর নুর ইমরান ও পরীমনিহইচইয়ের সৌজন্যে

ওটিটির নূর

প্রায় দেড় দশকের ক্যারিয়ারে ‘গেরিলা’, ‘আলফা’–এর মতো প্রশংসিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন নূর। তবে সাধারণ দর্শেকের মধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন ওটিটিতে এসে। নির্মাতা আশফাক নিপুনের ‘মহানগর’ সিরিজে ইন্সপেক্টর মলয় চরিত্রে অভিনয় করে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন তিনি। নির্মাতা তানিম নূরের ‘কাইজার’, আতিক জামানের ‘জাহান’–এও আলো ছড়িয়েছেন নূর। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘রঙিলা কিতাব’-ও ওটিটি কাজ।

ওটিটিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মাধ্যমটা কোনো সময়ই বিষয় ছিল না। কাজটাই বিষয় ছিল। তবে দেখা যায়, টেলিভিশনের সময় কম পাওয়া যায়। বাজেটটাও কম থাকে। ফলে জিনিসটা খুব বেশি আগায় না। ওটিটির ক্ষেত্রে সময়টা বেশি থাকে, কাজের জন্য প্রস্তুতিও বেশি সময় ধরে নেওয়া যায়। বাজেটও ভালো লাগে। একটা কাজ করে অনেকগুলো নিশ্চয়তার জায়গা তৈরি করতে হয়।’

তবে ভালো গল্প, ভালো চরিত্র পেলে ওটিটির বাইরে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রসহ যেকোনো মাধ্যমেই কাজ করতে চান তিনি।

বৈচিত্র্যময় চরিত্রে দর্শকের নজর কেড়েছেন নূর

বৈচিত্র্যময় চরিত্রে দর্শকের নজর কেড়েছেন নূরফেসবুক থেকে

তবে দর্শকেরা বলেন, ‘প্রত্যাশার তুলনায় নূরের কাজের সংখ্যা হাতে গোনা। বিষয়টি তিনিও মানেন। তাঁর ভাষ্য, বেশি কাজ করলে তো আর প্রত্যাশা থাকত না।

ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করি। একটা কাজ ভালো হলে পরের কাজটা আরও ভালো হতে হবে। অন্যথায় ওই প্রত্যাশা থাকবে না। ভালো কাজেরও আপেক্ষিক ব্যাখ্যা আছে। যে ধরনের চরিত্র আগে করেছি, অনেকেও করেছে সেই চরিত্রগুলো না করার চেষ্টা করছি। নতুনভাবে নিজেকে এক্সপ্লোর করতে চাই।’

সিঁড়ি দিয়ে উঠলে চিনতে চিনতে যাওয়া যায়, সেটি হয়তো–বা লিফট দিয়ে উঠলে না–ও চেনা যেতে পারে।

মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, অভিনেতা

ধীরলয়ে পথচলা

মোস্তাফিজুর নূর ইমরান ২০০০ সালে বাগেরহাট থিয়েটারে যোগ দেন। পড়াশোনা ও অভিনয়ের টানে ঢাকায় আসেন। ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে পড়ার কারণে আলাদা করে থিয়েটার করতে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে ২০০৭ সালে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান।

বড় পর্দার চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ‘মানি হানি’, ‘একাত্তর’সহ বেশ কয়েকটি সিরিজে অভিনয় করেছেন তিনি। দেড় যুগের ক্যারিয়ারে একেকটা সিঁড়ি বেয়ে ধীরলয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নূর।

‘ধৈর্য ধরে লেগে থাকা ও কাজের প্রতি সৎ থাকার চেষ্টা করেছি। যেকোনো কাজ করতে গেলে সময়ের দরকার হয়। কাজটাকে ভালোবাসি, এই কাজের জন্য যে ধরনের বাধাবিপত্তি এসেছে, সবই কাজেরই অংশ হিসেবে দেখেছি। সিঁড়ি দিয়ে উঠলে চিনতে চিনতে যাওয়া যায়, সেটি হয়তো–বা লিফট দিয়ে উঠলে না–ও চেনা যেতে পারে।’ বললেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান।

