London ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যুবক নিহত, আহত ৩

মোঃ বিল্লাল সরকার, ব্রাম্মনবাড়ীয়া জেলা প্রতিনিধি 

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন। নিহতের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন এলাকার মোগড়া ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার পর মোগড়া রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে ট্রেনের ছাদে থাকা কয়েকজন যুবক উঠে দাঁড়ান। ট্রেন চলন্ত অবস্থায় থাকায় তারা সামনে থাকা ডিস লাইনের তার দেখতে না পেয়ে তারের সঙ্গে ধাক্কা খান এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছাদ থেকে ছিটকে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই এক যুবক প্রাণ হারান, আর তিনজন গুরুতর আহত হন।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ট্রেনের ছাদে যাত্রীদের যাতায়াত দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি সমস্যা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থান সংকুলানের অভাবে এবং ভাড়া বাঁচানোর জন্য অনেকেই এই ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে যাতায়াত করেন। তবে এতে প্রায়ই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

আখাউড়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। নিহতের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রেনের ছাদে যাত্রী ওঠা প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হলেও যাত্রীদের অসচেতনতা এবং আইন না মানার প্রবণতার কারণে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। রেলওয়ে প্রশাসন ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আইনি ব্যবস্থা কঠোর করা এবং যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত আসন নিশ্চিত করা জরুরি। স্থানীয় বাসিন্দারাও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ট্রেনের ছাদে যাত্রী ওঠা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

নিহতের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

 

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০২:৩৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫
১৪
Translate »

আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে যুবক নিহত, আহত ৩

আপডেট : ০২:৩৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন। নিহতের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন এলাকার মোগড়া ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার পর মোগড়া রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে ট্রেনের ছাদে থাকা কয়েকজন যুবক উঠে দাঁড়ান। ট্রেন চলন্ত অবস্থায় থাকায় তারা সামনে থাকা ডিস লাইনের তার দেখতে না পেয়ে তারের সঙ্গে ধাক্কা খান এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছাদ থেকে ছিটকে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই এক যুবক প্রাণ হারান, আর তিনজন গুরুতর আহত হন।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ট্রেনের ছাদে যাত্রীদের যাতায়াত দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি সমস্যা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থান সংকুলানের অভাবে এবং ভাড়া বাঁচানোর জন্য অনেকেই এই ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে যাতায়াত করেন। তবে এতে প্রায়ই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

আখাউড়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। নিহতের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রেনের ছাদে যাত্রী ওঠা প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হলেও যাত্রীদের অসচেতনতা এবং আইন না মানার প্রবণতার কারণে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। রেলওয়ে প্রশাসন ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আইনি ব্যবস্থা কঠোর করা এবং যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত আসন নিশ্চিত করা জরুরি। স্থানীয় বাসিন্দারাও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ট্রেনের ছাদে যাত্রী ওঠা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

নিহতের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।