London ০৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
পটুয়াখালীতে নিরাপত্তা জোরদারে ডিআইজি’র আকস্মিক থানা পরিদর্শন রাজশাহীতে পুরোহিতকে মারধর মেডিকেল ক্যাম্প–রক্তদানে ব্যতিক্রমী আয়োজন, পালিত হলো প্রেসক্লাব আলফাডাঙ্গার ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিনব্যাপী সেবামূলক কার্যক্রমে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন ভাই আজাদসহ দুই স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা কালিয়াকৈরে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকচালক নিহত রাজশাহীতে চলছে ট্রাফিক সপ্তাহ ২০২৫ কালিয়াকৈর ৫ নং ওয়ার্ড পৌর বি এন পির নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা ও মতবিনিময় বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণ: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক রায়ের প্রতিবাদে লন্ডনে প্রবাসীদের গণজমায়েত রাজশাহীতে চলছে উদ্যোক্তা মেলা গাজীপুর-১ আসন কালিয়াকৈরে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর

আমের বাগান কেটে অন্য ফসল লাগাবেন কৃষক

মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

রাজশাহীর চারঘাটে আম বাগান কেটে অন্য ফসলে ঝুকছেন কৃষকরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কেটে ফেলা হচ্ছে বড় বড় আম বাগান। কয়েক বছর ধরে এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বেশি। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমগাছ কেটে অন্য ফসল চাষ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে আম গাছ কেটে ফেলছেন। আবার বাজারে আমের মূল্যও কম। বাইরে থেকে এলাকায় আগের মতো বেপারিরা আম কিনতে আসেন না। আবার কোনো কোনো বছর লোকসানও গুণেছেন। তাই আম গাছ কেটে অন্য ফসল করছেন বলে জানান তারা।

স্থানীয় আমচাষিরা জানিয়েছেন, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় পরিচর্যা খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে আমের দাম দিন দিন কমেছে। ১৪ থেকে ১৫ বছর আগে যে আম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে, সেই আম গত কয়েক বছর ধরে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। তাই সমপরিমাণ জমিতে আম বাগানের চেয়ে অন্য ফসল চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

সরদহ ইউনিয়নের ঝিকরা গ্রামের আম চাষি শাহিন জোয়ার্দার বলেন, আগের মতো গাছ লাগিয়ে রাখলেই আর আম হচ্ছে না। ব্যাপক পরিচর্যা করতে হয়। পরিচর্যার ব্যয়ও বেড়ে গেছে। সেই অনুপাতে আমের দাম বাড়ছে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দাম আরও কমছে। তার বিপরীতে অন্য ফসলের দাম বাড়ছে। তাই আম ছাড়া এখন অন্য ফসলে লাভ বেশি। এ জন্য অনেকে পুরোনো বাগান কেটে নতুন করে বাণিজ্যিকভাবে সম্ভাবনাময় গাছ লাগাচ্ছেন। প্রতিদিন চারঘাটে কোথাও না কোথাও আমগাছ কাটার ঘটনা ঘটছে।

মুংলী গ্রামের আম চাষি আজিম উদ্দিন বলেন, আম বাগানের জমিতে এবার তিনি সবজি চাষ করবেন। জমির পরিমাণ প্রায় ১ বিঘা। সবজি চাষ করলে ২০ হাজার টাকা আয় হবে। তাই আম গাছ পুষে কোনো লাভ নেই।

ভায়ালক্ষীপুর ইউনিয়নের পুঠিমারি গ্রামের মাসুদ রানা বলেন, আমার ১০ কাঠা জমিতে আম বাগান ছিল। সেখানে একটি গাছ রেখে এখন সরিষার আবাদ করবো। তিনি আরও বলেন, এবার বাগানে ৩ হাজার টাকার বেশি আম বিক্রি করতে পারেননি। গাছ কাটার পর সবজি চাষ করে ৩ মাসে ৭ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মামুন হাসান বলেন, চারঘাট উপজেলায় বর্তমানে ৪ হাজার ৯০৩ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে ৫ হেক্টর আম গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যারা আম বাগান কেটে ফেলছে তাদেরকে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি উন্নত জাতের আম গাছ লাগানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:২৭:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
১৬
Translate »

আমের বাগান কেটে অন্য ফসল লাগাবেন কৃষক

আপডেট : ০৩:২৭:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর চারঘাটে আম বাগান কেটে অন্য ফসলে ঝুকছেন কৃষকরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কেটে ফেলা হচ্ছে বড় বড় আম বাগান। কয়েক বছর ধরে এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বেশি। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমগাছ কেটে অন্য ফসল চাষ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে আম গাছ কেটে ফেলছেন। আবার বাজারে আমের মূল্যও কম। বাইরে থেকে এলাকায় আগের মতো বেপারিরা আম কিনতে আসেন না। আবার কোনো কোনো বছর লোকসানও গুণেছেন। তাই আম গাছ কেটে অন্য ফসল করছেন বলে জানান তারা।

স্থানীয় আমচাষিরা জানিয়েছেন, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় পরিচর্যা খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে আমের দাম দিন দিন কমেছে। ১৪ থেকে ১৫ বছর আগে যে আম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে, সেই আম গত কয়েক বছর ধরে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। তাই সমপরিমাণ জমিতে আম বাগানের চেয়ে অন্য ফসল চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

সরদহ ইউনিয়নের ঝিকরা গ্রামের আম চাষি শাহিন জোয়ার্দার বলেন, আগের মতো গাছ লাগিয়ে রাখলেই আর আম হচ্ছে না। ব্যাপক পরিচর্যা করতে হয়। পরিচর্যার ব্যয়ও বেড়ে গেছে। সেই অনুপাতে আমের দাম বাড়ছে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দাম আরও কমছে। তার বিপরীতে অন্য ফসলের দাম বাড়ছে। তাই আম ছাড়া এখন অন্য ফসলে লাভ বেশি। এ জন্য অনেকে পুরোনো বাগান কেটে নতুন করে বাণিজ্যিকভাবে সম্ভাবনাময় গাছ লাগাচ্ছেন। প্রতিদিন চারঘাটে কোথাও না কোথাও আমগাছ কাটার ঘটনা ঘটছে।

মুংলী গ্রামের আম চাষি আজিম উদ্দিন বলেন, আম বাগানের জমিতে এবার তিনি সবজি চাষ করবেন। জমির পরিমাণ প্রায় ১ বিঘা। সবজি চাষ করলে ২০ হাজার টাকা আয় হবে। তাই আম গাছ পুষে কোনো লাভ নেই।

ভায়ালক্ষীপুর ইউনিয়নের পুঠিমারি গ্রামের মাসুদ রানা বলেন, আমার ১০ কাঠা জমিতে আম বাগান ছিল। সেখানে একটি গাছ রেখে এখন সরিষার আবাদ করবো। তিনি আরও বলেন, এবার বাগানে ৩ হাজার টাকার বেশি আম বিক্রি করতে পারেননি। গাছ কাটার পর সবজি চাষ করে ৩ মাসে ৭ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মামুন হাসান বলেন, চারঘাট উপজেলায় বর্তমানে ৪ হাজার ৯০৩ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে ৫ হেক্টর আম গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যারা আম বাগান কেটে ফেলছে তাদেরকে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি উন্নত জাতের আম গাছ লাগানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।