‘গেরিলা’, ‘আলফা’, ‘গাড়িওয়ালা’সহ বেশ কয়েকটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। এই মাসেই মেজবাউর রহমান সুমনের ‘রইদ’ নামে আরেকটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েছেন নূর। এতে নাজিফা তুষিসহ অনেকে রয়েছেন।

মোস্তাফিজুর নূর ইমরান

মোস্তাফিজুর নূর ইমরানফেসবুক থেকে

সংস্কার কতটা

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অভিনয়শিল্পী সংঘে সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন সংস্কারকামী অভিনয়শিল্পী। সংস্কারকামী শিল্পীদের সঙ্গে ছিলেন নূর।

সংস্কারের পথে শিল্পীরা কতটা এগোলেন? নূর বলেন, ‘আমরা চেষ্টাটা করছি। তবে সংস্কারটা কী, সংস্কারটা কেমন—এই মানসিকতা মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়নি। এখনো সংগঠনের তালিকা দেখলে বুঝতে পারবেন, কীভাবে সংগঠনকে নষ্ট করা হয়েছে। একটি সংগঠনের যা যা করা উচিত, সেই সব জায়গার বাইরে গিয়ে সংঠনকে নিষ্ক্রিয় জায়গায় নেওয়া হয়েছে। এটিকে ঠিক করা খুব কঠিন কাজ।’

সংস্কারকামী শিল্পীদের দাবির মুখে অভিনয়শিল্পী সংঘে অন্তর্বর্তী সংস্কার কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন অভিনেতা তারিক আনাম খান। তাঁরা সংস্কারের চেষ্টা করছেন বলে জানান নূর।

নূরের ভাষ্য, ‘শিল্পীদের জন্য একটি সংগঠন হলেই তো হয়। এত সংগঠন থাকবে কেন? এই পন্থী সেই পন্থী, এই মত সেই মত; সব মতামত শিল্পীর যেটুকু করা উচিত, সেটুকু বাদ দিয়ে অনেক কিছু আছে। আমরা এখনো হাল ছাড়িনি, আশা ছাড়িনি। হয়তো সবাই বুঝবে। শিল্পীরা একে অপরের কাদা ছোড়াছুড়ি করবেন না। আমি আশা নিয়ে আছি। সংগঠন সেভাবেই হয়তো চেষ্টা করছে।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:২১:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪
৩১
Translate »

ওটিটিতে আলো ছড়াচ্ছেন নূর

আপডেট : ০৩:২১:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

‘রঙিলা কিতাব’ মুক্তি পাচ্ছে ৮ নভেম্বরহইচইয়ের সৌজন্যে

‘মহানগর’, ‘কাইজার’ সিরিজের অভিনয় করে আলোচিত অভিনেতা মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকে আরেক সিরিজ ‘রঙিলা কিতাব’–এ পাওয়া যাবে। নির্মাতা অনম বিশ্বাস পরিচালিত হইচই অরিজিনাল সিরিজটি মুক্তি পাচ্ছে ৮ নভেম্বর।

‘রঙিলা কিতাব’–এ প্রদীপ নামে এক তরুণের চরিত্রে পাওয়া যাবে মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকে। চরিত্রটি একসময় রাজনীতি করত, রাজনীতি ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। তবে প্রদীপকে রাজনীতি ছাড়ে না। তাঁর জীবনে দুঃসহ যাতনা নিয়ে রাজনীতি ফিরে ফিরে আসে।

চরিত্রটি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার নূর বলছিলেন, সেটিকে (রাজনীতি) প্রদীপ কীভাবে ডিল (মোকাবিলা) করে সেটিই চরিত্রের মূল বিষয়। সিরিজকে অদ্ভুত প্রেমের গল্প হিসেবেও দেখা যাবে।

কিঙ্কর আহ্সানের ‘রঙিলা কিতাব’ উপন্যাস ছায়া অবলম্বনে ওয়েব সিরিজটি নির্মাণ করেছেন নির্মাতা অনম বিশ্বাস। চিত্রনাট্য থেকে চরিত্রটি নিয়ে ধারণা তো পেয়েছেন, পাশাপাশি আশপাশের মানুষদের থেকেও চরিত্রের রসদ খুঁজে পেয়েছেন নূর। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী পরীমনি।

