London ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম:
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১০ গুণীজন মেডিকেলে ভর্তির টাকা এখনো জোগাড় হয়নি ইমার যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেশার কুকারে রান্না করলেন সাবেক সৈনিক খোলাবাজার থেকে ১০ হাজার বিনামূল্যের পাঠ্যবই জব্দ, গ্রেপ্তার ২ শেরপুরে মাধ্যমিকের ৯ হাজার সরকারি বই জব্দ! আটক ১ মেডিকেলে চান্স পেয়েও অর্থের অভাবে ডাক্তারী লেখা পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রান্তি ও পরিবার খাগড়াছড়িতে একক আধিপত্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার, গড়েছেন হাজার কোটি টাকার সম্পদ নোয়াখালীতে শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ছাই ১১ দোকান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে : ইসি মাছউদ

আওয়ামী লীগকে রাজনীতির বাইরে রাখতে করা রিটের শুনানি হতে পারে আজ

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তাদের কিছু মিত্র দলকে রাজনীতির বাইরে রাখতে করা রিটের শুনানি আজ মঙ্গলবার হতে পারে।

এ বিষয়ে হাইকোর্টে গতকাল সোমবার রিট আবেদন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম, আবুল হাসনাত (হাসনাত আবদুল্লাহ) ও হাসিবুল ইসলাম। এ ছাড়া ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণার আবেদনও জানিয়েছেন তাঁরা।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের গতকালের কার্যতালিকায় রিট দুটি ২৮৩ ও ২৮৪ নম্বর ক্রমিকে ছিল।

বিকেলে ফলাফলের ঘরে দেখা যায়, রিট দুটির বিষয়ে ‘আউট’ লেখা রয়েছে। গতকাল বিকেলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বলেছেন, রিট দুটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে রাতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে গিয়ে দেখা যায়, বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের আজ মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় রিট দুটি ২০৮ ও ২০৯ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। ফলে আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের এই বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।

রিটে আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানানো হয় রিটে। নির্বিচার মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে দলগুলোর বিরুদ্ধে।

আরেকটি রিটে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত এসব নির্বাচনের গেজেট কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে।

আ.লীগ ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে আরজি

আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য যে ১০টি দলকে রাজনীতির বাইরে রাখার জন্য রিট করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী দল, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট (বড়ুয়া) ও সোশ্যালিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ।

রিটের প্রার্থনায় দেখা গেছে, নির্বিচার মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের পাশাপাশি ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে দলগুলোকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে রিটে। রুলে বিচারাধীন অবস্থায় আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

দুটি রিট করার কথা জানিয়ে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল সন্ধ্যায় বলা হয়েছে, এ মুহূর্তে আর কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরকার শুধু ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে। আর কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকার এ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

উল্লেখ্য, ছাত্রনেতাদের দাবির মুখে ২৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকার এক নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তাদের নিষিদ্ধের আদেশে স্বাধীনতার পর, বিশেষ করে গত ১৫ বছরে হত্যাসহ নানা অপরাধের কথা উল্লেখ করা হয়।

এর আগে ২২ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ছাত্র–জনতার গণজমায়েত কর্মসূচিতে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে। এর মধ্যে একটি ছিল ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা। আরেকটি দাবি হলো ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করা এবং ওই তিন নির্বাচনে যাঁরা সংসদ সদস্য হয়েছিলেন, তাঁদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়া ঠেকাতে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information
আপডেট : ০৩:০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
২৬
Translate »

আওয়ামী লীগকে রাজনীতির বাইরে রাখতে করা রিটের শুনানি হতে পারে আজ

আপডেট : ০৩:০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তাদের কিছু মিত্র দলকে রাজনীতির বাইরে রাখতে করা রিটের শুনানি আজ মঙ্গলবার হতে পারে।

এ বিষয়ে হাইকোর্টে গতকাল সোমবার রিট আবেদন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম, আবুল হাসনাত (হাসনাত আবদুল্লাহ) ও হাসিবুল ইসলাম। এ ছাড়া ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণার আবেদনও জানিয়েছেন তাঁরা।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের গতকালের কার্যতালিকায় রিট দুটি ২৮৩ ও ২৮৪ নম্বর ক্রমিকে ছিল।

বিকেলে ফলাফলের ঘরে দেখা যায়, রিট দুটির বিষয়ে ‘আউট’ লেখা রয়েছে। গতকাল বিকেলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বলেছেন, রিট দুটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে রাতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে গিয়ে দেখা যায়, বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের আজ মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় রিট দুটি ২০৮ ও ২০৯ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। ফলে আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের এই বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।

রিটে আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানানো হয় রিটে। নির্বিচার মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের অভিযোগ আনা হয়েছে দলগুলোর বিরুদ্ধে।

আরেকটি রিটে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত এসব নির্বাচনের গেজেট কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে।

আ.লীগ ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে আরজি

আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য যে ১০টি দলকে রাজনীতির বাইরে রাখার জন্য রিট করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী দল, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট (বড়ুয়া) ও সোশ্যালিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ।

রিটের প্রার্থনায় দেখা গেছে, নির্বিচার মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। ১১টি দলের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের পাশাপাশি ভবিষ্যতে সব ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে দলগুলোকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে রিটে। রুলে বিচারাধীন অবস্থায় আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

দুটি রিট করার কথা জানিয়ে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল সন্ধ্যায় বলা হয়েছে, এ মুহূর্তে আর কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরকার শুধু ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে। আর কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকার এ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

উল্লেখ্য, ছাত্রনেতাদের দাবির মুখে ২৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকার এক নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তাদের নিষিদ্ধের আদেশে স্বাধীনতার পর, বিশেষ করে গত ১৫ বছরে হত্যাসহ নানা অপরাধের কথা উল্লেখ করা হয়।

এর আগে ২২ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ছাত্র–জনতার গণজমায়েত কর্মসূচিতে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে। এর মধ্যে একটি ছিল ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা। আরেকটি দাবি হলো ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করা এবং ওই তিন নির্বাচনে যাঁরা সংসদ সদস্য হয়েছিলেন, তাঁদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়া ঠেকাতে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।