আলফাডাঙ্গায় গ্রেফতার আতঙ্ক: ঈদ উৎসব থেকে বঞ্চিত লক্ষাধিক মানুষ

আলফাডাঙ্গায় গ্রেফতার এড়াতে শত শত নেতাকর্মী এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। নেতাকর্মীরা তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ রেখেছেন। আবার কেউ কেউ মোবাইল ফোন বাড়িতে রেখে অন্যত্র পালিয়ে রয়েছেন। একান্ত প্রয়োজনে তারা পরিবারের সঙ্গে অনলাইনের বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন। উল্লেখযোগ্য নেতাকর্মীদের আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় দলের কোন কর্মসূচিই পালন করতে পারছেন না মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা।আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের উৎসব থেকে বনঞ্চিত হচ্ছে লক্ষধিক মানুষ।
অন্যদিকে বি এন পির নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই দলের কর্মসূচির অংশ হিসাবে ইফতার মাহফিল, সভা সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল এবং সড়কে মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে রাজপথ দখলে রখেছেন। উপজেলা আঃলীগ সূত্রে জানা যায়, ১৬ জানুয়ারী বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেনে মুশা মিয়া, আলফাডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সাইফার, উপজেলা আঃলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল আলিম সুজা, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী কাওছার হোসেন টিটে সহ ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২৫০০-৩০০০ জনের নামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও নাশকতার মামলা করে বি এন পির পক্ষ থেকে আলফাডাঙ্গা থানায়। এরপর থেকে পুলিশ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে প্রতিনিয়ত তাদের বাড়িতে তল্লাশি করছে। গ্রেফতার আতঙ্কে দশ হাজারের অধিক নেতাকর্মী বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে রয়েছেন। তবে পুলিশের দাবি আওয়ামিলীগের নেতাকর্মীদের কোনো রকম হয়রানি করা হচ্ছে না। যাদের নামে মামলা রয়েছে তাদেরকেই গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দাবি, আলফাডাঙ্গায় আওয়ামীলীগের কোনো ধরনের হরতাল বা অবরোধের পক্ষে কোনো মিছিল পর্যন্ত হয়নি, এমনকি কোনো ধরনের পিকেটিং বা ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেনি। অথচ বিএনপির মিথ্যা অভিযোগে একজন ভ্যান চালককে বাদী করে, পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করতে আলফাডাঙ্গা উপজেলায় শেখ হাসিনা কে ফিরিয়ে আনার দাবিতে বোমা বিস্ফোরণ, সহ নাশকতার করা হয়েছে দেখিয়ে উপজেলার ১৭০ জন নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। বি এন পি, জামাত, মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে, তবুও পুলিশ তাদের কিছুই বলছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগের ও আওয়ামীলীগের একাধিক নেতাকর্মীরা বলেন, পুলিশ আওয়ামীলীগের কর্মীদের গ্রেফতার করছে। সে কারণে কোনো অন্যায় না করেও শুধু আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি বলেই আসামির মতো পালিয়ে বেড়াচ্ছি সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতরের উৎসবে পরিবার পরিজন ছাড়া থাকতে হবে । উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী কাওছার হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তার পরিবারের একজন মহিলা কলটি রিসিভ করে বলেন, ফোন বাড়িতে রেখে বেশ কিছুদিন ধরে তিনি বাড়িতে নেই। কোথায় আছেন তাও জানি না। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দাবি তাদেরকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে হয়রানি করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশিদ বলেন,২০২৪ সালের ১৩ই আগস্ট নাশকতা সৃষ্টি ও বিস্ফোরন এর ঘটনায় লাবলু সর্দার নামে একজন বাদী হয়ে থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে নয়, কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা হয়েছে।