‘প্রদীপের মতো প্রচুর চরিত্র চিনি। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এমন অনেক চরিত্র আমি দেখেছি। সেগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছি। সেটি চরিত্রটিকে ধারণে কাজে দিয়েছে’ বলেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান।

‘রঙিলা কিতাব’–এ প্রদীপ নামে এক তরুণের চরিত্রে পাওয়া যাবে মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকে

‘রঙিলা কিতাব’–এ প্রদীপ নামে এক তরুণের চরিত্রে পাওয়া যাবে মোস্তাফিজুর নূর ইমরানকেহইচইয়ের সৌজন্যে

নূরকে সচরাচর অ্যাকশন চরিত্রে দেখা যায়নি; তবে ‘রঙিলা কিতাব’–এ অ্যাকশনটাও পরখ করে নিতে পেরেছেন তিনি। পরিচালকের সহযোগিতা তো পেয়েছেনই; সঙ্গে প্রশিক্ষক আসিফ হাসান সাগরের কাছে অ্যাকশনের কারিকুরি শিখে ক্যামেরার সামনে চর্চাও করেছেন।

এর আগে খুব বেশি সিনেমা সিরিজে অ্যাকশন চরিত্রে না পাওয়ার প্রশ্নে নূর বললেন, ‘আমি তো অ্যাকশন ভালোবাসি। করতেও পছন্দ করি। হয়তো আমাকে ট্রাই করা হয়নি। অনম ভাই ট্রাই করেছে। আমিও চেষ্টা করেছি।’

‘রঙিলা কিতাব’–এ মোস্তাফিজুর নুর ইমরান ও পরীমনি

‘রঙিলা কিতাব’–এ মোস্তাফিজুর নুর ইমরান ও পরীমনিহইচইয়ের সৌজন্যে

ওটিটির নূর

প্রায় দেড় দশকের ক্যারিয়ারে ‘গেরিলা’, ‘আলফা’–এর মতো প্রশংসিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন নূর। তবে সাধারণ দর্শেকের মধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন ওটিটিতে এসে। নির্মাতা আশফাক নিপুনের ‘মহানগর’ সিরিজে ইন্সপেক্টর মলয় চরিত্রে অভিনয় করে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন তিনি। নির্মাতা তানিম নূরের ‘কাইজার’, আতিক জামানের ‘জাহান’–এও আলো ছড়িয়েছেন নূর। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘রঙিলা কিতাব’-ও ওটিটি কাজ।

ওটিটিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘মাধ্যমটা কোনো সময়ই বিষয় ছিল না। কাজটাই বিষয় ছিল। তবে দেখা যায়, টেলিভিশনের সময় কম পাওয়া যায়। বাজেটটাও কম থাকে। ফলে জিনিসটা খুব বেশি আগায় না। ওটিটির ক্ষেত্রে সময়টা বেশি থাকে, কাজের জন্য প্রস্তুতিও বেশি সময় ধরে নেওয়া যায়। বাজেটও ভালো লাগে। একটা কাজ করে অনেকগুলো নিশ্চয়তার জায়গা তৈরি করতে হয়।’

তবে ভালো গল্প, ভালো চরিত্র পেলে ওটিটির বাইরে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রসহ যেকোনো মাধ্যমেই কাজ করতে চান তিনি।

বৈচিত্র্যময় চরিত্রে দর্শকের নজর কেড়েছেন নূর

বৈচিত্র্যময় চরিত্রে দর্শকের নজর কেড়েছেন নূরফেসবুক থেকে

তবে দর্শকেরা বলেন, ‘প্রত্যাশার তুলনায় নূরের কাজের সংখ্যা হাতে গোনা। বিষয়টি তিনিও মানেন। তাঁর ভাষ্য, বেশি কাজ করলে তো আর প্রত্যাশা থাকত না।

ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করি। একটা কাজ ভালো হলে পরের কাজটা আরও ভালো হতে হবে। অন্যথায় ওই প্রত্যাশা থাকবে না। ভালো কাজেরও আপেক্ষিক ব্যাখ্যা আছে। যে ধরনের চরিত্র আগে করেছি, অনেকেও করেছে সেই চরিত্রগুলো না করার চেষ্টা করছি। নতুনভাবে নিজেকে এক্সপ্লোর করতে চাই।’

সিঁড়ি দিয়ে উঠলে চিনতে চিনতে যাওয়া যায়, সেটি হয়তো–বা লিফট দিয়ে উঠলে না–ও চেনা যেতে পারে।

মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, অভিনেতা

ধীরলয়ে পথচলা

মোস্তাফিজুর নূর ইমরান ২০০০ সালে বাগেরহাট থিয়েটারে যোগ দেন। পড়াশোনা ও অভিনয়ের টানে ঢাকায় আসেন। ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে পড়ার কারণে আলাদা করে থিয়েটার করতে হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে ২০০৭ সালে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান।

বড় পর্দার চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ‘মানি হানি’, ‘একাত্তর’সহ বেশ কয়েকটি সিরিজে অভিনয় করেছেন তিনি। দেড় যুগের ক্যারিয়ারে একেকটা সিঁড়ি বেয়ে ধীরলয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নূর।

‘ধৈর্য ধরে লেগে থাকা ও কাজের প্রতি সৎ থাকার চেষ্টা করেছি। যেকোনো কাজ করতে গেলে সময়ের দরকার হয়। কাজটাকে ভালোবাসি, এই কাজের জন্য যে ধরনের বাধাবিপত্তি এসেছে, সবই কাজেরই অংশ হিসেবে দেখেছি। সিঁড়ি দিয়ে উঠলে চিনতে চিনতে যাওয়া যায়, সেটি হয়তো–বা লিফট দিয়ে উঠলে না–ও চেনা যেতে পারে।’ বললেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান।

‘গেরিলা’, ‘আলফা’, ‘গাড়িওয়ালা’সহ বেশ কয়েকটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। এই মাসেই মেজবাউর রহমান সুমনের ‘রইদ’ নামে আরেকটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েছেন নূর। এতে নাজিফা তুষিসহ অনেকে রয়েছেন।

মোস্তাফিজুর নূর ইমরান

মোস্তাফিজুর নূর ইমরানফেসবুক থেকে

সংস্কার কতটা

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অভিনয়শিল্পী সংঘে সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন সংস্কারকামী অভিনয়শিল্পী। সংস্কারকামী শিল্পীদের সঙ্গে ছিলেন নূর।

সংস্কারের পথে শিল্পীরা কতটা এগোলেন? নূর বলেন, ‘আমরা চেষ্টাটা করছি। তবে সংস্কারটা কী, সংস্কারটা কেমন—এই মানসিকতা মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়নি। এখনো সংগঠনের তালিকা দেখলে বুঝতে পারবেন, কীভাবে সংগঠনকে নষ্ট করা হয়েছে। একটি সংগঠনের যা যা করা উচিত, সেই সব জায়গার বাইরে গিয়ে সংঠনকে নিষ্ক্রিয় জায়গায় নেওয়া হয়েছে। এটিকে ঠিক করা খুব কঠিন কাজ।’

সংস্কারকামী শিল্পীদের দাবির মুখে অভিনয়শিল্পী সংঘে অন্তর্বর্তী সংস্কার কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন অভিনেতা তারিক আনাম খান। তাঁরা সংস্কারের চেষ্টা করছেন বলে জানান নূর।

নূরের ভাষ্য, ‘শিল্পীদের জন্য একটি সংগঠন হলেই তো হয়। এত সংগঠন থাকবে কেন? এই পন্থী সেই পন্থী, এই মত সেই মত; সব মতামত শিল্পীর যেটুকু করা উচিত, সেটুকু বাদ দিয়ে অনেক কিছু আছে। আমরা এখনো হাল ছাড়িনি, আশা ছাড়িনি। হয়তো সবাই বুঝবে। শিল্পীরা একে অপরের কাদা ছোড়াছুড়ি করবেন না। আমি আশা নিয়ে আছি। সংগঠন সেভাবেই হয়তো চেষ্টা করছে।’